• ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

শাবিতে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যানবাহন!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৫, ২০২৪
শাবিতে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার যানবাহন!

পর্যাপ্ত পার্কিং সুবিধা না থাকায় গ্যারেজের বাইরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন। গ্যারেজে জায়গার সংকটে রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে যত্রতত্র রাখা এ পরিবহনগুলো। তাছাড়া শীতে কুয়াশায় সারারাত বাইরে থেকে মরিচা পড়ছে বাসগুলোতে। ফলে দিন দিন কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে বাসগুলো।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে বাস পার্কিংয়ের জন্য পর্যাপ্ত খালি জায়গা না থাকায় বাহিরে বিভিন্ন জায়গায় এলোমেলোভাবে গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। ফুডকোর্টের সামনে, গোল চত্বরের পাশে, প্রশাসনিক ভবন- ১ এর সামনে, গ্যারেজের সামনের জায়গা সহ বিভিন্ন জায়গায় পার্কিং করে রাখা হয় উপ-উপাচার্যের গাড়ি, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া বাসসহ বিভিন্ন পরিবহনসমূহ। এসব বাস প্রচন্ড রোদে কিংবা ভারী বৃষ্টিপাতেও সেখান থেকে সরানো হয় না। ফলে বাসের ইঞ্জিন, বডিসহ বিভিন্ন কলকব্জা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে গ্যারেজে জায়গা সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি এম্বুলেন্সও সার্বক্ষণিক রাখা হয় খোলা আকাশের নিচে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতায় প্রতিনিয়ত ব্যবহৃত হয় এই এম্বুলেন্স দুটি। খোলা আকাশের নিচে থাকায় নষ্ট হচ্ছে এ গাড়িগুলোর কার্যক্ষমতাও।

জানা যায়,বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজে পরিবহন ধারণ ক্ষমতার চেয়ে পরিবহন রয়েছে প্রায় তিনগুণ। নতুন নির্মিত একটিসহ মোট দুটি গ্যারেজে বড় পরিবহন ধারণ ক্ষমতা মোট ১৪টি। কিন্তু এর বাইরে বাস, মিনিবাস,মাইক্রো,এম্বুলেন্সসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট পরিবহনের সংখ্যা ৩৮ টি।

এদিকে নতুন নির্মিত গ্যারেজের পরিচর্যা না থাকা এবং তার সামনের জায়গা আগাছায় পূূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সেখানে বাস পার্কিং করার সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। যার ফলে সে গ্যারেজে বাস পার্কিং করার সুযোগ নষ্ট হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দশ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র ১৩ টি বাস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি বাস নষ্ট হওয়ায় অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাকি বাস শহরের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। বাইরে থাকায় কার্যক্ষমতা কমছে পরিবহনগুলোর। দেখা যায় প্রায়ই রাস্তায় গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ পরিবহনগুলো বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুক্ষিণ হচ্ছে। দেখা যায় একসময়ে কেনা বাসগুলোর মধ্যে যে বাসগুলো গ্যারেজে রাখা হচ্ছে সেগুলো দীর্ঘদিন পরও প্রায় নতুনের মতোই আছে কিন্তু যেগুলো বাইরে রাখা হচ্ছে সেগুলো জং ধরে প্রায় পুরাতনের মতো হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি দেখেছি এবং এ নিয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি। গাড়িগুলোকে কিভাবে ভালো রাখা যায় সে বিষয়ে আমরা বসে কথা বলবো। আমরা চেষ্টা করবো কোন একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়ে গ্যারেজের আশেপাশে কোন শেড করে বাসগুলোকে সেখানে রাখা যায় কিনা। এটা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। আমরা আশা করছি খুব দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিষয়টি খেয়াল করেছি। নতুন অনেক গাড়ি আমাদের পরিবহন পুলে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু গাড়িগুলো ঠিকমতো পার্কিং করতে পারছি না সেটা আমাদেরও খারাপ লাগে। গাড়ি রাখার জন্য নতুন একটা গ্যারেজ করেছি আমরা। আমাদের কিছু অর্থ সংকটও রয়েছে যেজন্য আমরা সেটা করতে পারছি না। তবে আগামী দু’এক বছরের মধ্যে আমাদের আরো নতুন হল হবে তখন গাড়ির প্রয়োজনীয়তাও আরো কমে আসবে। তখন গাড়িগুলো যেন সুন্দরভাবে পার্কিং করতে পারি সে ব্যবস্থা আমরা করবো।

তিনি বলেন, আমাদের জায়গার কিছু অভাব রয়েছে। তাছাড়া সরকারের কৃচ্ছ্রতা সাধনের জন্য আমাদের অর্থেরও কিছু সমস্যা আছে। আমাদের অন্যান্য কাজ প্রায় হয়ে গেছে বলা যায়। সে কাজগুলো শেষ হলে আমরা এদিকে নজর দিবো।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •