জাফলংয়ের পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে বালু লুটপাট ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে সিলেটে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বালু লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া পৃথক পৃথক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপি পেশ করেন জাফলং নয়াবস্তি গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা ইনছান আলীর ছেলে আলীম উদ্দিন।
স্মারকলিপিতে আলীম উদ্দিন জানান- জাফলংয়ের পরিবেশ সঙ্কটাপন্ন এলাকা থেকে লুটপাট করছে বালু ও পাথরখেকো ডৌবাড়ি এলাকার লামা দোমকা গ্রামের বাসিন্দা সুভাস দাস, লেঙ্গুরা গ্রামের মুজিবুর রহমান, মামার দোকান মেলার মাঠের বাসিন্দা ইমরান হোসেন সুমন ও বিশ্বনাথের ফয়জুল ইসলাম। তারা মন্ত্রীর দোহাই দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই লুটপাট চালাচ্ছে। প্রায় তিন মাস আগে তারা এবার যখন জাফলং মিশন শুরু করে তখন নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এই সিন্ডিকেটে এনে যুক্ত করে পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান লেবুর ভাই শামসুল আলম সহ কয়েকজনকে। ২৪ ঘন্টাই তারা জাফলংয়ের নিষেধাজ্ঞা এলাকা থেকে বালু লুটপাট করছে। প্রতিদিন তারা ২০-২৫ লাখ টাকার বালু লুটপাট করেই চলেছে। আর বালু লুটপাটে তারা বোমা মেশিনও ব্যবহার করছে।
তিনি দাবি করেন- বালু লুটপাটের কারনে পিয়াইনের তীরবর্তী কান্দুবস্তি, নয়াবস্তি এলাকার মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বালু উত্তোলনে নিয়োজিত বোমা ও ড্রেজার মেশিনের শব্দে গোটা এলাকায় শব্দ দুষন হচ্ছে। ইতিমধ্যে জাফলংয়ের পিয়াইন নদী বাগান এলাকায় অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে জাফলং চা বাগান হুমকির পড়ে পড়েছে। জাফলং কান্দুবস্তু ও নয়াবস্তি এলাকা পড়েছে হুমকির মুখে। ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা ঢল থেকে রক্ষার জন্য যে বাধ দিয়েছিলেন সেটিও বালুখেকোরা লুটেপুটে খেয়ে নিয়ে নিয়েছে। এই দুই গ্রামের অনেক বসতি ও নদী তীরবর্তী জমি ইতিমধ্যে নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। যেকোনো সময় দুই গ্রামের মানুষ ভিটে-মাটিহীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া- স্থানীয় সাংসদ, প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইমরান আহমদের একান্ত প্রচেষ্ঠায় শত কোটি টাকা ব্যায়ে গোয়াইনঘাটবাসীর স্বপ্নের সেতু জাফলং ব্রিজও হুমকির মুখে রয়েছে। এই ব্রিজের পাদদেশ থেকেও অবাধে বালু লুটপাট করা হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আলীম উদ্দিন জানিয়েছেন- গোয়াইনঘাট উপজেলায় জেলা প্রশাসন থেকে এবার মাত্র একটি বালু মহালকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। এটি হচ্ছে; গোয়াইন ১১৭ নামের বালু মহাল। সালুটিকর ব্রিজের উজানে নন্দিরগাও এলাকায় ওই বালু মহালের অবস্থান। এছাড়া নৌ-বন্দরের পক্ষ থেকে নদী ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে রয়্যালিটি আদায়ের জন্য একটি ইজারায় রয়েছে। সালুটিকর ব্রিজের নিচ থেকে ওই রয়্যালিটি আদায় করা হচ্ছে। এর বাইরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় আর কোনো বালু মহাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইজারা দেওয়া হয়নি। অথচ গোটা জাফলংয়েই ওই চক্র মন্ত্রী ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে বালু লুটপাট ও চাদাবাজি করছে বলে জানান তিনি। স্মারকলিপিতে তিনি জাফলং নয়াবস্তি, কান্দুবস্তি, জাফলং চা বাগান, জাফলং ব্রিজ রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন