হবিগঞ্জের পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী চাঁদনী আক্তারের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও জাল নথি সৃজন করে তা দাপ্তরিক প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করে ঘুষ নেয়ার অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুর রহমান হবিগঞ্জের স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) হাসানুল ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার এর আগে ছাতকের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগে বদলি হন। তিনি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হাতেমখা কলাবাগান গ্রামের মৃত সেলিম সরদারের ছেলে। চাঁদনী আক্তার হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এলাকার শাকিল চৌধুরীর স্ত্রী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রফিক উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড, হবিগঞ্জ থেকে থ্রি ফেইজ লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করছিলেন। গত বছরের ৩১ মে তার প্রিপেইড মিটার রিচার্জ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উপ- সহকারী প্রকৌশলী চাঁদনী আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তিনি মিটারটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে লাইনম্যান দিয়ে খুলে নেন। তিনি রফিক মিয়াকে বলেন- এ মুহুর্তে নতুন মিটার দেওয়া সম্ভব নয় সিলেট থেকে মিটার আনতে হবে। জরুরিভাবে মিটার আনতে হলে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মচারী ম্যানেজ করতে হবে।
এজন্য তিনি ২লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। রফিক উদ্দিন ব্যবসায়িক লেকসানের কথা বিবেচনা করে ৮০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। গত বছরের ১ জুন রফিক উদ্দিন, তার ভাই নাসির উদ্দিন এবং লিয়াকত আলীসহ হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাঁদনী আক্তারের অফিস কক্ষে আসেন। এ সময় নতুন মিটার স্থাপনের জন্য লিয়াকত আলী তাকে ৬০ হাজার টাকা ঘুষ দেন।
কিন্তু চাঁদনী আক্তার ৮০ হাজার টাকার ১ পয়সা কম হলেও মিটার দিতে পারবেন না বলে দেন। নিরূপায় হয়ে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। ঘুষ প্রদানকালে নাছির উদ্দিন তার মোবাইলের গোপন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন।
যাহা পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণের ভিডিও হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে।
হবিগঞ্জ দুদুকের পিপি অ্যাড.সামছুল হক মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,রফিক উদ্দিন নামে এক গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার সঠিক থাকার পরও তা নষ্ট বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঘুষ করেন পিডিবির লোকজন। এ ব্যপারে ওই গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে দুদুক মামলা দায়ের করেছে। এই মামলা দায়েরের ফলে গ্রাহকরা হয়রানী থেকে রক্ষা পাবেন।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদারকে সম্প্রতি সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন