সিলেট নিউজপেপার ডেস্কঃ সিলেটে ফিজিওথেরাপীর আড়ালে গড়ে তোলা হয়েছে পতিতালয়।দীর্ঘদিন থেকে থেরাপি ব্যবসার নাম করে স্টেডিয়াম মার্কেটের ৬৫ নং দোকান কোটা ভাড়া নিয়ে এমন অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে স্বপনা ফিজিও থেরাপি ও হিজামা সেন্টারের পরিচালক স্বপ্না বেগম।স্থানীয়রা জানান উঠতি বয়সের ছেলেদের আনাগুনা সব সময় দেখা যায় ঐথেরাপি সেন্টার। তাছাড়াও দেখা যায় সিলেটের অনেক প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের।
এছাড়াও স্থানীয় নেতাদের সাথে রয়েছে তার এই ব্যাবসার লেনদেন ।এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে দেখা যায় । সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেটের ৬৫ নং দোকানে স্বপনা ফিজিও থেরাপী ও হিজামা সেন্টারে সামনে উপস্থিত হয় অনুসন্ধানী টিম। এসময় স্বপনার সাথে দেখা করতে চাইলেও কোন উত্তর আসেনি ঝকঝকা আন্দরমহল থেকে।এরপর অনেকবার ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে দরজা আটকে রাখেলেন ওইখানে থাকা কর্মতর কর্মচারী।
এসময় তারা বললেন কিছু সময় অপেক্ষা করার জন্য। অপেক্ষারত অবস্থায় কিছু সময় পর ভিতর থেকে তড়িগড়ি করে কাপড়চোপড় টিকটাক করে একে একে বের হলেন তিনজন পুরুষ।দুজন দৌড় দিয়ে পালালেও একজন ক্যামেরার জালে বন্ধি হয়ে পড়েন। দেবব্রত দাস প্রথমে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি না হলেও পরবর্তীতে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলেন আমি এসেছিলাম চিকিৎসা নিতে। কি চিকিৎসা এবং ডাক্তারের প্রেসক্রিপসন দেখতে চাইলে তিনি বলেন,ভিতরে রেখে আসছেন দেখতে চাইলে তা আর ভিতর থেকে নিয়ে আসতে পারেননি। নিজেকে সিলেট সিটি করপোরেশেনর সিভিলের উপ সহকারী প্রৌকশলী হিসেবে পরিচয় দেন তিনি।তিনি বলেন,কোমরে ব্যাথা নিয়ে এখানে থেরাপীর জন্য এসেছিলাম। ৫মিনিট ভিতরে ছিলাম।
এরপর তিনি অনুনয় বিনিনয় করতে থাকেন। তার সাথে ছিলেন লিপু সিংহ নামে সিসিকের আরেক কর্মকর্তা। আর ওই জায়গায় কর্মরতরা নিজেদের সেইফ করতে সবকিছু ঠিকটাক করতে থাকেন। ততক্ষণে উপস্থিত হয় কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি টিম। পুলিশের উপস্থিতে ভিতরে প্রবেশ করা হলে দেখা যায় তিনজন তরুণী রয়েছেন। কোনো চিকিৎসক নেই। সবাই এখানে স্টাফের দায়িত্বে। তারাই কোনো রকম প্রেসক্রিপসন ছাড়াই থেরাপী ও হিজামা সেবা দিয়ে থাকেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মচারী বলেন, যারা সেবা নিতে আসেন তাদের বেশিরভাগেই প্রেসক্রিপসন ছাড়া। অনেকেই মেডামের মোবাইলে প্রেসক্রিপসন দিয়ে থাকেন আমরা তার পরার্মশে সেবা দিয়ে থাকি। তাছাড়া থেরাপি নিতে হলে কোনো ধরণের প্রেসক্রিপসনের প্রয়োজন হয় না বলে দাবি করেন তারা। এখানে কর্মরত রয়েছেন তারা কেউই থেরাপিস্ট বা কিছু নন।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেরাপী ও হিজামার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে স্বপনা থেরাপী সেন্টারের আড়ালে পতিতালয় গড়ে তোলা হয়েছে। এমন কয়েকটি ভিডিও হাতে এসেছে অনুসন্ধানী টিমের হাতে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান দিয়ে থাকে প্রায় সময়।কিন্তু বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে বেঁচে যায় তারা। কয়েক মাস আগেও এখানে অভিযান দিয়েছিলেন কোতোয়ালী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম আবু মুসা। নামপ্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন ব্যাবসায়ী জানান, একটি প্রতিষ্ঠানের কারণে আমাদের সবার মান-সম্মান নষ্ট হচ্ছে । কয়েকদিন পরপর এখানে অভিযান চালানো হয়। তাই চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগী আসতে চান না আমাদের এখানে। দেবব্রত দাস সিলেট সিটি করপোরেশেনর উপ সহকারী প্রৌকশলী বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান।
প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার স্বপনা বেগম বলেন, এখানে কোনো ধরণের অসামাজিক কার্যকলাপ করা হয় না। আর আমি ওই জায়গায় উপস্থিত ছিলাম না। এটা আমার প্রতিপক্ষের অপ্রপচার। একপ্রশ্নের জাবাবে স্বপনা বলেন, প্রেসক্রিপসন আমি নিজেই তৈরি করে দেই। আজ কাউকে প্রেসক্রিপসন ছাড়া চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
এব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মুহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন,ওই জায়গায় আমাদের পুলিশ সদস্যরা গিয়ে কোনো কিছু পায়নি।তাই আর কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন