• ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাচনে থাকছে না বিএনপি ও বাম দলগুলো

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাচনে থাকছে না বিএনপি ও বাম দলগুলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপিসহ বেশ কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দল৷ আগামী ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য এই উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি ও বাম দলগুলো।

অতীতের ভোটগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতা ও নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা না রাখতে পেরেই ভোট বর্জনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি,সিপিবি,বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল৷বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি) এর স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সম্প্রতি নির্বাচনগুলোতে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে,এই নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ,অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত করবার যোগ্য নয়।

বর্তমান অনির্বাচিত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই এই নির্বাচন কমিশনের কাজ।বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমান সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন,আমরা এই উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না।

অংশ নেব কিভাবে? দিনের ভোট রাতে হয়ে যায়, ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয় না। এই নির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার নিশ্চয়তা কি দিতে পারবেন?

এই কারণেই আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি না।এদিকে,নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে নেতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাম দলগুলোর নেতারাও ৷

সিপিবি,বাসদসহ সরকারের সাথে না থাকা রাজনৈতিক দলগুলো,তারাও বলছেন বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থাহীনতার কথা।জানতে চাইলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জলি পাল বুধবার মুঠোফোনে বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে এই উপনির্বাচনে আমরা বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কোন প্রার্থী দেবো না। পূর্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। কারচুপি হয়।

নির্বাচনের কোন পরিবেশ থাকে না। আমরা এই নির্বাচনে আমরা কাউকে সমর্থনও দিচ্ছি না। আমাদের কোন নেতাকর্মী যদি ভোট দিতে যায় দিতে পারে,কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এই নির্বাচনটি বর্জন করেছে।বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) মৌলভীবাজার জেলা শাখার সদস্য ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবুল হাসান বলেন, আসলে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে প্রার্থী দেওয়ার। এই মুহূর্তে প্রার্থী দেওয়ার বাস্তবতা আমাদের নেই।

আমাদের সামর্থ্য থাকলেও আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিতাম না। কারণ,এখন যে নির্বাচন কমিশনার ও তাদের যে প্রহসনের নির্বাচন, গ্রহণযোগ্যহীন নির্বাচন সেটায় আমরা অংশ নেবো না।আরেক বাম দল ও মহাজোট সরকারের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন,আমরা নির্বাচনে প্রার্থী দেবো কি না সেটা এখনো নিশ্চিত নই।

আমাদের আলোচনা চলছে। আর যেহেতু আমরা মহাজোটের শরিক দল সেহেতু তাদের সাথে সমঝোতা করে দিতে হবে, সেক্ষেত্রে এখনো আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের সাথে কোন আলোচনা হয়নি।বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (ইনু) শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি হাজী এলেমান কবির বলেন, আমাদের নেতাকর্মী ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। তবে আমরা ভোট দেবো।তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতারা।

জাতীয় পার্টির মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে বলেন,আমরা এই উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ দল আমাকে বা অন্য যে কাউকেই মনোনয়ন দিক আমরা নিশ্চিতভাবেই এই নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছি।এদিকে ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাকের পার্টিও। দলটির শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম জানান, গত উপজেলা নির্বাচনের ভোটটি সুষ্ঠু হয়েছে।

আমরা গতবার বেশ ভালো সংখ্যক ভোট পেয়েছি৷

আমরা আশা করছি এবারও ভোট ভালো এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তাই আমরা এই উপনির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।মৌলভীবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, আমি দুই বছর যাবত এখানে বিভিন্ন নির্বাচন পরিচালনা করেছি।

সবগুলোই সুষ্ঠু হয়েছে। এই উপ নির্বাচনে আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবো। এখানে কোন অনিয়ম হবে না।এদিকে উপনির্বাচনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন ১০ জন প্রার্থী।

তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ, দপ্তর সম্পাদক, সদস্যসহ বিভিন্ন সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারাও আছেন৷এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৬১৬ জন।

এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৫২৩ জন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতিক বরাদ্দ হবে ২০ সেপ্টেম্বর এবং ভোটগ্রহণ হবে ৭ অক্টোবর।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •