সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে খুলনায় তিন দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পৃথক পৃথক স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।এতে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং পুলিশসহ অর্ধশত আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেলে খুলনার জিরো পয়েন্ট, গল্লামারী মোড় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় সুমন কুমার ঘরামী নামে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে গল্লামারী কাঁচাবাজারে সংঘর্ষে নিহত হন তিনি।
সংঘর্ষ চলাকালে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি জানান, সংঘর্ষের সময় সুমন মিধা নামে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। পুলিশ লাইন্সে কর্মরত ছিলেন তিনি। পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। অথচ আমার এক ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। অন্তত ৩০ জন পুলিশ আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থী, পথচারীসহ ও পুলিশের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
ছাত্র-জনতার গণমিছিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। অপরদিকে ছাত্ররাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিকেল থেকে সংঘর্ষের ঘটনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সিরাজুল ইসলাম (৬০), শাহরিয়ার নীরব (২৪), আবির (২৪), মিজান (৪৮), ফাইয়াস (২৩), রবিনা (৩২), নাবিল (২৪), মিজান (৩২), সৌরভ (২৩), শেখ তানিক (২২), মিতু (২১), তানিয়া (১৯), রাবেয়া সুলতানা (২৩) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে রাবার বুলেট ও শটগানের ছররা গুলি লেগেছে।
শুক্রবার (০২ আগস্ট) দুপুর ২টায় খুলনা নিউমার্কেট এলাকা থেকে বৃষ্টি ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা গণমিছিল শুরু করে। মিছিলটি ৩টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে গল্লামারী মোড়ে পৌঁছায়। সেখানে বিপরীত দিক জিরো পয়েন্টের দিক থেকে পুলিশ মিছিল লক্ষ করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে পুলিশ ধীরে ধীরে পিছু হটে যায়। পরে তারা জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেয়। বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শিববাড়ি মোড়ের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় গল্লামারী মোড়ে আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষ চলাকালে নগরীর গল্লমারী এলাকায় একটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, শুক্রবার (০২ আগস্ট) দুপুর ২টায় খুলনা নিউমার্কেট এলাকা থেকে বৃষ্টি ও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা গণমিছিল শুরু করে। মিছিলটি ৩টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে গল্লামারী মোড়ে পৌঁছায়। সেখান থেকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এতে কমপক্ষে ২০-২৫ জন আহত হন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন