বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিলেটে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক এটিএম তুরাব নিহতের ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, সহকারী পুলিশ কমিশনার সাদেক কাউসার দস্তগীরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেছে তার পরিবার।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২টায় নিহত তুরাবের ভাই আবুল হোসেন মোহাম্মদ আজরফ জাবুর বাদী হয়ে সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মোমেনের আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ২৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই শুক্রবার জুমার নামাজের পর সিলেট কালেক্টরেট জামে মসজিদ এলাকায় বিএনপি ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক তুরাব। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান। এর আগে হত্যাকা-ের পাঁচ দিন পর তুরাবের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রায় ১০ জন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তবে তাতে কারও নাম উল্লেখ ছিল না।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী এমরান আহমদ চৌধুরী জানান, আদালত এজাহারের গুরুত্ব অনুধাবন করে এফআইআর হিসেবে গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে জমা দেওয়া এজাহার থেকে জানা যায়, ১৯ জুলাই দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকার কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান করছিলেন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। এক পর্যায়ে বিএনপি মিছিল শুরু করলে তুরাব মিছিলের পেছনে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে অবস্থান নেন। মিছিলটি নগরের পুরান লেন গলির মুখে পৌঁছালে সশস্ত্র পুলিশ বিপরীত দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় হঠাৎ লাগাতার গুলিবর্ষণে তুরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন অন্য সহকর্মী ও পথচারীরা তুরাবকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় এবং তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নগরের সোবহানীঘাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে তিনি মারা যান।
আদালতে জমা দেওয়া এজাহার অনুসারে সাংবাদিক এটিএম তুরাব হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সহকারী পুলিশ কমিশনার সাদেক কাউসার দস্তগীর (৪০), সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের উপ-পুলিশ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ (৫০), সহকারী পুলিশ কমিশনার মিজানুর রহমান, বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, কোতোয়ালি মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফজলুর রহমান, কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী রিপন সরকার, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আপ্তাব উদ্দিন, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি পীযুষ কান্তি দে, সিলেট জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক সাজলু লস্কর, সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ২নং ওয়ার্ড সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল দাস অনিক, আওয়ামী লীগ নেতা শিবলু আহমেদ (মো. রুহুল আমিন), কোতোয়ালি মডেল থানার কনস্টেবল সেলিম মিয়া, আজহার, ফিরোজ, উজ্জলসহ অজ্ঞাতনামা ২৫০জন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন