• ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জাফলংয়ে পাথর খেকোদের বন্যা পরবর্তী মহা উৎসব!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত জুন ১০, ২০২৪
জাফলংয়ে পাথর খেকোদের বন্যা পরবর্তী মহা উৎসব!

সিলেটের জাফলং ইসিএ(ECA) এলাকা থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু মিশ্রিত পাথর। সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার সুযোগে পাথরখেকো সিন্ডিকট আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।

বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি যেনো তাদের জন্য এক মহা ঈদ উৎসবের আমেজ তৈরি করছে।

ইসিএ সম্পর্কিত সরকারি গেজেট ও মহামান্য হাইকোর্টের ৯১৭৭/২০১৯ নং রিট পিটশন প্রদত্ত আদেশ লংঘন করে অব্যাহত রয়েছে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর-বালু উত্তোলন। ফলে প্রাকৃতিক শোভা হারাচ্ছে দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, বদলে যাচ্ছে দেশের সীমান্ত রেখা ও মানচিত্র। ধংস হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ।

সূত্রমতে সরকারি গেজেট ও মহামান্য হাইকোর্টের উল্লেখিত রিট আদেশ অনুযায়ী জাফলং পাথর কোয়ারী ও ডাউকি নদী সংলগ্ন ১৪.৯৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ইসিএ বা প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা।

এই এলাকাস্থ নদীর উভয় পারের ৫০০গজ এলাকা যেকে যান্ত্রিক (বোমামেশিন) অযান্ত্রিকসব পদ্ধতিতে বালু-পাথর উত্তালন নিষিদ্ধ।

এমনকি নির্ধারিত এলাকায় স্টোনক্রাশার মেশিন পর্যন্ত বসানো নিষেধ। এই নিষেধাজ্ঞা লংঘন কারীদের বিরুদ্ধ ট্রাক্সফোর্স অভিযান পরিচালনারও নির্দেশ রয়েছে সরকারের উপর মহলের।

কিন্তু এলাকার চিহ্নিত পাথরখেকো সিন্ডিকেট (যাদের নাম পরবর্তী প্রতিবেদনে আসছে) ও স্থানীয় প্রশাসনসহ কেউই মানছে না সরকারি ইসিএ গেজেট ও উচ্চ আদালতে নির্দেশ।

ফলে ধংসের দ্বারপ্রান্ত প্রকৃতির ষোড়শীকন্যা জাফলং। ফলে বিমুখ হয়ে পড়ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। ঘটছে নানা অঘটন, এমনকি পাথরগর্তে পড়ে পর্যটকদের প্রায়শই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে জাফলংয়ে।

স্থানীয় প্রশাসন বারবার বলছে ইসিএ এলাকায় পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ট্রাক্সফোর্স অভিযান ও আইনত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এই মর্মে উর্ধতন মহলে একাধিক প্রতিবেদন দেওয়া হলেও কার্যত ইসিএ এলাকা রক্ষায় কোনরূপই ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না।

মূলত প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা রাষ্টরীয় চেয়ারে বসে সদা টু-পাইসের ধান্ধায় ব্যস্ততর দিন পার করছেন বলে অভিযোগ সাধারণ জনগনের।

ফলে চিহ্নত পাথরখেকো সিন্ডিকেট প্রত্যহ রাতদিন গাড়ি, ট্রলি, ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও বলগেট বোঝাই করে বেআইনীভাবে পাচার করছে জাফলং ইসিএ এলাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ বালু-পাথর।

অবৈধ পন্থায় কামাই করছে শত শত ও হাজারো কোটি টাকা। পাশাপাশি অবাঁধে চলছে নামধারী সাংবাদিক ও লাইনম্যানদের চাঁদাবাজি-বখরাবাজি।

কোনো পাথরখেকো সাংবাদিক সাইনবোর্ড ব্যবহার করে পাথর লুটপাটের সাথে জড়িত। টুপাইসের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই জাফলংয়ে লুটপাটের এই মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড গণমাধ্যমকে ইসিএ এলাকায় পাথর বালু উত্তোন বন্ধ ও ট্রাক্সফোর্স অভিযান পরিচালনার কথা বরাবরের মত জানান।

কিন্তু সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে ভিন্নচিত্র। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান শুধু কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ বলে অভিযোগ স্থানীয় জনগনের।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন