• ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

শুকরিয়া জানালেন,কিন্তু ঘটনা খোলাসা করলেন না নাসির!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪
শুকরিয়া জানালেন,কিন্তু ঘটনা খোলাসা করলেন না নাসির!

ওয়েস খসরুঃঃশুকরিয়া জানালেন।কিন্তু ঘটনা খোলাসা করলেন না নাসির উদ্দিন খান। তিনি সিলেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন ভারতের কলকাতায়।

গত ৮ই ডিসেম্বর কলকাতা থেকে তিনিসহ চারজন মেঘালয়ের শিলং পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ১০ই ডিসেম্বর কারাগারে নেয়ার আগেই তারা মেঘালয়ের জোয়াই আদালত থেকে মুক্তি পান। এ ঘটনা নিয়ে সিলেটসহ গোটা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। সিলেটে খবর ছড়িয়েছিল; ধর্ষণের অভিযোগে তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু পরে জানা গেল অন্য ঘটনা। সিলেট সীমান্তের কাছাকাছি ডাউকি এলাকায় এক ট্রাকচালককে মারধরের ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

কিন্তু ডাউকি থানায় যে এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে সেই এজাহারে তাদের নাম ছিল না। তবে কেন তারা গ্রেপ্তার- এ প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি। নাসির খানের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এমন একজন নেতার সঙ্গে কথা বলেও কারণ জানা যায়নি। দু’দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নাসির খান এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সেখানে তিনি ঘটনা কী ঘটেছিল সেটি স্পষ্ট করে উল্লেখ করেননি। ফলে ধোঁয়াশা থেকেই গেল। প্রশ্ন রয়েছে; সন্দেহভাজন হিসেবে কলকাতায় থাকা আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ভিড়ে কেবল তাদেরই কেন গ্রেপ্তার করা হলো। গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে মুক্তি পাওয়া এক নেতা মানবজমিনকে জানিয়েছেন; এজাহারে তাদের নাম ছিল না।

এ কারণে জোয়াই আদালতে তোলার পরপরই আদালত তাদের মুক্তি দেয়। আর এ মামলায় লড়তে হবে না তাদের। বলা যায় একেবারেই মুক্ত। কিন্তু কেন গ্রেপ্তার- প্রশ্নের জবাবে ওই নেতা বলেন; ঘটনা আমাদের মধ্য থেকে কেউ ঘটাতে পারে। এখনো পরিষ্কার না। মূল ঘটনা খোঁজা হচ্ছে।

এদিকে- আত্মগোপনে থাকা সিলেট আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- ঘটনার পর কলকাতায় থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল নিজেই তাদের মুক্ত করার ব্যাপারে দৌড়ঝাঁপ করেন। এ নিয়ে তিনি ভারতের রাজনৈতিক মহলেও যোগাযোগ করেন। এমনকি শিলং পর্যন্ত তিনি নিজেও আসেন। ৫ই আগস্টের পূর্বে আওয়ামী লীগ নেতা নাদেলের সঙ্গে নাসিরের দূরত্ব ছিল বেশি। তাদের মধ্যে গ্রুপিং রাজনীতিও বিদ্যমান ছিল।

কিন্তু পলাতক হওয়ার পর সেই গ্যাপ মিটে গেছে। এখন তাদের মধ্যে ছাত্র জমানার মতো বন্ধুত্ব ফিরে এসেছে। ওই নেতা জানিয়েছেন- মামলা বাণিজ্য করতে তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কারণ; বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মামলা বাণিজ্য চলছে। যেহেতু ডাউকি সিলেট সীমান্তের কাছের এলাকা। ওখানকার ব্যবসায়ীরা সিলেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। মামলা দিয়ে বাণিজ্য করতে এ বিষয়টি করা হতে পারে বলে ধারণা করেন তিনি। এদিকে- দু’দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া পোস্টে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ঘটনার জন্য সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন। স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন; ‘সকল প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা মহান আল্লাহর নামে। আলহামদুলিল্লাহ।

মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। ভারতে অভিবাসন আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য। ব্যর্থ হয়েছে সকল দুর্মুখ এর ষড়যন্ত্র।’ তিনি বলেন- ‘আমি ও আমরা মিথ্যা মামলা এবং রাজনৈতিক হয়রানির কারণে আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে আসতে বাধ্য হই। এরপর থেকে এখানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ‘পুলিশ পাস’ নিয়ে বসবাস করেছি।

সম্প্রতি মেঘালয়ে প্রচণ্ড শীতের কারণে শারীরিক অসুস্থতা বোধ করলে আমরা নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় চলে যাই। আমার ও আমাদের ভুল যেটা হয়েছে সেটা হলো সম্পূর্ণ অবহেলাজনিত, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত না করেই মেঘালয় থেকে পশ্চিম বঙ্গে চলে যাওয়া। এরই সুযোগ নিয়ে একটি দুষ্টচক্র ষড়যন্ত্র করে ডাউকি থানার একটি ট্রাক ভাঙচুর মামলায় আমাদের জড়িয়ে হয়রানি করার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। এর ফলে ইমিগ্রেশন আইনে স্থানীয় পুলিশ আমাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিগত ৮ই ডিসেম্বর ভোরবেলা কলকাতা থেকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে বাই রোডে দীর্ঘ ৩০ ঘণ্টার জার্নির পর বিগত ১০ই ডিসেম্বর আমাদের বৈধ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম জৈন্তিয়া হিলস জেলার এমলারিম বিচারিক আদালত আমাকে এবং আমার সঙ্গীয় সকলকে মুক্তি দেন।’ তিনি উল্লেখ করেন- ‘আমরা পরবর্তীতে দেখলাম যে আমাদের দেশের কতিপয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এই ঘটনাকে মিথ্যা, মনগড়া, বানোয়াট ও কাল্পনিক কাহিনী দিয়ে ন্যক্কারজনকভাবে উপস্থাপন করেছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এটা তথ্য সন্ত্রাস বা দায়িত্বহীন সাংবাদিকতা তথা হলুদ সাংবাদিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে আমি মনে করি। মূলত সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার।সূত্রঃদৈনিক মানবজমিন!

আমরা অবাক বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম দেশের কথিত উপদেষ্টা টকশোতে এবং একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করেই প্রকাশ্য জনসভায় মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের সমালোচনা করলেন। এসব অপপ্রচারের সূত্র বা প্ররোচনা কোথা থেকে হয়েছে, তাতেই প্রমাণিত হয়েছে। এমন তথ্য সন্ত্রাস ও মিথ্যা অপপ্রচার কেবল নিন্দনীয় নয়, ন্যক্কারজনকও বটে।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন