• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

তিনি আসলে কে? ইউটিউবার, সাংবাদিক নাকি প্রশাসন!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত নভেম্বর ২, ২০২৪
তিনি আসলে কে? ইউটিউবার, সাংবাদিক নাকি প্রশাসন!

নিজস্ব প্রতিবেদক:- পেশায় ছিলেন অপহরনকারি ও চাদাবাজ, নিজের কু-কর্ম ঢাকতে মা-মনি কিন্ডার গার্ডেনের কথিত আরেক সাংবাদিক ডালিমের মাধ্যনে হয়ে যান তথাকথিত ইউটিউবার সাথে জুড়ে দেন নামের আগে সাংবাদিক।

শুধু কি তাই, নিজেকে পরিচয় দেন “স্যার” হিসেবে নিজের নাম পাল্টিয়ে হয়ে যান মামুন চৌধুরী স্যার! তবে কিসের স্যার কোথাকার “স্যার” তার নেই কোন তথ্য। বিগত আওয়ামিলীগের আমলে দালালি আর চাটুকারিতাই ছিল তার মুল পুজি। বর্তমানে তিনি নিজে নিজে ইউটিউব চ্যানেল খুলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে করেন মানুষদের হয়রানি। অথচ তিনি চাঁদাবাজি ও অপহরন মানলায় গ্রেফতার হয়ে জেল কেটেছেন।

গ্রেফতারের সময় নাম বলেছিলেন মামুনুর রশীদ মামুন। জেল থেকে বের হয়ে হয়ে যান মামুন চৌধুরী!!! তবে সুত্র থেকে জানা যায়, তার নামের কলংক ঢাকতে নতুন নামে আবির্ভূত হয়েছেন।

তিনি আর কেউ নন, আধুনিক টিভি নামের তথাকথিত এক ইউটিউবার মামুন চৌধুরী। সিলেট কানাইঘাট থানার জিঙ্গাবাড়ি দলইমাটি এলাকার মৃত ফরমুজ আলীর ছেলে। তিনি ইউটিউবার হয়ে সমাজের সবার কাছে পরিচয় দেন সাংবাদিক হিসেবে!!

মুলত তার ব্যবসা হল ইউটিউব থেকে আয় করা, এতে তিনি সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে ব্যবসা করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। তাকে খবর দেন আর না দেন কোন ঘটনাকে রটিয়ে কল্প কাহিনী তৈরী করাই তার কাজ।

এই মামুনুর রশীদ মামুন কথিত মামুন চোধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তিনি ২০১৯ সালে ৩০শে নভেম্বর অপহরন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে সিলেট কোতয়ালী থানায় দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার হন (মামলা নং- ২৮, ধারা ৩৮৫/৩২৩, ৫০৬ এর ২, ৩৪ দ.বি) ঐ সময় মামুনের বিরুদ্ধে সিলেট শাহপরান (রহ.) থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা হয় (মামলা নং-১৯২)।

কোতয়ালী মামলা সুত্রে জানা যায়, নগরীর হাজী নওয়াব আলী মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত একটি ফিজিও থেরাপি সেন্টারের পরিচালকের নিকট ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক মামুন প্রথমে চাঁদা দাবি করে। পরবর্তিতে চাঁদা না পেয়ে ওই পরিচালককে অপহরণের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে মামুনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে মামুন অপহরন ও চাঁদাবাজির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন বলে ঐ মামলা থেকে জানা যায়।

মামলার বিবরনে উল্ল্যেখ করা হয় মামুনের নিজস্ব একটি গ্রুপ ছিল আর সেটার নাম ছিল “মামুন গ্রুপ”। স্হানীয় কয়েকটি সুত্র থেকে জানা যায়, মামুন গ্রুপের কাজই ছিল ছিনতাই চাঁদাবাজি আর অপহরন করা।

আরেকটি সুত্র থেকে জানা যায়, মামুন জেল থেকে বের হয়ে শুরু করেন নতুন ধান্দা। সাংবাদিক হওয়ার স্বপ্নে তিনি নিজে তৈরী করেন ইউটিউব চ্যানেল আর সেটার নাম দেন “আধুনিক টিভি”। এই আধুনিক টিভি কাজ হল সবার আগে ঘটনাস্হলে পৌছে মনগড়া সব তথ্য লোকদের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে মুল ঘটনাকে আড়াল করা।

আর সে জন্য তিনি বিভিন্ন সময় হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। তবে তিনি আওয়ামিলীগের খাটি দালাল হওয়ার কারনে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি।

দীর্ঘ সময় ধরে তিনি আওয়ামিলীগের দালালি করে নিেেজর আখের গুছিয়ে নিয়ে এখন মানুষদেরকে হয়রানি করার নতুন ধান্দা শুরু করেছেন। মানুষের তথ্য লুকিয়ে তিনি তারমত করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফায়দা লুটেন।

তেমনি এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর। সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহরের একজন সিম বিক্রেতাকে অযথা হয়রানির মাধ্যমে। স্হানীয় কয়েকজন জানান,, ঐ যুবতী উপশহরে দীর্ঘদিন থেকে সিম বিক্রি করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মামুন ও তার বাহিনী গিয়ে যুবতীকে অনৈতিক কাজে জড়িত রয়েছেন বলে লাঞ্চিত করা শুরু করেন। এবং সে ঘটনা তিনি লাইভও করেন।

ঐ সময় যুবতী বার বার বলছিলেন আমি দোষ করে থাকলে আপনারা পুলিশ খবর দেন। কেন আপনারা আমার মান সম্মানে আঘাত করছেন? এতে মামুন ও তার বাহিনী কোন উত্তর না দিয়ে বার বার যুবতীকে খারাপ মেয়ে বলে প্রমান করার অপচেষ্টা চালিয়ে যান।

এক পর্যায়ে তিনি তারই শেখানো কয়েকজন দালাল দিয়ে যুবতীর বিপক্ষে বক্তব্য দেয়ার অপকৌশল চালান। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মামুন ও তার বাহিনী যুবতীকে খারাপ তকমা লাগানোর অপচেষ্টা করেন। পরিস্হিতি ঘোলাটে দেখে মামুন তার লাইভ কেটে দ্রুত সটকে পড়েন।

তবে, ঐ সময় ঘটনাস্হলে থাকা কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, লাঞ্চিত হওয়া যুবতীকে আমরা চিনি, সে এখানে প্রতিদিন বসে সিম বিক্রি করে। কিন্তু আধুনিক টিভির দুজন সাংবাদিক দিয়ে অন্য একটি পক্ষ মেয়েকে খারাপ বানানোর অপচেষ্টা কয়েকদিন ধরে করে আসছে। আজ ওরা যুবতীর মান সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে।

উপস্হিত আরো কয়েকজন জানান, যুবতী খারাপ কি ভাল সেটা দেখার দায়ীত্ব প্রশাসনের। উনাকে কে দায়ীত্ব দিয়েছে জনসম্মুক্ষে একজন যুবতীকে টানা হেচড়া করার? উপশহর এলাকার জনৈক এক ব্যবসায়ী বলেন, উনি ত সাংবাদিক না, ইউটিউবার তাহলে উনি কেন একজন।

যুবতীর গায়ে হাত দিয়ে টানাটানি এমন কি হুমকি দিবে?

শিববাড়ি এলাকার কলেজের শিক্ষার্থী জানান, ইউটিউবাররা সাংবাদিক পরিচয় দেয়াটা অন্যায়, কারন সাংবাদিকতা এক জিনিষ আর ইউটিউব দিয়ে আয় করা আরেক জিনিষ। তিনি এসব ইউটিউবারদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য দাবী জানান।

ঘটনার সময় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেররতন এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, আমি সাংবাদিক পরিচয় দেয়া ঐ ব্যাক্তির আচরন দেখেছি। এখানে সে আসছিল এ মেয়েকে জিম্মি করে কোন অঘটন ঘটনোর জন্য। কারন তার আচরন কোন সাংবাদিকতা পেশায় পড়েনা।

ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে মামুন ও তার বাহিনী বার বার যুবতীকে খারাপ প্রমান করার জন্য লোকদের চাপ দিচ্ছে। মুলত ঐ যুবতী সিম কোম্পানীর লোক বলে জানা গেছে।

সে বার বার মামুনের কাছে কৈফিয়ত চেয়ে বলেছে ভাই আমার বিয়ে হয় নাই, আপনার এ ভিডিওর কারনে আমার পরিবারের ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু দালাল মামুন কিছুতেই কথা না শুনে তার বাহিনী কে যুবতীর পিছনে লেলিয়ে দিয়েছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, মামুনের সাথে ঐ সময় ঘটনাস্হলে উপস্হিত ছিল নাম না জানা কয়েকজন আওয়ামিলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা। মামুন ও তার বাহিনী নতুন করে ফের শুরু করেছে পুর্বের ন্যায় চাদাবাজি।

জানা যায়, মামুন নিজেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে গ্রাজুয়েট দাবী করলেও সে ইন্টারমিডিয়েট পাস। মদনমোহনে কলেজে স্নাতকে ভর্তি হলেও পরে লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়। এই যোগ্যতা নিয়েই সে এখন স্যার টাইটেল লাগিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করে। বর্তমানে আওয়ামিলীগের দালালি ছেড়ে নিজেকে বাচাতে বিএনপির গুনগান গেয়ে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে উপশহর থেকে অনৈতিককাজে জড়িত যুবতী এরখম কোন অভিযোগ পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছ এমন কোন অভিযোগ আসেনি! তাহলে মামুন কিসের বিত্তিতে কেনই বা একজন যুবতীকে অনৈতিককাজে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করলেন এমন প্রশ্ন এখন সিলেটবাসীর মনে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন