নিউজ ডেস্ক :: সিলেটের কানাইঘাটে চোরাই বালু-মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে স্টেডিয়াম। বিল পরিশোধ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তারই উপজেলাধীন সরকারি খাস ভূমি থেকেই এ মাটি দেওয়া হলেও এর কোন খোঁজখবর এবং প্রতিকার নিচ্ছেন না তিনি। প্রশাসনের কর্তব্যে অবহেলার কারণে উপজেলার সরকারী সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে মাটি খাদকরা।
জানা গেছে- সিলেটের কানাইঘাট বীরদল ছোটফৌদ এলাকায় নির্মিত হচ্ছে উপজেলা ফুটবল স্টেডিয়াম। সিলেট-৫ আসনের এমপি হাফিজ মজুমদারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জেলা পরিষদের অধিকৃত জায়গায় এ স্টেডিয়াম করা হচ্ছে। সেটডিয়ামের মাটি ভরাট করাচ্ছেন খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সরকারী কোষাগার থেকেই তিনি মাটি ভরাটের বিল পরিশোধ করছেন। আর মাটি সরবরাহ করছেন সরকার দলীয় ইজারাদার কানাইঘাটের মিজানুর রহমান ডিপজল।
অভিযোগ পাওয়া গেছে- ডিপজল ও তার খাদক বাহিনী কানাইঘাট উপজেলাধীন সুরমার নদী খোদাই করেই স্টেডিয়াম ভরাটের মাটি সরবরাহ করছে। পাশাপাশি লাখ লাখ ঘনফুট চোরাই বালুমাটি সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন প্রজেক্টে পাচার করছে।
জানা গেছে- বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান ডিপজল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন বালূমহাল ইজারাদার। প্রতিবছরই তিনি প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে কোন না কোন বালু মহাল ইজারা রেখে বালু-মাটি সরবরাহের ব্যবসা করে থাকেন। চলতি ১৪২৮ বাংলা সনে তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ইজারা নিয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলার বরহাল ইউনিয়নের নয়াগ্রাম মৌজাধীন সুরমা নদীর বালু মহাল। কিন্তু বাস্তবে ডিপজল ও তার পার্টনাররা ইজাকৃত মহাল থেকে কোন বালু-মাটি তোলছেনই না। নিজ মহাল ইনটেক্ট রেখে এর ২০/২২ কিলোমিটার উজানে ইজারা অযোগ্য সুরমা নদী ও নদীতীর খোদাই করেই বালু-মাটি উত্তোলন করছেন।
এলাকাটি হচ্ছে কানাইঘাট উপজেলার উজান বীরদল সুরমা নদী। ইজারা বহির্ভুত নদী ও নদীতীর খোদাই করে স্টেডিয়ামে বালু-মাটি সরবরাহ করছেন ডিপজল। আর সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে এই চোরাই মাটির বিল পরিশোধ করছেন কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন ব্যানার্জি,। ইজারা অযোগ্য নদী ও নদীতীর খোদাই করে স্বল্পতর খরচে সরাসরি নদী থেকে চোরাই বালু স্টডিয়ামে সরবরাহ করে মিজানুর রহমান ডিপজল পুরোপুরি বিল আদায় করে নিচ্ছেন উপজেলা অফিস থেকে। আর ধ্বংস করে দিচ্ছেন এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ। উপজেলা প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে। ফলে কানাইঘাটের বীরদল নদীতীর এলাকায় বিরাজ করছে চরম ভাঙ্গন আতংক। তিনদিন আগে বিষয়টি সোস্যাল ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশ পেলে পুলিশ দিয়ে একটি আইওয়াশ অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। এ সময় ডিপজল ও তার বাহিনী ড্রেজার নিয়ে দুই কিলোমিটার ভাটিতে আরেক ইজারা বহির্ভুত এলাকায় চলে যায়। সেখানকার লোকজন তাদের ধাওয়া করলে ডিপজল তার ড্রেজার ও খাদক বাহিনী নিয়ে ফের ইজারা বহির্ভুত বীরদল এলাকায় চলে আসে। আবারো পুরোদমে বে-আইনী বালু-মাটি উত্তোলন ও সরবরাহ শুরু করলেও অজ্ঞাত কারণে নিরব কানাইঘাট উপজেলা প্রশাসন।
এ বিষয়ে ইজারাদার মিজানুর রহমান ডিপজলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কানাইঘাট উপজেলাধীন নদী এলাকা থেকে বালু-মাটি উত্তোলনের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন- জকিগঞ্জের বারহাল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার কর্তৃক দেখিয়ে দেওয়া এলাকা থেকে তিনি বালু-মাটি উত্তোলন করে সরবরাহ করছেন।
এ বিষয়ে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন ব্যানির্জির সরকারি মুঠোফোনে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন সবসময় ভিজি পাওয়া গেছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন