• ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সিন্ডিকেটের কবলে সিলেট বিআরটিএ

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৪, ২০২২
সিন্ডিকেটের কবলে সিলেট বিআরটিএ

বিশেষ প্রতিবেদকঃঃসিলেট বিআরটিএ অফিস দালালদের নাগপাশে আবদ্ধ।এখানে অনেক কাজ সরকারি নিয়মের বাইরে ঘুষ বাণিজ্য’র মাধ্যমে হলেও সরকারি নিয়ম মেনে কোন কাজ করাতে গেলে তা সম্ভব হচ্ছে না।

এতে একদিকে যেমন সেবাগ্রহীতা সুফল পাচ্ছেন না অন্যদিকে বাড়ছে দালালদের সংখ্যাও।সব মিলিয়ে সিন্ডিকেটের নাগপাশে বন্দি হয়ে পড়েছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠান।


এভাবেই নিয়ম-অনিয়মের বেড়াজাল তৈরি করে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করছেন বিআরটিএ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে গঠিত অফিসিয়াল দালাল সিন্ডিকেট।

বিআরটিএ সিলেট অফিস সাধারণ গ্রাহকদের জন্য এক আতঙ্কের নাম।তবে দালালদের জন্য স্বর্গরাজ্য।কারণ একজন সাধারণ গ্রাহক যে কাজ বছরের পর বছর ঘুরেও করতে পারছেন না সেই কাজ বিআরটিএর দালালরা করে দিচ্ছেন মুহুর্তেই।তবে এজন্য আপনাকে গুনতে হবে সরকারি ফি এর অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা।

আর এই টাকা অফিসিয়াল দালালদের মাধ্যমে চলে যায় বিআরটিএ সিলেট অফিসের কর্মকর্তার কাছে।তবে এসব অবৈধ আয়ের সিংহভাগই পান অফিস কর্তারা।

বাকী টাকা কর্তাব্যক্তিরাই বিভিন্নভাবে ভাগ-বাটোয়ারা করে দেন অফিসের দালালদের।

সিলেট বিআরটিএ তে আগত সেবা গ্রহিতা ও একাধিক ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়,বাইরে থেকে,মালিকানা বদলী,নাম পরিবর্তন,নতুন গাড়ি রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন কাজ নেয়ার জন্য রয়েছেন সাব্বিরসহ অফিসিয়াল দালালরা।দেখলে মনে হবে রেকর্ড রুমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সাব্বিরকে,।

সাব্বির অফিসের কেউ না হলেও দেয়া হয়েছে চেয়ার-টেবিল,কম্পিউটারে বসে কাজ করার সুযোগ,।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একজন জানান বিআরটিএ’র রের্কড কিপার দিলোয়ারের একান্ত মানুষ সাব্বির।

সম্প্রতি সিলেট বিআরটিএর অবহেলায় গরীব অসহায় সিএনজি অটোরিকশা চালক সাব্বির আজ নিঃষ হতে চলেছে।

মালিকানা বদলীতে প্রকৃত মালিক এসে বিআরটিএ অফিসে স্বাক্ষর করবে এটাই নিয়ম।

সিএনজি অটোরিকশার মালিক সাব্বির সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করেছে সে বিআরটি এডি’র কক্ষে এসে স্বাক্ষর করেনি এবং তার গাড়িও বিক্রি করেনি।

চলতি মাসের এই ঘটনায় সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারেন না।

সিলেট বিআরটিএ’র বিরুদ্ধে অনেকের অভিযোগ ঘুষের বিনিময়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগীতায় মালিকানা বদলী হচ্ছে।

এ কারনেই সিএনজি অটোরিকশার মালিল সাব্বিরের মত অনেক গরীব আজ ধ্বংষের পথে।তবে কি সেই অভিযোগ আজ প্রমাণিত হল।

টাকার বিনিময়ে মালিক ছাড়া যে কারো গাড়ির মালিকানা বদলী হয় সিলেট বিআরটিএ’তে ?

এদিকে বিআরটিএ সিলেট অফিসের সহকারী পরিচালক মো.সানাউল হকের শুভদৃষ্টিতে অফিসের দালাল সিন্ডিকেট’খুশি থাকলেও খুশি নয় সাধারণ গ্রাহক থেকে পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ,দালাল সিন্ডিকেটের নাগপাশে আবদ্ধ সিলেট বিআরটিএ,সিন্ডিকেটের দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

নির্ধারিত দালাল ছাড়া কাজ দিলে কোন কাজ হয় না।উল্টো পরিবহন শ্রমিকদের করা হয় নানা ধরণের হয়রানি।এদিকে শত অভিযোগ থাকার পরও চিহ্নিত দালালদের বৈধ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি গত ৭ মার্চ সোমবার এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন এক সিএনজি অটোরিকশা মালিক। পরে ৯ মার্চ বুধবার এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ নিয়ে রাতে মিলন নামের একজনের বাড়িতে গেলে মিলন জানায়,সিএনজি অটোরিকশা মালিক তার সিএনজি অটোরিকশা সিলেট-থ-১২-৮৫৩১ মিলনের কাছে বিক্রি করেছে।এবং বুধবার ৯ মার্চ বিকেলে সিলেট বিআরটিএ-তে মিলনের নামে মালিকানাবদলী হয়েছে।

পরদিন ১০ মার্চ বৃহস্পতিবার সিলেট বিআরটিএ অফিসে গিয়ে সিএনজি অটোরিকশার মালিক মালিকানা বদলীর বিষয়ে অভিযোগ করেন। সিএনজি অটোরিকশা মালিকের এমন অভিযোগে নড়েচরে বসে সিলেট বিআরটিএ-কর্তৃপক্ষ।

নিজেদের দায় এড়াতে বিআরটিএ’র রের্কড কিপার দিলোয়ার সিএনজি অটোরিকশা মালিককে সাথে নিয়ে কুদরত উল্লাহ্ মার্কেটের একটি ফটোস্ট্যাটের দোকানে নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করান।

সেই অভিযোগে তিনি উল্ল্যেখ করান এ বিষয়ে সিলেট বিআরটিএ অফিসের কোনো কর্মচারী বা কর্মকর্তার কোনো হাত নেই!

পরে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ মিলনকে ডেকে এনে গাড়ির সেল রিসিট এবং বিআরটিএ অফিসে বসে মালিকের স্বাক্ষর দেয়ার ছবি চাইলে সে কিছুই দেখাতে পারেনি।

মালিকানা বদলীর নথি এবং সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা করে সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ দেখেন গত বুধবার ৯ মার্চ সিএনজি অটোরিকশার মালিক সাব্বির বিআরটিএ অফিসে উপস্থিথও হয়নি।এবং ছবিতে যে ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছে সে সিএনজি অটোরিকশা মালিক সাব্বির নয়!

সিএনজি অটোরিকশা মালিক জানান,মিলন ও তার মাতা সুফিয়া বেগম প্রতারণা করে আমার স্বাক্ষর জাল করে গাড়ির সেল রিসিট তৈরি করে সিলেট বিআরটিএ কিছু অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে আমার গাড়ির মালিকানা বদলি করেছে। মিলন ও তার মায়ের পিছনে ঘুড়তে ঘুড়তে আমি আজ নিঃষ হবার পথে। তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে।আমি শুধু আমার গাড়িটির মালিকানা বদলী কাগজ বাতিলের দাবি জানাই সিলেট বিআরটিএ’র কাছে আর আমার গাড়িটি ফেরত চাই। পরবর্তীতে থাকছে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস কিভাবে হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন