• ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১২ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে বেসরকারি রেকার মালিক পিংকু বাহিনীর বেপরোয়া চাঁদাবাজি!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৪, ২০২৩
সিলেটে বেসরকারি রেকার মালিক পিংকু বাহিনীর বেপরোয়া চাঁদাবাজি!

বিশেষ প্রতিবেদকঃঃসিলেট মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনে ট্রাফিক পুলিশের বেসরকারি রেকার মালিক পিংকু বাহিনীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রেকার যেন পিংকুর অবৈধ টাকার কারখানা।মাঈন উদ্দিন পিংকু,প্রকাশ(রেকার পিংকু)দেশের বাড়ি কুমিল্লায়।ট্রাফিক সার্জেন্টদের দেখিয়ে তার মালিকানাধীন রেকার দিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে বলেও জানা যায়।

তার রেকার বাহিনী প্রতিনিয়তই শহরের আনাচে কানাচে দাপিয়ে ভেরাচ্ছে।সার্জেন্ট যানবাহন আটক করলে রেকার তলব করেন।নগরীতে তিনটি রেকার গাড়ি(টেনে নেয়ার ট্রাক)রয়েছে।

তার মধ্যে রেকার-১(হাইড্রোলিক)সরকারি,রেকার -২( নন হাইড্রোলিক) চুক্তিভিত্তিক রেকার-২ এর মালিক কুমিল্লার পিংকু।

পিংকুর রেকার ড্রাইভার হিসেবে কাজ করে প্রায় ৩০ যুবক।পুলিশ লাইনে যানবাহন(পিকআপ ভ্যান,মাইক্রোবাস,মিনিবাস ট্রাক ছাড়া)পৌঁছে দিলে প্রতি ১শ’ টাকা কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করে ওইসব যুবকরা।

অভিযোগ আছে কম বয়সী এই রেকার ড্রাইভাররা পুলিশ লাইন্স মাঠে যাতায়াতের সময় গাড়ি থেকে লুকিং গ্লাস টায়ার যন্ত্রাংশসহ গাড়িতে থাকা

আসবাবপত্র চুরির সাথে জড়িত।জানা যায় গেলো বছর,একটি প্রাইভেটকার জব্দ করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। মাথায় লাল কাপড় বাঁধা হবিগঞ্জের মানিক চন্দ্র দাস পরদিন জরিমানার ৩৬শ টাকা পরিশোধ করে পুলিশ লাইন্স থেকে কার ছাড়িয়ে নেন।পরে দেখেন তার গাড়ির চাকা বদল করা।

তখন এ ব্যাপারে এক ফেসবুক লাইভে তিনি এমন অভিযোগ করেছিলেন।

২০২৩ রবিবার ২১ আগষ্ট রাত প্রায় ৯ টার সময় সিলেট নগরে হোটেল রোজ ভীউর সামনে হটাৎ এক যুবক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালককের সামনে ঝাপিয়ে পড়েন, আটক করেন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা।

তারপর আসেন সার্জেন্ট খায়রুল,জানা যায় ঝাপিয়ে পড়া যুবক,বেসরকারি রেকার ২ এর মালিক পিংকুর নিয়জিত ও সার্জেন খায়রুলের সহযোগী হিসেবে ডিউটি করছেন কাওছার।তারপর কাওছার সার্জেন্টের সামনে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালককে তার রিকশা রেকারের হুমকি দেন।

তখন রিকশা চালক ছেলেটি কাকুতি মিনতি করলে কাওছার তার নিজের মোবাইল থেকে,রিকশা চালকের বড়বোন এর কাছে কল দিয়ে বলেন তারাতাড়ি এক হাজার টাকা নিয়ে আসতে পারলে তার গাড়িটা রেকার থেকে বাচানো জাবে।

তখন গরিব মহিলা কোন দিশা না পেয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার মালিকের কাছে ছুটে জান ,তখন রিকশার মালিক এসে কাওসারের কাছে টাকা দিয়ে তার ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ছাড়িয়ে আনেন।

তারপর কাওসারের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন গাড়ি টিক মত ছাড়িয়ে দিয়েছি।আমি সার্জেন্ট খায়রুল স্যার এর সাথে আছি।

এদিকে চেকপোস্ট বসানো বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বরত কিছু অসাধু সার্জেন্টদের আপ্যায়ন সেই সাথে নগদ অর্থ দিয়ে খুশি রাখতে হয় বেসরকারি রেকার মালিক পিংকুকে।

অসাধু সার্জেন্টরা খুশি থাকলে বেশি করে মোটরসাইকেল জব্দ হবে,বাড়বে টাকার পরিমান।

অন্যদিকে মাসিক মোবাইল খরচ হিসাবে রেকার মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে পায় ট্রাফিক পুলিশের কিছু অসাধু ব্যক্তিরা।

অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গিয়েছিলো,‘সূর্যের চেয়ে বালি’গরম এমন প্রবাদবাক্যের মতো রাস্তায় রেকার চালক ও হেল্পারদের দাপট যেনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের চেয়েও বেশি। তাদের হম্বিতম্বিও বেশি।

নগরীর প্রতিটি পয়েন্টে ট্রাফিক সার্জেন্টের সাথে ৩ থেকে ৪ জন রেকারের চালক ও হেল্পার থাকেন। মূলত এই রেকারের কথিত ড্রাইভার ও হেল্পারেরা কাজ করেন ট্রাফিক পুলিশ অসাধু সদস্যদের দালাল হিসেবে।

কোনো গাড়িকে আটকের পর পুলিশ লাইন্সে তা চালিয়ে নিয়ে যান এরাই।বর্তমানে একটি মোটরসাইকেল আটক করলে,হেলমেট,রেজিস্ট্রেশন,রেকার বিলসহ নূন্যতম ৬ থেকে ৮ হাজার টাকার মামলা দেন সার্জেন্ট।

তবে অন্য উপায়ও আছে,ড্রাইভার ও হেল্পাররূপী দালালদের হাতে ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা গুজে দিলেই সব মামলা থেকে খালাস।

সিসি ক্যামেরা’র চোখ বাঁচাতে ট্রাফিক সার্জেন্ট সরাসরি নিজ হাতে ঘুষের টাকা না নিয়ে পরামর্শ দেন দূরে দাড়িয়ে থাকা দালালদের সাথে কথা বলার জন্য।

দিন শেষে ঘুষের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা হয় অসাধুদের মধ্যে।রাস্তায় সার্জেন্টদের হাত থেকে অনেকেই খালাস পাননা,গাড়ি চলে যায় পুলিশ লাইন্সে। অগত্যা তাদের মামলার কাগজ নিয়ে যেতে হয় উপশহরে। সেখানেও খপ্পরে পড়তে হয় তাদের।

রেকার টিমের সাথে যারা গাড়ি দরে তাদের জনপতি প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পযর্ন্ত বেতন দেয়া হয়।হাতে গোনা কয়েকজনকে ট্রাফিক বিভাগ থেকে বেতন দেয়া হলেও বেশির ভাগ লোকদের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে কোনো বেতন দেয়া হয় না। চালকেরা আরো বলেন,শহরে যে পরিমান গাড়ি চোর বাড়ছে তাতে গাড়ি চালানো অনেক কঠিন।

আর তারা তো পুরা দল বেধে গাড়ি ধরতে আসে।কে চোর আর কে পুলিশের লোক তাই বুঝা অনেক কঠিন।তারা আরো বলেন,গাড়ি পুলিশ এসে ধরে না,সার্জেন্টের নিয়োজিত রেকারের দালালদের দিয়ে যে গাড়ি গুলো জরিমানা করার জন্য ধরে।মাজে মধ্যে যে রিকশা ধরে সেই রিকশা চালক দিয়েই আবার তারা গাড়ি ধরায়।

তারা অবৈধ গাড়ি ধরতে আসে অবৈধ গাড়িতে করেই।রেকার মালিক পিংকু ও তার টিম প্রতিদিন প্রায় শ’ শ’ গাড়ি আটক করে।

এদের বিরুদ্ধে যতবারই অভিযোগ করা হয় তাতে কোন ফল পাওয়া যায়না। গোপন সুত্রে জানা যায় নিচ থেকে উপরমহল পর্যন্য পিংকুর বিশাল শক্তিধরেরা কাজ করেন।বেসরকারি রেকারের কয়েকজন ড্রাইভার বলেন,আমরা অনেক লোক কাজ করি।সবার বেতন পিংকু স্যারই দেয়।

এব্যাপারে জানতে রেকার ২ এর মালিক মাঈন উদ্দিন পিংকুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি আগামীকাল মেন্দিবাগ পয়েন্টে আসবো আপনি আমার সাথে দেখা করবেন।

বিস্তারিত আরো আসছে মাঈন উদ্দিন পিংকুর মাসিক আয় কত টাকাসহ বিস্তর তথ্য..!

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন