• ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

১ থানা থেকে ২ এসআই ৩ এএসআই ও ১ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত মে ৮, ২০২৪
১ থানা থেকে ২ এসআই ৩ এএসআই ও ১ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার!

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত মাদক মামলার আসামিকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশের আরও পাঁচ কর্মকর্তাসহ মোট ছয় জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে মাদক দিয়ে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবির ঘটনায় গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ ফাঁড়ির চার সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। ফলে পৃথক ঘটনায় গোদাগাড়ী থানা ও অধীনস্থ প্রেমতলী ফাঁড়ি থেকে মোট ১০ জনকে প্রত্যাহার করেছে পুলিশ প্রশাসন।

জানা গেছে, মাদকের সঙ্গে জড়িত ও আটক বাণিজ্যের অভিযোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানার ছয় পুলিশকে প্রত্যাহার করেছে। সোমবার (৬ মে) জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে পাঁচ কর্মকর্তা ও এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।

এই ছয় পুলিশ হলেন- থানার এসআই আকরামুজ্জামান, এসআই সত্যব্রত, এএসআই আব্দুল করিম, এএসআই মঞ্জুরুল ইসলাম, এএসআই রঞ্জু ও কনস্টেবল মাহবুব।খবর বাংলা ট্রিবিউন।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রবিবার বিকালে পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান গোদাগাড়ী মডেল থানা পরিদর্শনে এসে ওই ছয় পুলিশকে অপরাধ সম্পর্কে জানান। এরপর ফিরে গিয়ে তাদেরকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।

গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, ছয় জন পুলিশকে রাতেই থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া ছয় পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেন। অনেককে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও আছে।

জানা গেছে, রবিবার সকালের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার কোদালকাটি গ্রামের বাদেফুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সামাদ নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে তিন লাখ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন এসআই আকরামুজ্জামান। আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

অন্যদিকে, এক কিশোরকে তুলে নিয়ে মাদক দিয়ে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবির ঘটনায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ ফাঁড়ির চার সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল ইসলাম ও মিলন হোসেন।

অন্যদিকে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে মাদক দিয়ে চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবির ঘটনায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ ফাঁড়ির চার সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন- প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল ইসলাম ও মিলন হোসেন।

রবিবার বিকালে তাদের প্রত্যাহারের আদেশ দেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের গোগ্রাম থেকে কিশোর সোহানুর রহমান সোহানকে (২২) সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যায় প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের চার পুলিশ সদস্য। সোহান গোগ্রাম এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মর্তুজা আলীর ছেলে। অভিযোগ অনুযায়ী, এ পুলিশ দলের নেতৃত্বে ছিলেন এসআই রেজাউল করিম। তারা সোহানকে গোগ্রাম থেকে তুলে প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পেছনে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। আইপিএল জুয়ায় বিপুল টাকা কামানোর অভিযোগ এনে ছেলেকে ছাড়াতে সোহানের বাবার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা না দিলে হেরোইনের মামলা দিয়ে চালান করার ভয় দেখানো হয়। সোহানের হাতে পরানো হয় হাতকড়া।

এদিকে, পুলিশ দলের সদস্যরা সোহানকে পদ্মার ধারে আটকে রেখে এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম টাকা নিতে গোগ্রাম চলে যান সোহানের বাবার কাছে। এ সময় গ্রামবাসী একজোট হয়ে তাকে আটক করে ওই কিশোরকে ফেরত দেওয়ার দাবি করেন। খবর পেয়ে বাকি তিন পুলিশ সদস্য রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে সোহানকে বসন্তপুরের একটি ফাঁকা সড়কে ছেড়ে দিয়ে যায়। সোহান তার পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বললে আটক পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ছাড়া পাওয়ার পর সোহান জানায়, তাকে ছেড়ে দেওয়ার আগে পুলিশ সদস্যরা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বিকাশের পিন দিয়ে কয়েক হাজার টাকা তুলে নেন। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করেন গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় রবিবার রাতে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের চার পুলিশকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, গোদাগাড়ী থানায় পোস্টিং পাওয়ার পর থেকে এসব পুলিশ সদস্য ধরা ছাড়া বাণিজ্য করে আসছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান জানান, শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকায় সংশ্লিষ্ট পুলিশদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন