নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়েছেন চিকিৎসাধীন এক নারী। ২৫শে জানুয়ারি রাতে ওসমানী মেডিকেলে অহত অবস্তায় রফিকুন নেছা (৬৫) নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ভর্তি করা হয়।
পরে দৈনিক জৈন্তাবার্তা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মো আবুল হোসেন সেই নারীর চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করে আসছেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। পরে ওই নারীর একমাত্র ছেলে তার মাকে দেখাশোনা করা জন্য হাসপাতালে আসেন। ওই নারীর আবদুল মজিদ (৪৫) নামের এক ছেলে তার মায়ের কাছে থাকেন এবং মায়ের সেবা করেন।
কিন্তু আর্তিক অস্বচ্ছলতার কারণে মায়ের চিকিৎসা করানো মজিদের পক্ষে সম্বভ হয়নি। পরে সাংবাদিক আবুল হোসেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া এর সহযোগিতা নেন। পরবর্তীতে পরিচালক ওই নারীর হাতের অপারেশন করানোর জন্য সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন। কিন্তু একমাস হাসপাতালের ২৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা সত্বেও ওই নারীর হাতের অস্ত্রোপচার হয়নি।
এক পর্যায়ে গত শনিবার ২৪ ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে ওই নারীকে আর খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর সাথে সাথে সাংবাদিক আবুল হোসেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে বিষয়টি অবগত করেন এবং সকল স্থানে খোঁজাখুজি শুরু করেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন রফিকুন বেগম গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের মাতুরতল বাজার এলাকার মনাইকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের মেয়ে। পূর্বে ২৬ নং ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক হাতের অস্ত্রোপচার করার জন্য ১৫ হাজার টাকা খরচ লাগলে বলে ওই নারীর ছেলেকে বলেন এবং ছেলে সেই টাকা সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তার মাকে আর সুস্থ্য করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারেননি আব্দুল মজিদ।
এদিকে গত ২৫শে জানুয়ারি সকালে জৈন্তাপুর উপজেলার ২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কেন্দ্রী গ্রামে মিনাটিলা এলাকায় ভারতীয় সীমান্তের নিকট হতে অসুস্হ অবস্হায় রফিকুন বেগমকে উদ্ধার করে মিনাটিলা বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে স্হানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হালিমের নিকট বৃদ্ধাকে হস্তান্তর করে বিজিবি। সে সময় বৃদ্ধা কোন নাম পরিচয় বলতে পারে নি। শুধু গোয়াইনঘাট কথাটুকু উচ্চারণ করতে পেরেছিলো।
পরে ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম বিষয়টি নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো সাজেদুল ইসলামকে দুপুর ২ ঘটিকায় অবহিত করলে তিনি সর্বপ্রথম বৃদ্ধাকে সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরপর বিকেল ৪ টায় ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিওমেক হাসপাতালে রেফার্ড করতে বললে জৈন্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কে আজাদ ভুঁইয়া ও ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম জৈন্তাপুর রোগী কল্যাণ সমিতির আর্থিক সহায়তায় সিলেটে প্রেরণ করেন। এরপর সমাজসেবার ওই কর্মকর্তা এই নারীর আর কোন খোঁজ খবর নেননি।
জৈন্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এ কে আজাদ ভুঁইয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃদ্ধার স্বজনদের সন্ধান চেয়ে ছবি পোস্ট করলে সেটা দৃষ্টিনজরে আসে দৈনিক জৈন্তাবার্তা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আবুল হোসেনের। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে দৈনিক জৈন্তাবার্তা পত্রিকার জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বাবুর সহায়তায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যদের নিকট যোগাযোগ করে সিওমেক হাসপাতালে সন্ধান চালিয়ে বৃদ্ধা রফিকুন বেগমের খোঁজ পান।
এ বিষয়ে সাংবাদিক আবুল হোসেন জানান কয়েকদিন পূর্বে তার নিজ গ্রামের বাড়ী থেকে রফিকুন বেগমের নিঁখোজ হওয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন। শুক্রবার সকালে ফেইসবুকে ছবি দেখে তিনি হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং নিঁখোজ রফিকুল বেগমের স্বজনদের খবর দেন। তিনি বলেন জৈন্তাপুর থেকে সিওমেক হাসপাতালে রোগীকে রেখে আর কেউ খোঁজ নেয় নি। তিনি দীর্ঘ তিনঘণ্টা অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে খোঁজাখুজির পর এক সময় রফিকুন বেগমের সন্ধান পান।
শেষ পর্যন্ত ওই নারী বিনা চিকিৎসায় একমাস পর হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছেন। এমনকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই নারী নিখোঁজের বিষয়ে কোন প্রকার দায় নিচ্ছেন না। কোন হৃদয়বান ব্যক্তি ওই নারীর সন্ধান পেয়ে থাকেন তাহলে নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো ০১৭৪৮৫৯১৪১৫।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন