• ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, নিহত ১, উত্তেজনা ছড়াল সিলেট

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, নিহত ১, উত্তেজনা ছড়াল সিলেট

সিলেট নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন সওদাগরটুলা এলাকায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন ব্যক্তি, মিতুল চন্দ্র দাস (৩৬), তার ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর একটি পোস্ট করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটে গত ৩১ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার।

পোস্টটি ভাইরাল হলে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা জানান, এই পোস্ট ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রয়াস মাত্র। বিষয়টি কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা তৈরি হয়।

এর জেরে ১ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার বাদ জুমা স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্যোগে সওদাগরটুলা এলাকায় এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযুক্ত মিতুল চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তারা বলেন, ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ বরদাশত করা হবে না এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী মাহমুদ জানান,

> “অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।”

এদিকে, থমথমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।

সাম্প্রতিক এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার প্রশ্নটি আবারও সামনে এনে দিয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেমন সংরক্ষিত, তেমনি অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনও নাগরিক দায়িত্বের অংশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি।

এদিকে অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম (৩০), যিনি নগরীর চাড়াদিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা। ৩ সেপ্টেম্বর, রবিবার সন্ধ্যায় শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইসহ কয়েকজন মিতুল চন্দ্র দাসের বাসায় গেলে বাকবিতণ্ডা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অভিযুক্ত মিতুল ও তার সহযোগীরা শফিকুল ইসলামকে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করেন।

তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পর নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মিতুল চন্দ্র দাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন