চলমান অভিযানের মধ্যেও নগরীর সোবহানীঘাট,সবজিবাজার,চালিবন্দর,এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে শিলং তীর, ঝান্ডু-মান্ডু,ওয়ানটেন,নাইট তীর জুয়া।এসব জুয়া স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র,শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ হচ্ছে সর্বহারা। অভিযোগ উঠেছে এই আসরের জুয়াড়িদের মদদ দিচ্ছেন স্থানীয় পুলিশের অসাদু কিছু কর্মকর্তা,কিছু এলাকার প্রাভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদরা। তাদের ছত্রছায়ায় চলছে এই জুয়ার বোর্ড। বিষয়টি নিয়ে বিপাকে আছেন এলাকাবাসীও। ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে নারাজ।
জুয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে চলছে পুলিশের দাবী। যদি তাই হয়, তাহলে সোবহানীঘাট পুলিশ ফাড়িঁর পাশের সবজি বাজারের মার্কেটের পিছনে সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের পাশে কিভাবে প্রকাশ্যে চলছে জুয়া? প্রশাসনও এই বিষয়টি জেনেও নীরব ? এনিয়ে জনমনে জেগেছে প্রশ্ন!
তবে স্থানীয়দের দাবী, বোর্ড মালিক কুখ্যাত জুয়ারী আল- আমিন ও নজরুল সোবহানীঘাট ফাঁড়ি ইনচার্জকে ম্যানেজ করে তাদের নিয়জিত লোক দিয়ে জুয়া চালিয়ে আসছে বলে অনেকের দাবী।
জানা গেছে,সোবহানীঘাট-চালিবন্দর এলাকার রামকৃষ্ণ মিশন সরকারি প্রাথমিক স্কুলে গেইটের পাশ সবজি বাজারের মাকের্টের পিছনে নাসিমের কলোনীতে বসেছে এই আসর।
২টি কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষে তীর শিলংয়ের বোর্ড আর অপর কক্ষে ঝান্ডু-মান্ডু বোর্ড! প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই কক্ষ গুলোতে চলে জুয়া। এ তীর শিলং জুয়ার বোর্ডের নেতৃত্বে দিচ্ছেন আল আমিন ও নজরুর। তার জুয়ার বোর্ড কমিশনে পরিচালনা করে তাদের পালিত সদস্যরা।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয়রা প্রতিবেদককে জানান, সোবহানীঘাট পুলিশ ফাড়িঁ আইসি প্রতিদিন সন্ধ্যায় আলামিন ও নজরুলের কাছ থেকে বোর্ডের চালানো বাবৎ বখরা আদায় করেন। তবে প্রশাসন মাঝে মধ্যে অভিযান চালায়। কিন্তু অভিযানের খবরও বোর্ড কর্তৃপক্ষ কিভাবে পেয়ে যায়!
এই জুয়ার আসরে দিনে এবং রাতে টোকনের মাধ্যমে তীর শিলং ও তীর নাইট শিলং জুয়া খেলা চলে আর ঝান্ডু-মান্ডু জুয়াতো সবসময়ই চলে।একটি সূত্র জানিয়েছে,নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ও বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির কিছু অসৎ পুলিশ এসব জুয়াড়িদের কাছ থেকে অবৈধভাবে সুবিধা নেয়াই এই শিলং নামে জুয়া খেলা কিছুতেই থামছে না। যার ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে তীর খেলা বন্ধে অভিযান চললেও কোনো সুফল মিলছে না। সাম্প্রতিক সময়ে চালি বন্দর এলাকায় শিলং তীর এবং ঝান্ডু-মান্ডু খেলার উৎপাত দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ সূত্রমতে, গত কয়েক মাসে সিলেটে অন্তত শতাধিক জুয়ার আসর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর এই অভিযানে সবচেয়ে বেশি প্রশংসার দাবিদার মহানগর পুলিশ। কিন্তু জুয়ার আসর বন্ধ করা হলেও ফাঁড়ি ও কিছু অসাধু পুলিশের মাঠপর্যায়ের সদস্যদের কারণে এসকল জুয়া খেলা ফের ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো সিলেটের আনাচে-কানাচে।
পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করেও দমন করা যাচ্ছে না এসব জুয়া। কারণ জুয়া খেলায় আটক হলে সাজা কম হয়। গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হয়ে পুনরায় ওই খেলায় জড়িয়ে পড়ছেন জুয়াড়িরা। আর এসব কারণে নিয়মিত অভিযান চললেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।সুধু চালিবন্দর নয় আল আমিন ও নজরুলের রয়েছে একাধিক জুয়ার আসর।
এর মধ্যে সিলেট নতুন রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ হলেই বাম পাশে চোখে পড়ে একটি পাবলিক টয়লেট সামনে পার্কিংস্থান আর এই পাবলিক টয়লেটের পিছনে আল আমিন ও নজরুল বাহিনী সরকারী ভুমি দখল করে ঘর তৈরি করে প্রতিষ্টিত করেছে নিষিদ্ধ জান্ডুমান্ডু শিলংতীর ও জুয়াখেলা জমজমাট আসর।
সম্প্রতি সিলেট সিটিকর্পোরেশনের উদ্যোগে বাসটার্মিনাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙ্গে দেওয়া হয় ফুটপাতের সকল ঝুপড়ি দোকানপাট। এসময় যমুনা মার্কেটের সামনে রেলওয়ের কাঁটাতার কেটে ঘর নির্মাণ করে এর ভিতরে ছিল কুখ্যাত জুয়ারী আলআমিন ও নজরুল বাহিনীর অবৈধ জুয়ার আস্তানা। সেই অভিযানে ভাঙ্গা হয়ে পড়ে কুখ্যাত জুয়ারী আলআমিন চক্রদের জুয়ার আস্তানা। ফলে আশপাশের মানুষের মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেমে আসে।
টার্মিনালের সুন্দর্য বর্ধনে লোকজন ফুটপাত দখল করা সিটি কর্পোরেশনের বাঁধানিষেধ থাকায় আল-আমিন ও নজরুল বাহিনী পূর্বের নির্ধারিত স্থানে জুয়ার বোর্ড বসাতে পারেনী। কিন্তু তাদের ক্ষমতার কাছে সবকিছুই যেন অসহায়। তারা তাদের জুয়ার আস্তানা বসাতে নতুন নিরাপদ স্থান নির্ধারণ করে নেয় এমনকি রেলওয়ের লোহার সীমানাপ্রচীর কেঁটে পাবলিক টয়লেটের পিছনে সরকারী ভুমি দখল করে ঘর তৈরি করে প্রকাশ্যে জান্ডুমান্ডু,শিলংতীর সহ জমজমাট জুয়া খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
একদিকে একশত গজ দূরে সিলেট রেলওয়ে জিআরপি থানা , অন্যদিকে ৪/৫ শত গজ দূরে সিলেট বাস টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও আল- আমিন বাহিনীর অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে আইনের তোয়াক্কা নাকরে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছে জমজমাট এসব অবৈধ জুয়ার আসর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যমুনা মার্কেটের ও রেলওয়ের অনেক ব্যাবসায়ী জানান, তাদের দোকানের কর্মচারী তার বেতনের টাকা। অথবা দোকানে সহযোগী ভাই,ছেলে,দোকান থেকে লুকিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ক্যাশ থেকে টাকা নিয়ে একে সত্তর পাওয়ার লোভে ১০০/২০০/৫০০/১০০০/৫০০০ টাকা নিয়ে শিলং তীর ও জান্ডুমান্ডু খেলায় যোগ দিয়ে সব শেষ করে খালি হাতে ফিরে। অন্য দিকে রিক্সা চালক,ব্যানচালক অটোচালক, সিএনজি মাইক্রো চালক,দিন মজুর সারাদিন যা আয় করে পরিবারের জন্য খরছ না করে উপার্জিত সব টাকা শীলংতীর ও জান্ডুমান্ডু খেলে মদ গাঁজা সেবন করে খালি হাতে বাসাবাড়িতে গিয়ে স্ত্রী সন্তানের প্রতি অমানবিক আচরণ করে।সচেতন মহলের প্রশ্ন কুখ্যাত জুয়ারী আল- আমিন চক্রের এত দাপট কিসের বলে ? দুই থানার মধ্যবর্তী স্থানে সাহস হলো কি করে জুয়ারবোর্ড বসানোর? যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে রেলওয়ের গ্রীলকেঁটে সরকারী ভুমি জবর দখল করে জুয়ার আস্তানা বসানো, ক্ষমতার বাহাদুরি ছাড়া আর কিছুই নয়! এসব প্রশ্নের উত্তর দিবেই বা কে? ……
এদিকে রেলওয়ে ও বাসটার্মিনালের প্রবেশ মুখ হওয়ায় সর্বসাধারনের যাতায়াত সার্বক্ষণিক। এসব এলাকা নিরাপদ রাখতে প্রশাসন নানাবিধ ব্যাবস্থা গ্রহন করে থাকে।সিলেট নিউজ পেপারে“ব্যাটারীমার্কেটের সামনে প্রতারক জামাল ও তাহের বাহিনীর তিন তাসি খেলার খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হওয়ার সংবাদ প্রচার হলে উক্ত সংবাদটি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচরে আসলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়। এবং আজোবদি ব্যাটারী মার্কেটের সামনা নিরাপদ রয়েছে প্রশাসনের উদ্যোগে।
একই ভাবে জনস্বার্থে প্রশাসনের প্রতি সচেতন মহলের জোরালো দাবী কুখ্যাত জুয়ারী আলআমিন ও নজরুল চক্রের খপ্পর থেকে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষকে সু পথে ফিরিয়ে আনতে চিহ্নিতদের আটক করে চীরতরে জুয়ার আস্তানা ধ্বংস করে দেয়ার।
এ ব্যাপারে জানতে সোবানিঘাট পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ রিপন সরকারের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেন নি। চলমান…
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন