• ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ফেঁসে যাচ্ছেন গোয়াইনঘাটের ওসি হারুন

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪
ফেঁসে যাচ্ছেন গোয়াইনঘাটের ওসি হারুন

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট থানার বর্তমান ওসি শাহ হারুনুর রশীদ। বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুরে শক্তিয়ারখলা গ্রামে। বাবার নাম মৃত শাহ মো: আব্দুছ ছাত্তার। পড়াশোনা করছেনে সিলেট এমসি কলেজে।

পুলিশে যোগদানের পর থেকে নানা কারণে হয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত। বিশেষ করে উপপরিদর্শক থাকাকালে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানা ও আজমিরিগঞ্জ থানায় নারী ঘটিত বিষয় নিয়ে পড়েছিলেন শাস্তির মুখে। ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিলেট মেট্টোপলিটন পুলিশের দক্ষিণ সুরমা ও জালালাবাদ থানায়। শিল্পাঞ্চল পুলিশ ঘুরে পুনরায় ফেরেন সিলেটে।

আপার লোক যখন ওসি হারুন : কোর্ট ইন্সপেক্টর থেকে সর্বশেষ পদায়ন হন সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ওসি হিসেবে। দেশে ছাত্র-জনতার জয়ের পর স্বঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ হারুন অর রশীদের ওসি হিসেবে পদায়ন নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তিনি বর্তমানে গোয়াইনঘাট থানার ওসি হিসেবে কর্মরত। ছিলেন এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি। সেখানে দায়িত্বে থাকাকালে নিজেকে পরিচয় দিতেন শেখ হাসিনার কাছের লোক হিসাবে। তার নেতা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি মিসবাহ সিরাজের কথার বাইরে কোন কাজই করতেন না বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তিনি যে কাউকে শেখ হাসিনার ক্ষমতা প্রভাব দেখাতেন। তার সাথে নাকি ছিলো শেখ হাসিনার সরাসরি যোগাযোগ।

দক্ষিণ সুরমা থানায় দায়িত্বকালে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় জনতা। তখন জনপ্রতিনিধির মতো সড়েকের পাশে টেবিলে উঠে জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ওসি হারুন। জনতাকে হুমকি দিয়ে বলেন, আপনারা হয়তো জানেন না আমি নিজেও একজন আওয়ামী লীগ নেতা। আমার নেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। উনারাই আমাকে সিলেটে নিয়ে এসেছেন। সড়ক অবরোধ তুলে না নিলে দেখে ছাড়বো। আমি সরাসরি শেখ হাসিনা (আপার লোক! আপাই আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন) এমন মন্তব্য করে আলোচনায় এসেছিলেন ওসি হারুন। এমন একটি ভিডিও ফুটেজ এসেছে এ প্রতিবেদকের কাছে। এ থানায় তিনি দায়িত্বে থাকাকালে দক্ষিণ সুরমা এলাকার অপরাধ জগত মাথা নাড়া দিয়ে উঠেছিলো। জুয়া, হোটেলে পতিতা ব্যবসা থেকে ওসি হারুনের মাসিক আয় ছিলো কয়েক লক্ষ টাকা। ভারতীয় চোরাচালানের শেল্টার দিয়ে হাতিয়েছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। আর থানার নিরিহ মানুষের নামে মামলা বাণিজ্যতো রয়েই গেলো। তিনি ওসির চেয়ারে বসে আওয়ামী দলীয় ক্যাডারের ভুমিকা পালন করতেন। এমন কয়েকটি কল রেকর্ড এ প্রতিবেদক সংগ্রহ করেন।

বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনকালে তিনি ছিলেন জালালাবাদ থানার ওসি। ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরার মূল দায়িত্ব ছিলো ওসি হারুনের উপর। সিলেট ১ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন খন্দকার আব্দুল মক্তাদির। দুই / তিন দিন আগ থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের চাপ দিতে থাকে মুক্তাদির সাহেব বড় অঙ্কের টাকা না দিলে বিএনপির কাউকে ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে পুলিশ দাড়াতে দিবেনা। টাকা দিলে ওসি হারুন ও তার ফোর্স নমনীয় থাকবে। অন্যদিকে মুক্তাদিরের এক পর্যায়ে ওসি হারুনের চাপে স্থানীয় বিএনপি নেতারা টাকা ম্যানেজ করে ওসির হাতে দেন। বিএনপির প্রার্থীর কাছ থেকে টাকাও নিয়েছিলো, উল্টো রাতে ব্যালট বাক্স ভরে রেখেছিলো নৌকার ব্যালট দিয়ে। পরদিন জালালাবাদ থানায় বিএনপি নেতাদের টাকা দিয়ে খাসি পার্টিও করেছিলেন ওসি শাহ হারুন। জালালাবাদ থানায় দায়িত্ব পালনকালে ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন।

কেউ হামলা মামলার প্রতিকার চেয়ে কেউ থানায় এলে যেন তার স্বজন হলেও কোন বিএনপি জামাতের কর্মীকে সঙ্গে করে নিয়ে না আসেন। যদি কোন ভিকটিমের সাথে বিএনপি জামাতের কেউ চলে আসতেন দুর-দুর করে তাড়িয়ে দিতেন। আইনি প্রতিকার পাওয়া যেনো বিএনপি জামায়াতের ছিলো আরেকটি অপরাধ। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট অঞ্চলের কোনো থানায় দায়িত্বে না থাকলেও বসে থাকেননি ওসি শাহ হারুন। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ছুটে এসেছিলেন সিলেটে। যেখানে সুনামগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিকের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন। সিলেট নগরীর নির্ভানা ইন হোটেলে ‘ড. মোহাম্মদ সাদিকের সাথে সুনামগঞ্জ সদরের উত্তরসুরমাবাসী ও বিশ্বম্ভরপুর সমিতির মতবিনিময় সভা’য় অংশ নেন। ব্যানারে লেখা ছিল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. সাদিককে নৌকা মার্কায় ভোট দিন।

দেখা গেছে, ওই সভায় ওসি শাহ হারুন অর রশীদ মঞ্চে আসীন রয়েছেন। তিনি তখন ঢাকার শিল্পাঞ্চল পুলিশে কর্মরত ছিলেন। আওয়ামী লীগের আমলে সিলেটের পুলিশ প্রশাসনে কট্টর আওয়ামীপন্থি পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত শাহ হারুন ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর ভালো থানায় দায়িত্ব পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। বেছে নেন এমসি কলেজে পড়াকালীন সহপাঠীদের। সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদে রয়েছেন-এমন সহপাঠীদের ব্যবহার করে নিজেকে সাবেক ছাত্রদলকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে সফলও হন। চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে পরিচিত সীমান্তবর্তী গোয়াইন এলাকায় গত ১৭ আগস্ট ওসি হিসেবে যোগদান করেন। ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর ওসি হারুনের এমন পুরস্কৃত পদায়নে বিস্মিত হয়েছেন নির্যাতিতরা।

ওসি হারুন যেভাবে হলেন হাঁস হারুন : ওসি শাহ হারুনুর রশিদ যে থানায় ওসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন সে থানাকে বানিয়েছেন আওয়ামী ক্যাডারদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। তার কর্মস্থল থানায় এসআই থেকে কনেষ্টবল সকলেই থাকতেন অসহায়ের মতো। কোন কনেষ্টবল ছুটিতে যেতে হলে ওসি হারুন বলতেন আগে হাঁস না খাওয়ালে তোমার ছুটি মঞ্জুর হবে না। বাধ্য হয়ে এসআই/এএসআই/কনেষ্টবল সকলেই ওসি হারুনকে হাঁস দিয়ে খুশি করে ছুটিতে যেতে হতো। আবার ছুটি থেকে আসার সময় ওসি হারুন ফোন করে হাস নিয়ে আসার কথা বলতেন।

অপরদিকে কোন মামলা প্রত্যাশী থানায় সেবা নিতে গেলে, বড় অংকের টাকার পাশাপাশি দেশী হাঁস খাওয়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতেন হারুন। হাঁস দিলেই খুশি ওসি শাহ হারুন। এরপর থেকে তিনি পুলিশের অনেক সদস্যর কাছে হাঁস হারুন নামে পরিচিতি লাভ করেন। ঘুষ বাণিজ্য হারুন প্রকাশ্যে করতেন। কারণ আওয়ামী লীগের নেতাদের মদদপুষ্ট ছিলেন তিনি। ওসি শাহ হারুন অর রশীদ স্বীকার করেন তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিকের মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়েছিলেন। যে সংগঠনের ব্যানারে সভা হয়েছে, সেই সংগঠনের সভাপতি ছিলেন তিনি। সংগত কারণে তাকে থাকতে হয়েছে। তিনি বলেন, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জোর করে তাকে নাকি জালালাবাদ থানায় নিয়ে এসেছিলেন।

জালালাবাদ থানায় ছিলেন এক মুর্তিমান আতংক: ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীদের থানায় নিয়ে এসে অমানষিক নির্যাতন করতেন তিনি। রাজনৈতিক মামলার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন ওসি শাহ হারুন। তৎকালীন টুকেরবাজার ইউনিয়নের মেম্বার হাফিজুর রহমান। সে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ওসি হারুন মামলার ভয় দেখিয়ে খাসির জন্য ২০ হাজার টাকা নেন। টাকা কম দেওয়ায় সন্ধ্যায় হাফিজ মেম্বারকে পুলিশ পাঠিয়ে থানায় নিয়ে যায়। পরে রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তায় ১ লাখ টাকা দিয়ে তাকে থানা থেকে মুক্ত করে নেন। এর দুই দিন পর দোকান থেকে হাফিজ মেম্বারের কলেজ পড়ুয়া ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। এবার ডিমান্ড ২ লাখ। টাকা না দেয়ায় তাকে আর ছাড়া হয়নি। মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমান কানাডা প্রবাসী মাছুম। কট্টর বিএনপিকর্মী। ওসির কথামতো পুলিশ দিয়ে তাকে ধরে থানায় নিয়ে আশা হয়। ওসি হারুন ৩ লাখ ঘুষ দাবী করেন। না দিলে থানায় বিএনপি জামাতের যত মামলা আছে সব মামলায় ঢুকিয়ে দিবেন বলে হুমকি দেন।

মাছুম জানান, আমার কাছে টাকা নেই। ওসি হারুন বলেন, জায়গা বিক্রি করে ৫০ লাখ পেয়েছিস, কে বলেছে তোর কাছে টাকা নেই। এরপর চলতে থাকে নির্যাতন। থানার পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্ধা হওয়ায় মাছুমের সাথে আগেই অনেক পুলিশ সদস্যর পরিচয় ছিলো। এক পর্যায়ে ওসি হারুন নিজে মাছুমকে মাটিতে ফেলে বুকের উপর পা দিয়ে চাপ দিয়ে বলেন, টাকা দিবেন কিনা। না হলে বুঝতে পারছেন কি হবে ? এই নির্যাতন দেখে এক এএসআই নিজের কান্না থামাতে পারেননি। চোখ মুছতে মুছতে বলেছিলেন, স্যার আমরা এই এলাকায় থাকি। আমি জানি ও জায়গা বিক্রি করেনি। কোন টাকা নেই ওর কাছে কোথায় থেকে দিবে? আমরা ওই এলাকায় জমি কিনে বাসা বাড়ি করেছি। আর এভাবে নির্যাতন করলে আমরা মুখ দেখাবো কি করে। প্লিজ স্যার নির্যাতন বন্ধ করেন। তখন ওসি হারুন ওই এএসআইকে হুমকি দিয়ে বলেছেন বেশি কথা বললে তোর চাকরি খেয়ে নিবো।

অথচ ওসি ও এসআইয়ের বাড়ি সুনামগঞ্জের একই এলাকায়। কিন্তু ওসি হারুন টাকার জন্য উন্মাদ হয়ে যেতেন। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর ওসি রফিকুল ইসলাম শ্রাবনকে বদলী করে তার জায়গায় ১৭ আগস্ট পোষ্টিং দেওয়া হয় ওসি শাহ হারুন রশিদ কে। অথচ এই হারুনের বিভিন্ন কর্মকান্ডে অতিষ্ট্য হয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা স্বরুপ তার সার্ভিস বুক এ নাকি স্পষ্ট লেখা রয়েছে, ওসি হারুন আর কোন থানার ওসি হতে পারবেন না। এমনটি নিশ্চিত করেছে পুলিশের একাধিক সূত্র। যদিও নতুন এসপি এ বিষয়ে এখনো কিছু অবগত নয়। গোয়াইনঘাট থানায় যোগদান করার পর ওসি হারুন নিজের পুরাতন স্বভাবে ফিরে এসেছেন। সীমান্তের চোরাচালান, বালু মহালে চাঁদাবাজী, ফিটিং মামলা দিয়ে হয়রানী তদন্ত ছাড়া মামলা বাণিজ্য সবই চলছে সমান তালে। সম্প্রতি তিনি সীমান্তের চোরাচালানের লাইন ২০ লক্ষ টাকায় এক মাসের জন্য অলিখিত ইজারা দিয়েছেন ওসি হারুন।

গত সপ্তাহে ১৫০ বস্তা ভার্তি একটি ট্রাক আটক করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ পরে দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে ট্রাকটি ছেড়েদেন ওসি হারুন রশিদ। এবারের সীমান্তের জাফলং এলাকার জিরো পয়েন্ট লাইন লিজ দেওয়া হয়েছে চোরাকারবারী হযরত আলী ও ইবুর কাছে। গুচ্ছগ্রাম লালমাটি এলাকা লিজ দিয়েছেন রজব আলী, ফয়েজ, হাসেম, আজির উদ্দিন, সেলিম। সোনাটিলা এলাকা লিজ নিয়েছেন, সাদ্দাম ও করিমকে। সংগ্রাম পুরান পুঞ্জি লিজ দিয়েছেন পান্নাই, লামাপুঞ্জি থেকে হাজিপুর প্রতাপুর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা লিজ নিয়েছেন খোকা, খোকার ছেলে মাখাই, দুলাল, জামাল। ওসি হারুন রশিদ তিনি এখন পুরোদমে বিএনপি নেতা। ১১নং মধ্যে জাফলং লিজ নিয়েছেন কামাল, হোসেন, সোলেমান, সিরাজের ছেলে আরিফুল, মইন উদ্দিনের ছেলে মামুন, কামরুল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওসি হারুন রশিদ এক সময় তাহিরপুরে ছাত্রদলের রাজনীতি করলে চাকরি হয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে। এরপর থেকে নিজেই পুরোদস্তোর আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে উঠেন। পুলিশের চাকরি করলেও তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন দালাল। তিনি যেখানে গেছেন আওয়ামী লীগের দালালীকে নিজের পেশা হিসাবে বেঁছে নিয়েছেন, ওসির চেয়ারটি বানিয়েছেন আওয়ামী লীগের আকাম-কুকামের আস্তানা। সম্প্রতি তিনি গোয়াইনঘাটে এসিল্যান্ডের কথায় এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিনা তদন্তে মামলা নিয়ে আবার এসেছেন আলোচনায়।

সরকার বদলের সাথে সাথে সাবেক প্রবাসী কল্যানমন্ত্রীর ইমরান আহমদের ক্ষমতার যোগের অবসান হলেও ওসি এখনও ইমরানের সেই চাঁদাবাজ চক্রের হয়ে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের হয়ে বালু মহালে সরাসরি ওসি জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি নদী পথের চাঁদা থেকে প্রতিদিন ১৩ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন বলেও একটি সূত্র নিশ্চত করে। বিগত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে নিরীহ ছাত্রদের উপর আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনায় আহতরা মামলা দিতে থানায় গেলে ওসি মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করনে। ছাত্ররা মামলা করতে বারবার থানায় গেলেও ওসি আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে অনিহা প্রকাশ করে উল্টো আহত ছাত্রদের নানা রকম হুমকি দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে সিলেটে গতকাল একদিনে পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে বদলি: গত শনিবার সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে পাঁচ থানার ওসিদের বদলির এ আদেশ দেওয়া হয়। ওই আদেশে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত কার্যকর করার বিষয়টি জানানো হয়। পাঁচ থানার বদলি ওসিদের সিলেট জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান, বিয়ানীবাজারের ওসি অকিল উদ্দিন আহম্মদ, জৈন্তাপুর থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম, বিশ্বনাথ থানার ওসি রমাপ্রসাদ চক্রবর্তী ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর এই প্রথম একযোগে পাঁচটি থানার ওসি পদে বদলি করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি গোয়াইনঘাট ও গোলাপগঞ্জ থানার ওসিদের বদলি করা হয়। এদিকে পাঁচটি থানাতেই নতুন করে পাঁচজনকে ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামানকে জৈন্তাপুর থানায়, এনামুল হক চৌধুরীকে বিয়ানীবাজার থানায়, রুবেল মিয়াকে বিশ্বনাথ থানায়, উজায়ের আল মাহমুদকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ও মো.মনিরুজ্জামান খানকে ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জনস্বার্থে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। বদলির এ অফিস আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে পুলিশের বিশেষ একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সিলেট জেলার বিভিন্ন থানায় আরেকটি রদবদল হতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন