চলতি বছরের ২৮ মার্চ আমতৈল পিছেরমূখে মারামারির ঘটনাস্থলে না থেকেও মামলার আসামি হতে হয়েছে। অযথা হয়রানির শিকার হয়ে এই বৃদ্ধ বয়সে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে হয়রানি করাচ্ছে। বাদীর অজন্তে আমতৈলের মারামারির ঘটনায় মামলায়ও তাকে শত্রুতা মিটাতে আসামি করা হয়েছে।
এমন অভিযোগ এনে রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপার ও ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আবারক আলী (৬০) নামের এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান।
তিনি উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের সিঙ্গেরকাছ পশ্চিমগাঁওয়ের মৃত হাজী রাশিদ আলীর ছেলে ও ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি সিঙ্গেরকাছ পাবলিক বহুমুখী উচ্চ-বিদ্যালয় ও কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি,সিঙ্গেরকাছ আলিম মাদ্রাসার দাতা সদস্য ও সিঙ্গেরকাছ বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির মোতোয়ালি ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একসময় তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতিও ছিলেন।
অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন,তার অভিযোগটি তদন্ত করা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,চলতি বছরের ২৮মার্চ হেফাজতের ডাকা হরতাল চলাকালে ট্রাক আটকানো নিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ-লামাকাজি সড়কের আমতৈল পিছেরমূখে ‘আমতৈল ও ধলিপাড়া’ গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুই গ্রামের ৩০জনসহ ৫ পুলিশ সদস্যও আহত হন। এ ঘটনার প্রায় একমাস পর গত ২৯ এপ্রিল ৬২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন ধলিপাড়ার নাজমুল ইসলাম শিপু, (মামলা নং ২৯)। মামলায় আরও ২৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আবারক আলীর অভিযোগ,পিছেরমূখে ঘটনার দিন সিঙ্গেরকাছ বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। কেবল শত্রুতা মিটাতে বাদীর অজান্তেই ওই মামলায় তাকেও আসামি করা হয়।
আর মামলায় ৪১নং আসামি দেওয়া হয়েছে জেনে তিনি বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ধলিপাড়ার কয়েকজন মুরব্বীর সামনে বাদী নাজমুল ইসলাম শিপু তাকে আসামি করেননি বলে জানান।
আর বাদীর ওই স্বীকারোক্তিমূলক কয়েকটি ভিডিও রেকর্ডও তিনি ধারণ করেছেন যা তার নিকট রয়েছে। তাছাড়াও বিষয়টি তদন্ত করা হলে তার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
তার দাবি, প্রথম জীবনে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এরপর এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি এম.ইলিয়াস আলীর সঙ্গে কাজ করেছেন।
পরবর্তীতে ২০১২ সালে ইলিয়া আলী নিখোঁজ হওয়ার পর তিনি বিএনপির রাজনীতি থেকে অব্যাহতিও নিয়েছেন।
রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রতিপক্ষরা এপর্যন্ত প্রায় ১০/১২টি মিথ্যা মামলা তার বিরুদ্ধে করলেও বেশিরভাগ মামলায়ই তিনি খালাস পেয়েছেন।
মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে জানিয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান ও মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আপ্তাব উজ্জামান রিগ্যান এ প্রতিবেদককে বলেন,ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলে কাউকেই অযথা হয়রানি করা হবে না।
মামলার বাদী নাজমুল ইসলাম শিপু এ প্রতিবেদককে বলেন, আবারক আলী চেয়ারম্যান ওইদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তিনি তাকে আসামিও করেননি! এজাহার পাওয়ার পরে তিনি জানতে পারেন তাকেও (আবারক) আসামি করা হয়েছে।সুত্র সিলেটূডে২৪
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন