নিউজ ডেস্কঃ প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে সরকারি নথি চুরি ও অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহের ভার্চুয়াল আদালত শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন। ৫ হাজার টাকা জামানত ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তাকে জামিন দেওয়া হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) উল্লেখিত আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী ও প্রশান্ত কুমার কর্মকারসহ অন্য আইনজীবীরা জামিন শুনানি করেন। রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি বলেন, এজাহারে গোপনীয় নথির বিষয়ে কোনো আলামতের বর্ণনা নেই। তাই এ মামলায় জামিন পাওয়াটা আসামির প্রতি কোনো দয়া বা অনুগ্রহ নয়। বরং জামিন পাওয়াটা তার মৌলিক অধিকার।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে সেটা জামিন অযোগ্য। আর তাকে জামিন দিলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়া আসামির কাছ থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ জন্য তাকে জামিন দেয়া ঠিক হবে না।
ওই দিন উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত নথি পর্য্যালোচনা করে আজ রোববার জামিনের ব্যাপারে আদেশের দিন ধার্য্য করেন ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মে রাজধানীর শাহবাগ থানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের দফতরে ঢুকে দাফতরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানো এবং মোবাইলের মাধ্যমে ছবি তোলেন রোজিনা ইসলাম। তখন একান্ত সচিব দাফতরিক কাজে সচিবের কক্ষে ছিলেন। এ সময় সচিবের দফতরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান তাকে বাধা দেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সই হয়। সেসব বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এসব বিষয় যদি জনসম্মুখে চলে আসে তাহলে ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্টের আশঙ্কা বিদ্যমান ।
প্রসঙ্গতঃ, রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে জানা যায়, তাকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম, উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন। রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে উপস্থিত হন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তাকে বেআইনি ও অন্যায় ভাবে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন