• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চোরাচালানের কন্ট্রোল টাওয়ার জৈন্তাপুরের হরিপুর !

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত মে ২৪, ২০২১
চোরাচালানের কন্ট্রোল টাওয়ার জৈন্তাপুরের হরিপুর !

জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সব কয়েটি সীমান্ত পথ দিয়ে সীমান্ত লগডাউন অমান্য করে চোরাচালান ব্যবসায়ীরা তাদের রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।সীমান্ত পথ দিয়ে ভারত হতে অবাধে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় কসমেট্রিক্স,আমদানী নিষিদ্ধ শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি,বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ,ইয়াবা,টাটা গাড়ীর পার্স,টায়ার,সিএনজি আটো রিক্সার চাকা,বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল হ্যান্ড সেট, নিম্ন মানের চা-পাতা,মটর সাইকেল,বিভিন্ন কোম্পানীর বিস্কুট এবং ভারতীয় শাড়ী। বাংলাদেশ হতে পাচার করা হচ্ছে আমদানীকৃত মটরশুটি,সুপারী,প্লাষ্টি সমাগ্রী এবং স্বর্নের বার।

অভিযোগের তীর সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দিকে। চেরাচালান ব্যবসার মধ্যে অন্যতম সক্রিয় সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য ঢাকা থেকে আগত রুপক,সে বিগত দিনে সীমান্ত এলাকা দিয়ে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় চশমা ও সানগ্লাসসহ আটক হয়ে জেলে যায়  জেল থেকে বের হয়ে আবার সক্রিয় চোরাচালানে সিলেটের শীর্ষ চোরাকারবারি হয়ে ঊটেছে তার পুরো নাম রুপক রায়, প্রকাশ ঢাকাইয়া রুপক,এবং উপজেলার হরিপুর বাজারের ব্যবসায়ী রফিক আহমদ উরফে লোদাই হাজী, হেলাল আহমদ,ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ,মোঃ আলী,মোঃআব্দুল্লাহ,সুইট ফারুক,আজির রহমান,মোঃ ইব্রহিম আলী, দরবস্ত মানিকপাড়া গ্রামের বিলাল আহমদ,লালাখাল গ্রামের সামসুজ্জামান সেলিম,জালাল উদ্দিন, লালাখাল কালিঞ্জিবাড়ী গ্রামের রহিম উদ্দিন।৪নং বাংলাবাজারের জামাল আহমদ, আলুবাগান গ্রামের কবিরাজ ফারুক,ঘিলাতৈল গ্রামের আব্দুল করিম উরফে বেন্ডিজ করিম,কেন্দ্রি মির্জান আহমদ রুবেল, জৈন্তাপুরে মুজিব বর্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ঘর ভাংগার মূল হোতা পাথর খেকো বদরুল ইসলাম,হরিপুর শ্যামপুর গ্রামের জিগামেল্লা।

তাদের মধ্যে মোঃ রহিম উদ্দিন, সেলিম আহমদ মির্জান, আহমদ রুবেল, কবিরাজ ফারুক জামাল আহমদ বিজিবি-ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফথর অন্যতম সোর্স হিসাবে চোরাচালান ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনায় বাংলাদেশের কিছু সংখ্যাক স্থল বন্দর শর্ত সাপেক্ষে চালু রাখা হলে কোভিড পরিস্থিতিতে সীমান্তের সব কয়েকটি পথ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জৈন্তাপুর উপজেলার চোরাচালান ব্যবসার অন্যতম সিন্ডিকেট চক্রের ১৭জন সদস্য সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে শত শত বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে প্রবেশ করে ভারতীয় গরু-মহিষ, কসমেট্রিক্স, আমদানী নিষিদ্ধ শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, ইয়াবা, টাটা গাড়ীর পার্স, টায়ার, সিএনজি আটো রিক্সার চাকা, বিভিন্ন কোম্পানীর মোবাইল হ্যান্ড সেট, ভারতীয় নিম্ন মানের চা-পাতা, মটর সাইকেল, বিভিন্ন কোম্পানীর বিস্কুট এবং ভারতীয় শাড়ী বানের পানির মত নিয়ে আসছে বিনিময়ে বাংলাদেশ হতে পাচার করা হচ্ছে আমদানীকৃত মটরশুটি, সুপারী, প্লাষ্টি সমাগ্রী এবং স্বর্নের বার।

সিন্ডিকেট চক্রের সদস্য পণ্য আদান প্রদান করছে সীমান্তের নলজুরী, আলু বাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, আসামপাড়া, ছাগল খাউরী, মিনাটিলা, রাবার বাগান, কাটালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, ডিবির হাওর, ডিবির হাওর (আসামপাড়া), ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা (সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্র), কমলাবাড়ী, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, নয়াগ্রাম, কালিঞ্জীবাড়ী, জালিয়াখলা, বড়গাং নদীর উৎসমূখ, সারী নদীর মুখ, লাল মিয়ারটিলা, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, আফিফানগর, তুমইর, ইয়াংরাজা, বালিদাঁড়া, সিঙ্গারীরপাড় এলাকার অন্তত ১২০টি চোরাইপথ দিয়ে। এসব পণ্য আদান প্রদানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিথর সদস্যরা সক্রিয় ভাবে ভূমিকা পালন করছে। চোরাচালানের অন্যতম রোড হিসাবে লালাখাল, মিনাটিলা, কেন্দ্রি, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা এবং গোয়াবাড়ী অন্যতম।

চোরাচালান সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাংলাদেশের ভিতর যে সকল রোড ব্যবহার করে উপজেলার হরিপুর বাজার, দরবস্ত বাজার এবং জৈন্তাপুর বাজারে গরু মহিষ সহ ভারতীয় পন্য পাচারের রোড হিসাবে ব্যবহার করছে, আলুবাগান, শ্রীপুর, আদর্শগ্রাম টু সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক হয়ে দরবস্ত ও হরিপুর বাজার, ফুলবাড়ী, ঘিলাতৈল, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, জালিয়াখলা টু জৈন্তাপুর বাজার, লালাখাল নাজিমগড় রিসোর্ট সম্মুখ হতে লালখাল-সারীঘাট টু দরবস্ত হরিপুর বাজার, লালাখাল-কেলেসিং বাজার টু দরবস্ত বাজার। লালাখাল-বালিদাঁড়া-ইটাখাল টু চতুল বাজার হয়ে সিলেট-কানাইঘাট রোড দিয়ে দরবস্ত টু হরিপুর বাজার।

এছাড়া সীমান্তের ব্যবসা পরিচালনা করেত বিজিবির সোর্সদের মাধ্যমে কসমেট্রিক্স কিট প্রতি ২হাজার টাকা,বিডি-সিগারেটের কাটুন প্রতি ১হাজার ৫শত টাকা, মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রতি ৩শত টাকা, শাড়ীর কিট প্রতি ৩হাজার টাকা, মটরসাইকেল প্রতি ৫হাজার টাকা, টায়ার টিউব, গাড়ীর অন্যান্য যন্ত্রাংশ আলোচনা স্বাপেক্ষে। ভারতে পাচারের ক্ষেত্রে মটরশুটি বস্তা প্রতি ১২০টাকা, সুপারী বস্তা প্রতি ২৫০টাকা এবং অন্যান্য পণ্য আলোচনা স্বাপেক্ষে টাকা আদায় করা হয়।

মালামাল আলোচনা স্বাপেক্ষে বিজিবিকে দিতে হয়। এছাড়া বিজিবি আটক করলে কাষ্টম কর্মর্কতার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নিলাম দিয়ে আসছে। সম্প্রতি ৩ হতে ৪মাস ধরে অতি গোপনে সিজার বা মামলার জন্য চোরাকারবারী কর্তৃক দেওয়া গরু-মহিষ গুলো প্রকাশ্যে নিলাম না করে গোপনে অল্প মূল্যে চোরাকারবারীদের কাছে হস্তান্তর করেন। বিষয়টি সরকারী বেসরকারী গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের তদন্তে উঠে এসেছে।

একাধিক ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান সব চোরাকারবারিরা জড়ো হয় হরিপুরে এখান থেকেই সব জায়গায় পাচার হয়,আবার কেউ কেউ জায়গাতেই কিনে জায়গাতেই বিক্রি করছেন এসব বুঙ্গার মালা মাল।বলতে পারেন সিলেটের চোরাকারবারিদের কন্ট্রোল রুম জৈন্তাপুরের হরিপুর।

উপজেলার সচেতন মহল বলেন, এই ব্যবসায়ী স্থানীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা সরকার ঘোষিত সীমান্ত লগডাউন অমান্য সচেতন মহল মনে করছে আভ্যন্তরিন করিডোর ব্যবস্থা চালু করার দাবী জানান।

এ বিষয়ে জানতে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, আমি এই স্টেশনে নতুন যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকে অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছি। সীমান্তরক্ষী বাহিনী আন্তরিক না হলে চোরাচালান রোধ করা কঠিন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন