• ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

১৯শ`‌কো‌টি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতি : ছাত‌কে বিদ্যুৎ সংস্কা‌রে নামে ঘুষ বাণিজ্যের অ‌ভি‌যোগ

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত আগস্ট ২১, ২০২১
১৯শ`‌কো‌টি টাকার প্রকল্পে দুর্নীতি : ছাত‌কে বিদ্যুৎ সংস্কা‌রে নামে ঘুষ বাণিজ্যের অ‌ভি‌যোগ

ছাতক প্রতি‌নি‌ধি :: সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক দোয়ারাবাজার, শা‌ন্তিগঞ্জ ও সি‌লে‌টের বিশ্বনাথ উপ‌জেলার আং‌শিক এলাকায় প্রায় তিনহাজার ৬শ`খু‌টি (খাম্বা) কাজ শুরু ক‌রেন সি‌লে‌টের পিডিবি উন্নয়ন প্রকল্প প্রজেষ্ট অ‌ফিস।

পুরাতন জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কার করার না‌মে সি‌লে‌টের উন্নয়ন প্রকল্প প্রজেষ্ট অ‌ফি‌সে কর্মকতা কর্মচা‌রি‌দের বিরু‌দ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও পুরাতন বিদুৎ লাইন নতুন ক‌রে সংস্কা‌রে না‌মে গ্রাহক‌দের কাছ থে‌কে লাখ লাখ টাকা হা‌তি‌য়ে নেয়ার অ‌ভি‌যোগেরএ ঘটনায় ছাতক শা‌ন্তিগঞ্জসহ সি‌লেট বিভা‌গজু‌ড়েই তোলপাড় সৃ‌ষ্টি হয়ে‌ছে।

জানা যায়, এ প্রকল্প অ‌ফি‌সের মাধ‌্যমে জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন আমূল সংস্কারে একহাজার ৯ শ`কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া সরকার।

এ প্রকল্পে বিনামূল্যে পুরোনো জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কারের নতুন খুঁটি, সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার স্থাপনের কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের এসব উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার ও পিডিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তারা যোগসাজেশ করে মেতে উঠেছেন ঘুষ-বাণিজ্যে।

নতুন লাইন, খুঁটি, ট্রান্সফরমার বসিয়ে দেয়া ও এমনকি পুরাতন লাইন সংস্কারের নাম করে ঠিকাদার ও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকার ঘুষ।

ছাতক, দোয়ারাবাজার ও শা‌ন্তিগঞ্জ ও বিশ্বনা‌থ আং‌শিক এলাকায় জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কার না করে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে অভিযোগ উঠেছে,মোটা অংকের অর্থের বিনিয়মে উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্তপ্রকল্প অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা।

ছাতক, দোয়ারাবাজার ও শা‌ন্তিগঞ্জ উপ‌জেলায় বি‌ভিন্ন গ্রাম থে‌কে “সি‌লেট এক প্রতারক” ‌পি‌ডি‌বি প্রকল্প অ‌ফি‌সে নাম ভা‌ঙ্গি‌য়ে”ছাত‌কে জামাই” না‌মে প‌রি‌চিত।

বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও খুঁটি (খাম্বা) স্থাপন, ঘুষ নিয়ে পুরোনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কারের না‌মে প্রকল্প অ‌ফি‌সে প্রকৌশলীর নাম ভা‌ঙ্গি‌য়ে সি‌লে‌টের বিহাম ও ঠিকাদার আ‌জিজসহ গ্রাহক‌দের স‌ঙ্গে নতুন বিদুৎ দেয়ার প্রলোভন দে‌খি‌য়ে এসব প্রতারনা চা‌লি‌য়ে ক‌য়েক‌টি গ্রা‌মে গ্রাহক‌দের কাছ থে‌কে প্রায় অধকো‌টি হা‌তি‌য়ে নি‌চ্ছেন ব‌লে গ্রাহকরা অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে।

ছাত‌কে ‌চেচার গ্রা‌মে জামাই সি‌লে‌টে টু‌কের বাজার এলাকার জ‌নৈক বিহাম ও ঠিকাদার আব্দুল আ‌জিজসহ এ চ‌ত্রেুর বিরু‌দ্ধে অ‌ভি‌যোগ ক‌রেন সাধারন গ্রাহকরা।

গ্রামগু‌লো হ‌চ্ছে,ব‌ন্দের বা‌ড়ি,মৌলা,শার‌পিন টিলা,নোয়ারাই ফে‌রিঘাট,কু‌রিয়াবইশামারা,বড়গল্লা, রাজারগাও,নোয়াপাড়া,গি‌রিশনগর,মা‌নিকপুর,বুগলা, জাউয়াবাজার,কৈতক,চেচান,রাজনপুর,প‌রেশপুর, বাউর,আ‌কিজাল,খিদাকাপন,গন্ধভপুর,গ‌নিপুর, খারারাই,বোকার ভাঙ্গা,মুলতানপুর,পিঠাখই, দেওকাপন,চুরখাইসহ প্রায় ৩৫ টি গ্রাম থে‌কে প্রকল্প অ‌ফি‌সে এক‌টি সি‌ন্ডি‌কেট চত্রু`র মাধ‌্যমে ৫০ লাখ টাকা হা‌তি‌য়ে নি‌চ্ছেন ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে তা‌দের বিরু‌দ্ধে।

এছাড়া নতুন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপন, নিম্নমানের তার ও যন্ত্রাংশ ব্যবহার, পুরোনো ব্যবহৃত ব্রেকার ও ট্রান্সফরমার স্থাপন করে প্রকল্পের টাকা লুটপাট ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এসব গ্রাম গু‌লো‌তে প্রকল্পে বিনামূল্যে পুরোনো জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কারের নতুন খুঁটি, সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার স্থাপনের কথা। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের এসব উন্নয়ন প্রকল্পের নামে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার ও পিডিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তারা যোগসাজেশ করে মেতে উঠেছেন ঘুষ-বাণিজ্যে।

নতুন লাইন,খুঁটি,ট্রান্সফরমার বসিয়ে দেয়া ও এমনকি পুরাতন লাইন সংস্কারের নাম করে ঠিকাদার ও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকার ঘুষ।

অনেক এলাকায় জরাজীর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংস্কার না করে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে বাণিজ্যিক বড় প্রতিষ্ঠানে আলাদা ট্রান্সফরমারসহ নতুন সঞ্চালন লাইন স্থাপন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে।‌

এসব গ্রা‌মে প্রকল্পের বরাদ্দ কত টাকা, কর্মপরিধি, ড্রয়িং এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে এ নিয়ে পি‌ডি‌বি ও প্রকল্প অ‌ফি‌সে সংশ্লিষ্টরা লুকোচুরি শুরু করেছে। ফলে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।

জাইকার (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) অর্থায়নে ‘সেন্ট্রাল জোন পাওয়ার ড্রিস্ট্রিবিউশন প্রজেক্ট’ নামে পাঁচ বছর মেয়াদী বিশেষ এই প্রকল্প ঠিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে পিডিবি। এ প্রকল্প অ‌ফি‌সের অধীনে ২য় দফার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।

এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছাতক,দোয়ারাবাজার,শা‌ন্তিগঞ্জ বিশ্বনাথ উপজেলার আং‌শিক এলাকায় কাজ শুরু পি‌ডি‌বি প্রকল্প অ‌ফিস।এ প্রকল্পে পুরাতন বৈদ্যুতিক খুঁটি, তার ও ট্রান্সফরমার পরিবর্তন করে নতুন পাকা খুঁটি, তার ও ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। পিডিবির গ্রাহকদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ সকল সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের কর্মকতাদের দোহাই দিয়ে ঠিকাদার ও কাজ তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক জায়গায় পুরোনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও খুঁটি পরিবর্তনে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো লাখ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করছেন।

তাছাড়াও উৎকোচের বিনিময়ে নতুন জায়গায় খুঁটি দিয়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও ট্রান্সফরমার তিনহাজার ৬ শতাধিক নতুন খুঁটি স্থাপন করার কথা থাকলেও ৫শ` খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে উত্তর খুরমা ইউ‌পির আলমপুর,মান‌জিহারা গ্রাম গু‌লো‌তে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনগুলো অনেক জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ। এখানে নেই কোন খুঁটি, বা‌শঁ ও গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বিদ্যুতের তার।

পুরোনো এবং গাছের সাথে ঝুলানো থাকায় প্রায়ই তার ছিড়ে যাওয়াসহ ঘটে ছোট বড় অনেক প্রানহা‌নি দুর্ঘটনা ঘটনা ঘ‌টে‌ছে । নতুন সঞ্চালন লাইন ও খুঁটি না বসানোয় এই এলাকার ৩ শতাধিক গ্রাহক ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছেন। নতুন সঞ্চালন লাইন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এসব এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করেন চাদা তুলে টাকা দিতে না পারায় তাদের এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ লাইন ও খুঁটি বসানো হয়নি।

এছাড়া চেচান,রাজনপুর,প‌রেশপুর,বাউর,আ‌কিজাল,খিদাকাপন,গন্ধভপুর,গ‌নিপুর,খারারাই,বোকার ভাঙ্গা,পিঠাখই, দেওকাপন, চুরখাইসহ পর্যন্ত নতুন বিদ্যুৎ লাইন, খুঁটি ও ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য দালাল প্রতারক বিহাম ঠিকাদার আ‌জিজ`র মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ২০ লক্ষ টাকা।

ওই এলাকার বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান, নতুন বিদ্যুৎ লাইন ও ট্রান্সফরমার বসানোর জন্য চাঁদা তুলে ২০ লক্ষ টাকা প্রকল্প অ‌ফি‌সে কয়েকজন দালাল প্রতারক‌দের মাধ্যমে সি‌লেট প্রকল্পের দায়িত্বে প্রকৌশলী ও উপ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার নাম ভা‌ঙ্গি‌য়ে বিহাম না‌মে প্রতারক ও ঠিকাদার আ‌জিজ এর মাধ‌্যমে তা‌দেরকে টাকা দেয়া হয়।

পিডিবির স্থানীয় কর্মকর্তারা অনিয়মের বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা অনিয়ম ও ঘুষ বাণিজ্যের কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে প্রকল্পের নিবাহী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার কে ভালো করে জিজ্ঞাসা করেন এসব দুনী‌তি অ‌নিয়‌মের তথ্য বে‌রি‌য়ে আস‌বে।

ছাতক উপ‌জেলার বিভিন্ন এলাকায় জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন পরিবর্তন না করে অন্য এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ও খুঁটি বসানো হচ্ছে এসব প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

প্রকল্পের পরিচালক (পিডিবি) নিবাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হক জিয়া তার বিরু‌দ্ধে আনীত অ‌ভি‌যোগ অস্বীকার ক‌রে ব‌লেন বিহাম না‌মে তার অ‌ফি‌সে কেউ নয়। প্রকল্প অ‌ফি‌সে নাম ভা‌ঙ্গি‌য়ে কেউ টাকা নেন তার স‌ঠিক নাম ঠিকানা দি‌লে আমরা তাদের বিরু‌দ্ধে আইনানুগত ব‌্যবস্থা নেবেন তি‌নি।

তার অধীনে সি‌লেট বি‌ভিা‌গে বিভিন্ন অঞ্চলে এরকম বেশ কয়েকটি প্রজেক্টের কাজ চলছে।

তাই আলাদা করে এখানে (ছাতক দোয়ারাবাজার ও শা‌ন্তিগঞ্জ বিশ্বনাথ)আং‌শিক কত টাকা বরাদ্দ সেটা বলা যাচ্ছে না।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন