• ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই ৩ শিক্ষার্থীকে নি’র্যা’তন, মু’ক্তি’পণ আদায়

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২০, ২০২৪
উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির কাছেই ৩ শিক্ষার্থীকে নি’র্যা’তন, মু’ক্তি’পণ আদায়

তিন শিক্ষার্থীকে ছিনতাইকারী সাজিয়ে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির কাছে বেঁধে রেখে মুক্তিপণ আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর এ ঘটনা ঘটে। যদিও পুলিশ বলছে বিষয়টি তাদের জানা নেই।

উমরশাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা তাদেরকে বেঁধে বেধড়ক মারপিট করে জোরপূর্বক ছিনতাইয়ের স্বীকারোক্তি আদায় করে মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে নেয়। এরপর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করে।

নির্যাতনের শিকার তিন শিক্ষার্থী এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা পাস করে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশে নগরীর উপশহর মেইনরোডস্থ প্যারিক্স কোচিং সেন্টারে আইএলটিএস করছেন। তারা হলেন- জকিগঞ্জের হিফজুর রহমান হুজাইফা, মৌলভীবাজারের মুমিন আহমদ ও আতিকুল ইসলাম।

সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কোচিং শেষ করে তিনজনই উপশহর মেইনরোডে গল্প করছিলেন। হঠাৎ মুখোশ পরা (মাংকি ক্যাপ) কয়েকজন যুবক এসে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক তিন শিক্ষার্থীকে দুটি মোটরসাইকেলে তুলে চোখ বেঁধে উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনের মাঠে নিয়ে বেধড়ক মারপিট শুরু করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা ওই তিন শিক্ষার্থীকে বেঁধে ছিনতাইকারী সাজিয়ে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে দুর্বৃত্তরা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন থেকে তাদের পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে। এক পর্যায়ে হুজাইফার পরিবার তার বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠান। দুর্বৃত্তরা হুজাইফার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের বিকাশ একাউন্ট থেকে ০১৭৯-১৩৬৭৩২৯ নাম্বারে টাকা ট্রান্সফার করে নিয়ে যায়।

অপরদিকে মুমিন ও আতিকুলের মোবাইল ফোনের বিকাশ থেকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করে দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিলো নাম্বারবিহীন ও পুরাতন।

নির্যাতনের শিকার হুজাইফার মামা প্রভাষক গউছ উদ্দিন বলেন, ‘ভাগ্নেসহ তিনজন এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে উপশহর মেইনরোডস্থ প্যারিক্স কোচিং সেন্টারে আইএলটিএস করছেন। ঘটনার দিন কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই কয়েকজন যুবক তাদেরকে চড়-থাপ্পড় মেরে মোটরসাইকেলে করে উমরশাহ স্কুলের পেছনের মাঠে নিয়ে বেধড়ক মারপিঠ করার এক পর্যায়ে ছিনতাইকারী সাজিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে ছিনতাইয়ের স্বীকারোক্তি আদায় করে। এরপর বিকাশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়। আমরা থানায় অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ ব্যাপারে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিল্টন রায় চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপশহর পুলিশ ফাঁড়ি শাহপরাণ থানার অধীন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ চৌধুরীও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনিও জানিয়েছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন