মোঃ রায়হান হোসেন: সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে দাপিয়ে চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইক(টমটম।সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ব্যাটারিচালিত অবৈধ ইজিবাইকে সয়লাব হয়ে গেছে।সিলেট থেকে তামাবিল স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ইজিবাইকের ১০টি স্ট্যান্ড।একটি স্ট্যান্ড থেকে আরেক স্ট্যান্ড পর্যন্ত ভেঙে ভেঙে চলছে যাত্রী পরিবহন।ইজিবাইকগুলো নিয়ম মেনে না চলায় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
হাইওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে-আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ। এসব নিবন্ধনবিহীন নিষিদ্ধ ইজিবাইকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলানো হচ্ছে। জাফলং থেকে পাথর বোঝাই করে সিলেটগামী কয়েকজন ট্রাকচালক জানান- সড়কের স্থানে স্থানে ইজিবাইকে সয়লাব। এসব ইজিবাইকগুলো সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ। ইজিবাইকগুলো ধীরগতিতে চলাচল করে আর খেয়ালখুশিতে যাত্রী পরিবহন করে। এ ছাড়া ইজিবাইকের চালকেরা অদক্ষ এবং অনেক ক্ষেত্রে অপ্রাপ্ত বয়স্ক। ফলে তারা হঠাৎ করে যানগুলোর মোড় ঘুরিয়ে নেয়। মহাসড়কে ইজিবাইক নিষিদ্ধ হলেও যাত্রী পরিবহন বন্ধ না করায় দুর্ঘটনার দায়ভার তাদের ওপরই বর্তায়।
দেখা গেছে, সিলেট-তামাবিল পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ইজিবাইকের স্ট্যান্ড। সড়ক দখল করে স্ট্যান্ডগুলো বসানো হয়েছে। স্ট্যান্ডগুলো হচ্ছে- টিলাগড়-মেজরটিলা, মেজরটিলা-শাহপরান, শাহপরান-সুরমাগেইট, সুরমাগেইট-পীরেরবাজার, পীরেরবাজার-বটেশ্বর, বটেশ্বর-চিকনাগুল, চিকনাগুল-হরিপুর,হরিপুর-দরবস্ত,দরবস্ত-জৈন্তাপুর, জৈন্তাপুর-তামাবিল।
যাত্রীরা জানান-কোনো যাত্রী টিলাগড় থেকে শাহপরান পর্যন্ত যাবেন। তাকে প্রথমে টিলাগড় থেকে মেজরটিলা পর্যন্ত আসতে হবে। পরে মেজরটিলা থেকে আবার ইজিবাইকে উঠতে হবে। প্রতিটি স্ট্যান্ডে ইজিবাইকের ভাড়া নির্ধারিত রয়েছে। অনেক মানুষ এভাবে ভেঙে ভেঙে চলাচল করছে। যাত্রীরা ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে গ্রামের ভেতরেও যেতে পারে।
সুরমাগেইট থেকে থেকে পীরের বাজারের উদ্দেশ্যে যাওয়া ইজিবাইকের কয়েকজন যাত্রী জানান- স্থানীয়ভাবে ইজিবাইকগুলো গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহার করেন চালকরা। সহজলভ্য ও গ্রামের অভ্যন্তরে এগুলো চলাচল করায় তাতে যাত্রীদের সুবিধা হয়। তবে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান- এ আঞ্চলিক মহাসড়কটি দিয়েই সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও জৈন্তাপুরের লালাখালে যাতায়াত করে থাকে পর্যটকবাহী যানবাহন। এ ছাড়া তামাবিল স্থলবন্দর ও জাফলং থেকে বালু ও পাথর পরিবহন করা ভারী যানবাহন প্রতিনিয়ত চলাচল করে। চলে যাত্রীবাহী বাসও। ধীরগতির ইজিবাইক মহাসড়ক দখল করে চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় সড়কে খেয়ালখুশি মতো যাত্রী ওঠানামা করে ইজিবাইকগুলো। এ ছাড়া অনেক ইজিবাইকচালকের আসনে বসে আছে কিশোর।
জাফলং ও জৈন্তাপুরে পর্যটক পরিবহন করা প্রাইভেট গাড়ির চালকরা জানান- ইজিবাইকগুলোর জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো যায় না। এসব ইজিবাইকের স্ট্যান্ড মহাসড়কের বিভিন্ন বাজার এলাকার সড়কজুড়ে বসানো হয়। এতে যানজট লেগে পর্যটক ও তাঁদের সময়ের অপচয় হচ্ছে। বটেশ্বর এলাকা থেকে পীরের বাজার এলাকায় চলাচলকারী কয়েকজন ইজিবাইকচালক জানান- সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তাদের প্রবেশ নিষেধ। আবার মহাসড়কেও চলাচলে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এমন অবস্থায় তাদের যাওয়ার কোন পথ নেই। অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা স্ট্যান্ড বসিয়ে আশপাশের এলাকায় যাত্রী পরিবহন করছেন।
সিলেটের তামাবিল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহবুবুর রহমান জানান- ইতোমধ্যে সব মহলের অংশগ্রহণে তাঁরা একটি সভা করেছেন। এতে আঞ্চলিক মহাসড়কটি নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বিষয় হচ্ছে এই মহাসড়কে নিবন্ধনবিহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা। ইজিবাইকের কারণে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি আরোও জানান- তাঁরা নিয়মিত মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করতে অভিযান চালাচ্ছেন। ইজিবাইকচালকদের গ্রামের অভ্যন্তরে যাত্রী পরিবহনের জন্য স্ট্যান্ডগুলোতে প্রচারণা চালানো হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন