জৈন্তাপুর প্রতিনিধি::জৈন্তাপুরে সিএনজি চালিত অটোরিকশা পর ইজিবাইকে চলছে টোকেন বানিজ্য।
পুলিশি ঝামেলা মুক্ত থাকতে ইজিবাইক,টমটম ও রিক্সা চালকরা বাধ্য হয়ে পরিশোধ করেন টোকনের টাকা।
থানাপুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ অস্বীকার।
জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের জন্য সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ব্যতিত বিকল্প রাস্তা নেই।
বিভিন্ন ইউনিয়ন হতে উপজেলা সদরে যাওয়া-আসা করতে হয় মহাসড়ক কিছু অংশ ব্যবহার করে।
ফেরীঘাট হতে জৈন্তাপুর,খেয়াঘাট ও ইমরান আহমদ কলেজ রোড হতে জৈন্তাপুর,কদমখাল ও চাঙ্গীল হতে জৈন্তাপুর,ঘিলাতৈল হতে জৈন্তাপুর,বাংলাবাজার, লক্ষীপুর ও বিরাইমারা হতে জৈন্তাপুর।
ভিত্রিখেল (কন্যাখাই, ববরবন্দ) লামাবস্তি,বাউরভাগ, কাটাখাল,লক্ষীপ্রসাদ,লক্ষীপ্রসাদ হাওর,রুপচেং, লালাখাল,গোয়াবাড়ী,লামনীগ্রাম,বন্দরহাটি,লামাপাড়া, মেঘলী,নয়াবাড়ী,মুক্তাপুর,খারুবিল,টিলাবাড়ী সহ নিজপাট ইউপি’র ১,২,৩,৪,৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্ধারা পায়ে চালিত রিক্সা ব্যবহার করে আসছে।
যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে পায়ে চালিত রিক্সার পরিবর্তে ডিজিটাল ব্যাটারী চালিত ইজিবাইকের যাত্রা শুরু হয়। কালের বিবর্তনে ইজিবাইক চলাচল শুরু হলে পায়ে চালিত রিক্সা বিলুপ্তি ঘটে উপজেলার সদর হতে।
অপরদিকে সরকারি নির্দেশনায় মহাসড়কের শৃঙ্খলা আনতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর।
বিকল্প রাস্তা না থাকায় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহার করতে হয় ইজিবাইক বা ব্যাটারী চালিত রিক্স দিয়ো।
প্রায়ই ইজিবাইক,ব্যাটারী চালিত রিক্সা,টমটম চালক ও পুলিশের সাথে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে রূপনেয়।
শ্রমিকদের আন্দোলনের সাথে স্থানীয় ইউপির সচেতন মহল যোগ দিলে সিলেট তামাবিল মহাসড়ক অররোধ করা হয়।
তৎকালীন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ চৌধুরী,উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ,বৃহত্তর জৈন্তা পাথর শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুর এলাহী সম্রাট, বর্তমান সভাপতি আব্দুর রহমান,সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব,রিক্সা চালক সমিতির সাবেক সভাপতি মরহুম খলিলুর রহমান,স্থানীয় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ, সমাজসেবীরা আন্দোলনকারীদের শান্ত করে ইরাদেবী মাঠে আলোচনায় বসেন।
রিক্সা,ইজিবাইক, টমটম মহাসড়কে যানযট সৃষ্টি না করে যাত্রী পরিবহন করবে। পরবর্তীতে আগষ্ট ২০১৫ হতে জনসাধারণ রিক্সা, ইজিবাইক কিংবা টমটম ব্যবহার করে আসছে।
অভিযোগ উঠেছে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে,তারা কৌশলে সংঘঠনের নামে টোকন চালু করে। টোকনের কারনে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে যানঝটের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বাজারের প্রবেশমূখে যানঝট সৃষ্টিকারী ইমা লেগুনা, সুজুকী, নাম্বার বিহীন সিএনজি (অটোরিক্সা),গ্যাস ও ব্যটারী চালিত টমটম রাস্তা হতে না সরিয়ে কারনে অকারনে ইজিবাইক গুলোকে হয়রানি করে আসছে জৈন্তাপুর ট্রাফিক পুলিশ।
মাঝে মধ্যে ইজিবাইক আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আইনি প্রক্রিয়ায় ৫ হতে ৬ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়। আইনের মারপ্যাঁচের হয়রানী হতে মুক্তি পেতে টোকনের ফাঁদে পা দিতে হয়েছে ইজিবাইকের চালকরা।
ইজিবাইক চালক নজরুল ইসলাম, মানিক মিয়া, ফরিদ আহমদ সহ ১৫-২০জন চালক প্রতিবেদকে বলেন, গত জুলাই মাস হতে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের টোকেন ধরিয়ে দিয়ে ১১০টাকা নেয়। ট্রাফিক পুলিশের ঝামালো এড়াতে হলে টাকা দিয়ে টোকনটি ব্যবহার করতে হবে। টোকেন দেখলে পুলিশ গাড়ী আটক কিংবা ঝামেলা সৃষ্টি করবে না। ১০টাকা টোকন এবং ১শত টাকা পুলিশের জন্য দিতে হয় আমাদেরকে।
জুলাই মাসে ৭নং টোকেন ব্যবহার করায় পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পুলিশকে টাকা দিচ্ছে কিনা সেটা আমারা বলতে পারব না। যেহেতু ঝামেলায় হয়নি,তাই বলা চলে পুলিশকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসে ৮নং টোকেন ব্যবহার করছি আগে ছিল সবুজ এখন হয়েছে লাল।
মাসে মাসে কালার পরিবর্তন করা হয় মাসিক চাঁদা পরিশোধের সুবিধার্থে।
রিকশা চালক সমিতির সভাপতি ফখরুল-এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাধারণ সম্পাদক লাল মিয়া টোকনের মাধ্যমে টাকা আদয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,দূর্ঘটনা সহ পুলিশ গাড়ী আটক করলে টাকা খরচ হয়। টোকনের মাধ্যমে আমরা টাকা আদায় করছি। ইজিবাইক চালকরা পুলিশের নামে টাকা দিচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
জৈন্তাপুর ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আলী বলেন, আপনার নিকট হতে বিষয়টি জানার পর সিভিল ও ড্রেস পরিহিত অবস্থায় একাধিক চালকদের সাথে কথা বলে টোকন বানিজ্যের শতভাগ সত্যতা পাই।
চালকেদের নিকট হতে পুলিশের নাম ব্যবহার করে ১শত টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। জৈন্তাপুর ট্রাফিক পুলিশ টোকন বানিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত নহে এবং টাকা নিচ্ছে না। বিষয়টি সত্যতা পাওয়ায় রিক্সা চালক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকেছি।
তিনি আরও বলেন এসপ্তাহের মধ্যে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে যে সকল গাড়ী অবৈধ পার্কিং করে রাখা হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সুত্র একাত্তরের কথা
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন,টোকেনের মাধ্যমে ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিধান আমার জানা নেই। থানার কোন পুলিশ সদস্য এঘটনার সাথে জড়ীত নয়। সত্যতা যাচাই করে বিষয়টি উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন