বিজিবির লাইনম্যান দুলাল আহমদ প্রকাশ মন্ত্রীর পুত্র দুলাল এক নামেই পরিচিত। তাকে বলা হয়ে থাকে সীমান্তের মাদক চোরাচালেন ‘গডফাদার।
সে গোয়াইনঘাট থানাধীন হাজিপুর (ঢালার পার) এলাকার মৃত ইদ্রিস ওরফে মন্ত্রীর পুত্র। গোয়াইনঘাট উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সোনার হাট-ক্যাম্পের আওতাধীন মাতুরতল ও সোনার হাট সীমান্তের বাউরকোনা,পান্তুমাই,মায়াবী ঝর্ণা,নোয়াগাও ও কুলুম ছড়া এলাকার মাদক কারবারেই উঠে আসে প্রথমে তার নাম। সরাসরিও নিয়ন্ত্রণ করেন মাদক চোরাকারবার। সীমান্তের ওপারেও আছে তার বাহিনী।
ওপার নিয়ন্ত্রণ করে ওরা, আর এপার নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। মূল কাজই মাদক চোরাকারবার।
২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সোনার হাট- ক্যাম্পের আওতাধীন মাতুরতল ও সোনার হাট সীমান্তের বাউরকোনা, পান্তুমাই, মায়াবী ঝর্ণা, নোয়াগাও ও কুলুম ছড়া সীমান্তের মাদক চোরাচালানের সব টাকাই পাঁচার হয় তার হাত ধরে। এ কারণে সীমান্তের সব ধরনের চোলাচালানের নিয়ন্ত্রণও করতে হয় তাকে।
মাদক চোরাকারবারি ও বিজিবির লাইনম্যান দুলাল আহমদ তার দলের সদস্যরা কতিত সোর্স বা লাইনম্যানের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, ডিবিপুলিশ ও কিছু বখরাবাজ সাংবাদিক নিয়ন্ত্রণ করছে এ কারণে এক দশক ধরে সীমান্তের কর্তৃত্ব তাদের হাতে। সীমান্তের বাউরকোনা,পান্তুমাই, মায়াবী ঝর্ণা, নোয়াগাও ও কুলুম ছড়া এলাকার সমস্ত মাদকের চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করেন দুলাল।
সাপ্তাহিক ও মাসিক বখরা দেওয়ার ফলে প্রশাসনের সঙ্গেও রয়েছে তার গভীর সখ্যতা। বিজিবি ও পুলিশের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা তিনি জাহির করেন প্রকাশ্যই। এই এলাকায় মাদক চোরাচালানে একতরফা আধিপত্য খাটাচ্ছেন দুলাল। এ জন্য এই এলাকার মাদক চোরাকারবারিদের গডফাদার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন দুলাল। মাদক চোরাকারবারি’পরিচয়ে বেপরোয়া হলেও প্রশাসন কখনোই তার ধারে কাছেও যায়নি।
এদিকে, দুলালের পালিত ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী এখন তাকে ঘিরে থাকে। লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে যেখানে প্রয়োজন সেখানে হানা দিয়ে আদায় করে মাদকের চাঁদা। বারবার ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকার মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে তারা। স্থানীয়রা বলছেন, নুন আনতে পানতা ফোরানো দুলাল এখন কোটি টাকার মালিক বিধায় দুলালের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলতে সাহস পান না। দুলালের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তিও।
স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা গেছে- দুলাল দীর্ঘদিন থেকে সীমান্তের চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় প্রতাপপুর বিজিবি এবং সংগ্রাম ৪৮ বিজিবির সাথে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এই সুযোগে সে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ লাইনম্যান দুলাল। বিজিবির আর্শীবাদে রাতারাতি লাইনম্যান দুলাল বনে গেছে সীমান্তের চোরাচালান রাজ্যের মুকুটহীন সম্রাট।
অভিযোগ আছে, লাইনম্যান দুলাল বিভিন্নভাবে বিজিবির নাম ভাঙ্গিয়ে ভারতীয় পণ্য চোরাকারবারীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করছে। তবে এসব অস্বীকার বরাবরের মতো বিজিবি বলে অন্য কথা। তবে বিজিবির নামে সীমান্তের চোরাচালান রাজ্যের লাইন ক্লিয়ার রাখতে চোরাকারবারীদের কাছ হইতে টাকা উত্তেলোন করছেলা ইনম্যান দুলাল যা বর্তমানেও চলমান। কেউ টাকা না দিলে সীমান্তের দায়িত্বরত বিজিবিকে দিয়ে মালামাল জব্দ করায় লাইনম্যান দুলাল। এতে করে যেমন লাইনম্যান দুলালের পকেট ভারী হচ্ছে ঠিক তেমনি বিজিবির কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে ডুকছে সাপ্তাহিক বখরা
চলমান সময়ে সীমান্ত পথে গরু-মহিষ চোরাচালান চক্র পূনরায় সক্রিয় হয়ে উঠলে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় সাংবাদিকদের। তারা এই সীমান্ত এলাকার বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে লাইনম্যান দুলাল সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার চোরাচালন সিন্ডিকেট নিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মহড়ায় তাদের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মামলার পক্রিয়া চলমান বলে জানান ঘটনাস্থলে আহত সাংবাদিকরা। এছাড়াও লাইনম্যান দুলাল বিভিন্ন লোক মারফতে ও তাদের ব্যবহৃত নাম্বারে ফোন করে তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে এমন কি এই সীমান্তে তাদের যেন সে আর না দেখে, নইলে তাদের নিষিদ্ধ কোন বস্তু দিয়ে বিজিবির হাতে তাদের গ্রেফতার করানোর হুমকি দিচ্ছে যা এখনও চলমান।
ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দুলাল বাহিনীর অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এ বাহিনীতে রয়েছে সন্ত্রাসী ক্যাডার। এসব ক্যাডার সবসময় হাতুড়ি, চাকু, হকিস্টিক ও রড নিয়ে সর্বদা চলাফেরা করে। তাদের নিয়ন্ত্রণে ভারত থেকে আসা গরুপ্রতিও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। চাঁদা না পেয়ে এরই মধ্যে তারা কয়েকজনকে মারধর করেছে। স্থানীয় এক গরু ব্যবসায়ী জানান, তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় তিনিসহ অনেকে হামলা ও মামলার শিকার হয়ে সম্প্রতি জেলও খাটতে হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন জানান- দুলাল বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকার কেউ কথা বলতে সাহস পান না। এদের বিরুদ্ধে কথা বললে হামলা-মামলার শিকার হতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, দুলাল ও তার দলের সদস্যরা বেপরোয়া গতিতে চলছে। এদিকে মাদক ব্যবসায়ী দুলাল বাহিনী নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে প্রশাসনের প্রতি একপ্রকার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে মাদক ব্যবসায়ী দুলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি চোরাচালানের কথা শিকার করে সাংবাদিকদের জানান- আমি একা এই ব্যবসায় জড়িত না আরও অনেক আছেন পারলে তাদের খুঁজে বের করুন।
এ ব্যাপারে প্রতাপপুর বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার নায়েক হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান- দুলাল নামে আমাদের কোন লাইনম্যান নেই। তবে দুলাল নামের কেউ যে বিজিবির নামে টাকা তুলছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন- বিজিবির নাম ভাঙ্গিয়ে টাকা তুলার বিষয়টি শুনেছি হাতেনাতে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন