নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নগরীতে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফাবিহা নামের এক মহিলার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে কতোয়ালি মডেল থানায় ফাবিহা কাদিরের নামে প্রতারণার শিকার বিভিন্ন লোকজন জিডি করছেন। বিদেশে পাঠানোর নামে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে ফাবিহা নিজে এখন প্রায় ১০ কোটি টাকার ঋণগ্রস্থ।
ফাবিহা সিলেট শহরের বিভিন্ন লোকদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৭৫ লক্ষাধিক টাকার এমন নানা এমাউন্ট হাতিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে পাওনাদারদের পাওনা টাকার পরিমান প্রায় ১০ কোটি।
নগরের হাওয়াপাড়ায় ফাবিহার উইনার এসোসিয়েট নামের প্রতিষ্ঠানে প্রায় প্রতিদিন প্রতারণার শিকার লোকজন তাদের দেওয়া টাকা ফিরিয়ে নিতে এসে জড়ো হচ্ছেন। টাকা ফেরত চাইতে আসা লোকজন উত্তেজিত অনেক সময় বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন আবার পাওনা টাকা চাইতে এসে অনেকেই হচ্ছেন নির্যাতিত। এসব কান্ড যেনো এখন নিত্তনৈমত্তিক।
জানা যায়, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের নেতৃত্বে সহজ-সরল লোকদের টার্গেট করে প্রতারণা শুরু করে ফাবিহা। এক পর্যায়ে ভয়াবহ রুপ ধারণ করা ফাবিহা হয়ে উঠেন সিলেটের সবচেয়ে বড় প্রতারক। প্রতারণার শিকার লোকজন পাওনা টাকা চাইতে এলেই রাহেল সিরাজের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতো।
একপর্যায়ে প্রতারণার শিকার লোকজন নিরুপায় হয়ে ফাবিহার বিরুদ্ধে এখন সিলেট বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের কাছেও ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার আসায় দারস্থ হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় লন্ডন প্রবাসী আমির উদ্দিন উইনার ইনিস্টিটিউটে আসেন তখন তার সাথে আসেন তার আত্মীয় লোকমান তালুকদার , নেওয়ার আহমেদ , বাবনা খান ও নিয়াজ আহমেদ। আমির উদ্দিনের স্বজনদের বিদেশ পাঠানোর নাম প্রায় তিনবছর আগে ২৮ লক্ষ টাকা নিয়েছিলো প্রতারক ফাবিহা। শেষে আর তাকে বিদেশ আর পাঠাতে পারেনি। পাওনা টাকাও দেয়নি। টাকা চাইতে গেলেই টালবাহানা করে ডেট নেয়। অনেক বিচার বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার ৬ লক্ষ দেয়ার দিন ধার্য হয়। ধার্যকৃত দিনে পাওনা টাকার ৬ লাখ টাকা আনতে যান আমির উদ্দিন।
যথারীতি এদিন আমির উদ্দিনের সাথে টালবাহানা শুরু করে। টাকা দিতে অপরাগতা জানায়। শুরু হয় বচসা কথা কাটাকাটি। এ সময় আগে থেকে নিয়ে আসা রাহেল সিরাজ অনুসারী ক্যাডাররা ফাবিহা কাদিরের পক্ষ নিয়ে আমির উদ্দিন ও তার স্বজনদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
বিষয়টি মীমাংসা করতে ছুটে আসেন জেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্না। তিনি এসে দুই পক্ষকেই নিবৃত করেন। এবং ফাবিহা কাদির কেন পাওনাদারের টাকা দিচ্ছেন না সে বিষয়ে জানতে চান। এতে ফাবিহা ক্ষিপ্ত হয়ে পুনরায় সবার সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তার লোকদের লেলিয়ে দেন।
এই ঘটনা নিয়ে কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছেন প্রবাসী আমির উদ্দিন। জিডি নং – ১৬০৬ তাং – ১৯۔১০۔২৪ তিনি এই বিষয়টি পুরো দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে খুব শিগ্রীই সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানান।
এদিকে বৃহস্পতিবারের ঘটনা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন জেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্না। আমি ঘটনা মীমাংসা করতে গিয়েছি। সেখানে কারো সাথে মারামারি গায়ে হাত তোলার মত ঘটনা ঘটেনি। উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে এমন অসত্য সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে সিলেটের ছাত্ররাজনীতির অহংকার জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জেলা শাখার সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী মুন্নাকে নিয়ে অপপ্রচারের বিস্মিত ও উদ্ভেগ প্রকাশ করেছে সিলেটের বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জেলা ছাত্রদলের যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল সামাদ লস্কর মুনিম বলেন – ফাবিহা কাদিরের নামে প্রতারক মহিলা একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছে তা সিলেটবাসী বুঝে গেছে। অসংখ্য মানুষের কোটিকোটি টাকা আত্মসাতকারী এই মহিলা পাওনাদারের টাকা দিতে টালবাহানা করছে এবং তার প্রতারণা ঢাকতে বিএনপির ক্লিন ইমেজ নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। অবিলম্বে এই প্রতারক মহিলাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে মানুষের পাওনা টাকা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।
এই বিষয়ে ফাবিহা কাদিরের বক্তব্য জানতে তার সাথে যোগাযোগ করলে সে মোবাইল রিসিভ করেনি।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন