• ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

৯৯৯-এ ফোন দিয়েও সহযোগীতা পাননি, অভিযোগ জাফলংয়ে আক্রান্তদের!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত মে ৬, ২০২২
৯৯৯-এ ফোন দিয়েও সহযোগীতা পাননি, অভিযোগ জাফলংয়ে আক্রান্তদের!

টিকিট ছাড়া ডুকা যায়না যাবেনা বলেই নারীর শরীরে হাত দেয় হামলাকারীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলেই ঢাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া নারী-পুরুষদের উপর হামলা করে পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীরা।

বৃহস্পতিবার (০৫ মে) সন্ধ্যায় জাফলং গ্রীণ রিসোর্টের সামনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আক্রান্তরা।

তারা বলেন, আমরা ঘটনার পর পরই ৯৯৯-এ ফোন দিয়েও সহযোগীতা চেয়েও পাইনি। আমাদের বলা হয়, মাথা ফাটানোর ছবি পাঠাতে। তারা মার্ডার হওয়ার পর পদক্ষেপ নিতো এমনটি মনে হলো। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আক্রান্ত পর্যটকরা।

হামলার ঘটনায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের অনেকে আহত হলেও সুমন নামে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাবেন, জানান স্বজনরা।

আক্রান্ত বিথি সরকার জানান, আমরা মেয়ে হয়ে আটকাতে চেষ্টা করি। তাদের একটি কথা মেরেই ফেলবো। আমাদের জামা কাপড় টান দেয় তারা। জানোয়ারের মতো আচরণ করেছে, এটা কোনো মতেই কাম্য নয়।

গুরুতর আহত সুমনের স্ত্রী সুমি সরকার বলেন, তারা আমার দেবর ও স্বামীকে মারপিঠ করছিল। সন্তান কোলে, কারে বাঁচাবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারপরও তাদের গিয়ে আটকানোর চেষ্টা করি। ওরা এসএস পাইপ দিয়ে আমার স্বামীর মাথায় আঘাত করে। আজ আমার স্বামী মারা গেলে সন্তানদের কি হতো। আমি হতভম্ব হয়ে গেছি, স্বামী, ভাই, ও দেবরকে মারছে। কারে বাঁচাবো? আমাদেরকেও হেনস্তা করেছে। হামলাকারীদের সুষ্ঠু বিচার হোক, এটাই তাদের চাওয়া।

আক্রান্তরা জানান, তারা ঢাকার কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর থেকে জাফলংয়ে বেড়াতে আসেন। তাদের মধ্যে নারী ৮ জন, ৪ জন পুরুষ। আহতদের নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

আক্রান্তদের অভিযোগ, মারামারি হয়েছে ১১টায়। কিন্তু ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার পর প্রশাসন এসেছে। তাদের অভিযোগ টিকিট কাটতে গিয়েই হামলার শিকার হয়েছি। আসলে এটা প্রবেশ ফি নয়, যথারীতি চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। আমরা চাই, আর কোনো পর্যটক যেনো এভাবে হামলার শিকার না হন, এ বিষয়ে প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে হবে।

জানা গেছে, হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন ঢাকার কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর জুরাইন এলাকার সনাতন সরকারের ছেলে সম্রাট সরকার (২৫), সনাতন সরকার (৫৮) তার স্ত্রী ঝর্ণা সরকার (৫২), শ্লিলতাহানির শিকার হয়েছেন মেয়ে বিথি সরকার (২৬), আহত হন সুমন সরকার ও তাকে বাঁচাতে গিয়ে শ্লিলতাহানির শিকার হন স্ত্রী সুমি সরকার (২৬), আহত হয়েছেন মধ্য বাড্ডার দক্ষিণ আনন্দনগরের সুর্যকান্ত সরকারের ছেলে মুকুল চন্দ্র সরকার (২৭), সাভার দক্ষিণ পাড়ার বিজয় চন্দ্র সরকারের ছেলে সুমন শীল। তারা রাতেই ঢাকায় ফিরে গেছেন।

সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) প্রলয় রায় বলেন, এ ঘটনায় আক্রান্ত সুমন সরকার বাদি হয়ে ৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা (নং-০৮(৫)২২) দায়ের করেছেন। হামলাকারীদের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলো-গোয়াইনঘাট থানার পন্নগ্রামে মৃত রাখাল চন্দ্র দাস ছেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (২১) ও একেই উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মোঃ সেলিম আহমেদ (২১), নয়াবস্তি গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে সোহেল রানা, পশ্চিম কালীনগর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে নাজিম উদ্দিন এবং ইসলামপুর রাধানগর গ্রামে মৃত সিরাজ উদ্দীনের ছেলে জয়নাল আবেদীন।

বৃহস্পতিবার (০৫ মে) প্রবেশ ফি’র নামে জাফলংয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনা নিয়ে পর্যটকদের লাঠিপেটা করেন পর্যটন উন্নয়ন কমিটি কর্তৃক নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন