• ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দাবি পূরণের আশ্বাসে সিলেটে ‘পরিবহন ধর্মঘট’ প্রত্যাহার

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত জুলাই ১২, ২০২৩
দাবি পূরণের আশ্বাসে সিলেটে ‘পরিবহন ধর্মঘট’ প্রত্যাহার

দুই দাবিতে বুধবার (১২ জুলাই) ভোর থেকে সিলেটে পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলো জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। তবে জেলা প্রশাসকের দাবি পূরণের আশ্বাসের ভিত্তিতে ঘোষণার ৬ ঘণ্টার মাথায় সে ‘পরিবহন ধর্মঘট’ প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিক নেতারা।

বিষয়টি মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাত ১০টায় দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।

এর আগে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বৈঠক করে সিলেট-তামাবিল সড়কে নির্বিঘ্নে বাস চলাচল করতে দেওয়া ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদকে গ্রেফতারের দাবিতে এ কর্মবিরতির ডাক দেয় জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।

বিকাল ৪টার দিকে সংগঠনটির সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন- ‘এই দুই দাবিতে গত দুদিন ধরে সিলেট-তামাবিল সড়কে আমাদের কর্মবিরতি চলছে। কিন্তু আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় আগামীকাল (বুধবার) ভোর থেকে পুরো সিলেট জেলায় পরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সকল পরিবহন সংগঠন। তাই কাল থেকে সিলেটের কোনো রাস্তায় চলবে না কোনো ধরনের গাড়ি।’

তবে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের আহ্বানে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বৈঠকে বসেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। এসময় জেলা প্রশাসক তাদের দুটি দাবি বিবেচনা করে দেখবেন বলে জানান। পরে ‘পরিবহন ধর্মঘট’ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।

জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে সিলেট-তামাবিল সড়কে সোমবার ও মঙ্গলবার দুদিন চলে গণপরিবহন শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি। ওই সড়কে গত শুক্রবার বাসচাপায় ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় জৈন্তাপুর উপজেলার ১৭ পরগনার সালিশ কমিটির সড়কটিতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদের গ্রেফতারের দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাসের ধাক্কায় একটি ইজিবাইকের (টমটম) পাঁচ যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও কয়েকজন।

ঘটনার পরদিন (শনিবার) রাতে দরবস্ত বাজার মসজিদে সিলেটের বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনার সালিশ সমন্বয় কমিটি জরুরি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের দাবি জানানো হয়। ছাঁটাইয়ের আগ পর্যন্ত ওই সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল করতে না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে বৃহত্তর জৈন্তাপুরের বাসিন্দারা সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস চলাচলে বাধা দেন। এতে নেতৃত্ব দেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেন জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। রবিবার বিকেলে তারা বৈঠক করে সিলেট-তামাবিল সড়কে সোমবার ভোর থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এসময় শ্রমিক নেতারা আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

এদিকে, গতকাল সোমবার ফের জরুরি বৈঠক করে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগনা সালিশ কমিটি। এতে ৩টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সেগুলো হচ্ছে- ১) ১৭ পরগনার কাছে ময়নুল ও মালিক সমিতি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত উত্তর সিলেটে তামাবিল রোড, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট রোডে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। ২) মালিক সমিতি নিজেই গাড়ি বন্ধ করেছে তাই ক্ষমা চাওয়ার পর পুনরায় বাস চালাতে চাইলে ১৭ পরগনার অনুমতি নিয়েই বাস চালাতে হবে। ৩) বাস ব্যতিত সকল গাড়ি চলাচল করবে। যদি চলাচলে কেউ বাধা প্রদান করে তাহলে ১৭ পরগনার আপামর জনতা তা প্রতিহত করবে।

আগামী বৃহস্পতিবার ১৭ পরগনার পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন