নিজস্ব প্রতিবেদক:: সীমান্ত জনপদ গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা গুলোতে মাদক ব্যবসায়ী ও ভারতীয় চোরাকারবারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিনি বৃদ্ধি পাচ্ছে চাঁদাবাজদের সংখ্যা।
তেমনি এক চাঁদাবাজের ফিরিস্তি এসেছে ক্রাইম সিলেট’র অনুসন্দানে। নাম তার শ্যাম কালা। তার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার হাতিরখাল গ্রামে। এক সময় তার পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরাতো।
কিন্তু বর্তমানে সেই ছেলে ও তার পরিবার আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। আলাদিনের চেরাগ পেয়েছে পুলিশের আশীর্বাদপুষ্ট অবৈধ আয়ের হাতিয়ার শ্যাম কালা।
অল্প দিনেই গড়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। জেলা ডিবির সদ্য বিদায়ী ওসি রেফায়েত উল্লাহ এর আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই শুরু করেছিলেন চোরাকারবারীদের কাছ থেকে অবৈধ আদায়ের কাজ।
এরপর দায়িত্ব নেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের। তৎকালীন গোয়াইনঘাট থানার এসআই জহির তাকে এই দায়িত্ব দেন। শুরু হয় শ্যাম কালার অবৈধ চাঁদাবাজি।
উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পান্তুমাই সীমান্ত, লাখাট, লক্ষণছড়া, কুলুমছড়াসহ সকল এলাকা দিয়ে দেশে প্রতিদিন রাতে দেশে প্রবেশ করছে গরু, মহিষ, চিনি, পিয়াইজ ও মাদক।
এই সকল চোরকারবারীদের কাছ থেকে দৈনিক লাখ লাখ টাকা আদায় হয়। আদায়কৃত টাকা তিনটি ভাগ হয়। থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ এবং বাকিটি শ্যাম কালার পকেটে। বর্তমানে উনিয়নে টাকা উত্তোলনের জন্য রয়েছে ২০ জনের একটি টিম। এই টিমের মূলহোতা হলেন শ্যাম কালা। চোরাকারবারীদের লাইনম্যান হিসাবে সর্বমহলে পরিচিতি পেয়েছে শ্যাম কালা। সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
অভিযোগ প্রকাশ, লাইনম্যান শ্যাম কালা চোরাই পথে আসা এসব ভারতীয় পণ্য থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার নামে চাঁদাবাজি করে সাপ্তাহে কয়েক লাখ টাকা গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের নিকট তুলে দেন।
এমনকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এই চাঁদাবাজির একটি অংশ ১ হাজার কিংবা ৫শ’ করে বখরা হিসেবে সাপ্তাহে স্থানীয় কিছু ভূয়া বখরাবাজ সাংবাদিকদের বিকাশ পাঠিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখেন। ঠিক তেমনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের এক মফস্বল সাংবাদিককে একাধিকবার লাইনম্যান শ্যাম কালা বিকাশে বখরা হিসেবে কিছু টাকা পাঠান।
তবে ওই সাংবাদিকের দাবি তিনি তথ্য উদঘাটনের স্বার্থে লাইনম্যান কালার পাঠানো বখরা রিসিভ করেছেন।
স্থানীয় সুত্রমতে- পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে বেড়ে ওঠা শ্যাম কালা এ কসময় ছিলেন একজন সাধারণ পাথর শ্রমিক। বিগত সময়ে রাতের আঁধারে পাথর চুরি করতে গিয়ে পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে পালিয়ে আসা শ্যাম কালা আজ পুলিশের নামেই চাঁদাবাজি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে কাটাচ্ছেন রাজকীয় বিলাস জীবন।
এক সময় তার আয়ের উৎস ছিলো দিনাতিপাত আর পুলিশের লাইনম্যান হিসেবে চাঁদাবাজি করে বনে গেছেন প্রাইভেট নোহাগাড়ি, দামি মোটরসাইকেল সহ বহু সম্পদের মালিক। এছাড়াও চাঁদাবাজির অবৈধ কালো টাকার জুড়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জন্য রয়েছে একাধিক ভাড়াটে লাঠিয়াল বাহিনী।
চাঁদাবাজ পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার এমন কর্মকান্ডে মনে হয় সে কোন মন্ত্রীর পুত্র।
সুত্র বলছে- পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালা অতীতে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে চোরাচালানের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে সে তার ‘সাম কালাড’ নামের ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে প্রতিনিয়ত আওয়ামিলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামের পোস্ট শেয়ার করে নিজেকে হাইব্রিড আওয়ামিলীগ নেতা হিসেবে দাবী করেন।
এ প্রতিবেদন ছাড়াও পূর্বে পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার বিরুদ্ধে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় দৈনিক সহ সিলেটের একাধিক অনলাইন পত্রিকায় বহু শিরোনাম ধারাবাহিকতায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে একশন নিতে হিমশিম খাচ্ছেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ।
এব্যাপারে জানতে গোয়ানঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ক্রাইম সিলেটকে বলেন, আমি ছুটিতে আছি।
পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
আগামী প্রতিবেদনে থাকছে রুস্তুমপুর-বিছনাকান্দি ইউনিয়নের সংবাদ——-
সকল লাইনম্যানদের নেতৃত্বদানকারী উপজেলার এক প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান——
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন