নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের কুমারগাঁওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আউটসোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগে অফিসিয়াল গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে। অফিসের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারির সহযোগিতায় তথ্য ফাঁস হওয়ায় জনবল নিয়োগের কার্যাদেশ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অংশগ্রহণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধায় কার্যাদেশ দেওয়ার প্রস্তুতি স্থগিত ও অফিসিয়াল অনিয়ম দুর্নীতি পরিহার করার দাবি ওঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, যুবদল নেতার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিতে ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী রিমাদ আহমদ রুবেল অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, সিলেটের কুমারগাঁওয়ের ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জনবল সরবরাহের জন্য গত ২২ মার্চ দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্র নম্বর-৫৫৯৭৮৮। স্মারক নম্বর ২৭.১১.৯১০০.৪০৬.০১.৫০৪.২১.১৫৩, তারিখ ২২.০৩.২০২১। দরপত্রে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ফায়ার ম্যান ৪ জন, ক্লিনার ৬ জন, অফিস অ্যাসিসটেন্ট ১০ জন ও বাগান মালি ১ জনসহ ২১ জনবল আহবান করা হয়।
এদিকে ১৮ এপ্রিল দরপত্র বিক্রির শেষ তারিখ ছিল। ১৯ এপ্রিল দরপত্র খোলা হয়। দরপত্র খোলার পর দেখা যায় মেসার্স মনির মেটাল ও মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজ অংশগ্রহণ করে। দরপত্রে সর্বনিন্ম দরদাতা হিসেবে মেসার্স মনির মেটালকে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু দরপত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, অফিস নির্ধারিত সর্বনিন্ম আনুমানিক দরের সাথে মনির মেটালের দরের হুবহু মিল রয়েছে।
এ ঘটনার পর প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দাখিল করেন দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স রুবেল এন্টারপ্রাইজ। মঙ্গলবার প্রধান প্রকৌশলীর কাছে দেওয়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আউটসোর্সিংয়ের এ কাজে রুবেল এন্টারপ্রাইজ দরপত্রে অংশগ্রহণ করে।
দরপত্র খোলার প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ কাজের অফিসিয়াল আনুমানিক মূল্য ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৭৩০ টাকা। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। ১ম সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স মনির মেটাল এর দেয়া ৫৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৭ টাকা যা অফিসিয়াল আনুমানিক মূল্যের হুবহু ১০ শতাংশ কম। এ টেন্ডারের বিল অব কোয়ান্টেটিস এ বর্নিত আইটেম সমূহ হচ্ছে আউটসোর্সিংয়ে জনবল সরবরাহ যা পিডিবির শিডিউল এর রেট বর্হিভুত।
আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ১ম সর্বনিম্ন দরদাতা কিভাবে অফিসিয়াল আনুমানিক মূল্যের হুবহু ১০ শতাংশ কম দাখিল করে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় এটা সংশ্লিষ্ট অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে দুর্নীতির মাধ্যমে ১ম সর্বনিম্ন দরদাতাকে অফিসিয়াল আনুমানিক মূল্য তালিকা সরবরাহ করেছে।
আবেদনে বলা হয়, দরপত্রে ১ম সর্বনিম্ন দরদাতা দরপত্র আহবানকৃত অফিসে দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছেন।
মেসার্স মনির মেটালের স্বত্তাধিকারী যুবদল নেতা মনির হোসেন বলে বেড়াচ্ছেন আউটসোসিংয়ে জনবল সরবরাহ কাজ তিনি ছাড়া আর অন্য কোন প্রতিষ্ঠান কোনভাবে পাবে না। দীর্ঘদিন যাবত থেকে বিউবোতে পরিচালনা করে আসায় সংশ্লিষ্ট অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে সু-সম্পর্ক রয়েছে। ফলে অফিসিয়াল গোপন তথ্য পাচ্ছেন তিনি।
আবেদনকারী রিমাদ আহমদ রুবেল বলেন, অফিস কর্মকর্তা কর্মচারিদের অনিয়মের কারণে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ অনিয়ম বন্ধ না হলে প্রয়োজনে আমি আইনের আশ্রয় নেবো।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন