• ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আবারো বেপরোয়া শীর্ষ চোরাকারবারি বেন্ডিস করিম!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২
আবারো বেপরোয়া শীর্ষ চোরাকারবারি বেন্ডিস করিম!

সিলেটের জৈন্তাপুর:ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা,একসময় জৈন্তাপুরে চোরাচালানের‘তকমা’র ব্যাপক পরিচিত ছিল।সেই তকমা থেকে বেরিয়ে এসেছিল জৈন্তাপুর।কিন্তু আবারো চোরাকারবারিদের কারণে জৈন্তাপুরের সুনাম ক্ষুণ্ন্ন হচ্ছে।

সীমান্ত দিয়ে গরু-মহিষ চোরাকারবারির নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে।এ নিয়ে ত্যক্ত-বিরক্ত এলাকার মানুষ।গরু-মহিষের অবাধ বিচরণই নষ্ট করে দিচ্ছে ফসলি জমি সহ ঘরবাড়ি।

এ নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে।অবশেষে চোরাচালানের বিষয়টি আলোচিত হয়েছিলো উপজেলার আইন শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকও বসেছিল।

সেই বৈঠকে উপজেলার চোরাকারবার নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন কয়েকজন জনপ্রতিনিধি।তারা বলেন-প্রতিটি গরু-মহিষের মালিকের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ১৭০০ টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।জীবন বাজি রেখে চোরাকারবারিরা পশু নিয়ে আসছে সীমান্তের ওপার থেকে।এতে করে সীমান্ত হত্যা বাড়তে পারে।তাদের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কঠোর হয়েছে প্রশাসন।অবৈধভাবে ভারতীয় গরু-মহিষ প্রবেশ বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন-দিনের বৈঠকের কোনো ফলাফল রাতে পাওয়া যায়নি।

জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল গ্রামের বাসিন্ধা মছদ্দর আলীর ছেলে আব্দুল করিম ওরফে বেন্ডটিস করিম।স্থানীয় এলাকার লোকজন তাকে সীমান্তের রাজা হিসাবে চিনেন।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা যখন চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য।প্রতিদিন অন্তত কোটি কোটি টাকার ভারতীয় চোরাইপণ্য ঢুকছে সীমান্ত পথে।জৈন্তাপুর উপজেলা অন্ততম চোরাচালান রোড নিজপাট ইউনিয়নের ১২৮৬ হতে ১২৯৪ আন্তজার্তিক পিলার এলাকা।প্রতিদিন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত সোর্স বেন্ডিস করিমের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করছে।

জৈন্তাপুর উপজেলায় সীমান্ত এলাকায় ৫টি বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে।সীমান্তে বানের পানির মত ভারতীয় পণ্য প্রবেশ করলেও দায় সারা ভূমিকায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট বাহিনী গুলো।

অভিযোগ রয়েছে জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকাজুড়ে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।এসকল পণ্য প্রবেশের পথে নির্দিষ্ট হারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নির্ধারিত সোর্সম্যানদের কাছে দিতে হয় চাঁদা।

প্রচুর সম্পদ অর্জন করা বেন্ডিস করিমের হঠাৎ উত্থানের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।তার আলিশান চলাফেরা ও রাতারাতি বিপুল সংখ্যক গাড়ি বাড়ির মালিক বনে যাওয়া ব্যক্তিদের পিছনে কালো টাকার গন্ধ রয়েছে এমন অভিযোগ সুশীল সমাজের।

ইতোমধ্যে চোরাচালান নিয়ে জৈন্তাপুর বাজারে ২টি গ্রুপের মধ্যে হয়েছে মারামারি। অপরদিকে যে কোন মুহুত্বে চোরাচালানকে কেন্দ্রকরে উপজেলার ঘিলাতৈল,ফুলবাড়ী, টিপরাখলা এবং এবং কমলাবাড়ী এলাকায় খুনের মত ঘটনা ঘটতেপারে এমনটা আশংঙ্কা সচেতন মহলের।

বেন্ডিস করিম চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

অপরদিকে ৫টি ক্যম্পের মধ্যে চেরাচালানের অন্যতম রোড হিসাবে রয়েছে জৈন্তাপুর বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন ১২৮৬নং আন্তজার্তীক পিলার হতে ১২৯৬নং পিলার এলাকা। অন্যান্য এলাকারতুলনায় এই এলাকার সুযোগ সুবিধা ভাল।২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে বর্ডরের জিরো পয়েন্টএলাকায় বিনা বাঁধায় ঢুকতে পারে যে গাড়ী সমুহ।

নির্ধারিত টাকা সোর্সদের নিকটপরিশোধ করার পর পর কয়েক মিনিটের মধ্যে সীমান্তের ঘিলাতৈল,ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, গৌরীশংক, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল অন্যতম।

সুযোগ সুবিধা ভাল থাকায় উপজেলার এই রোড গুলোদিয়ে অন্তত ৮ হতে ১০কোটি টাকার ভারতীয় মটর সাইকেল, মোবাইল হ্যান্ড সেট, শাড়ী, মহিষ,গরু, কসমেট্রিক্স, হরলিক্স, ইয়াবা, ফেন্সিড্রিল, বিভিন্ন ব্যান্ডের অফিসার চয়েস মদ,আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, সুপারী, বাংলাদেশ হতে ভারতে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার বস্তা মটরশুটি, মটর ঢাল, নারী। সীমান্তে বসাবাসরত সাধারন নাগরিকরা জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত প্রায় ৩০জন সোর্সদের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০ হতে ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১০ হতে ১৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

সীমান্ত বাসিন্ধারা আরও জানান কিছু কিছু সময় অনেক চোরাকারবারী নিদিষ্ট সোর্সদের নির্ধারিত টাকা পরিশোধ না করলে ঐ চোরাকারবারীর নিয়ে আসা পণ্য আটক করা হয়।

বেন্ডিস করিম তার একটি চোরাচালান চক্র নিয়ে সীমান্ত এলাকায় ত্রাসের রামরাজত্ব কায়েক করছে। বিনিময়ে বেন্ডটিস করিম তার বাহিনীর লোকজন নিয়ে জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে দিনের আলোতে ও রাতের আধাঁরে টাকার বিনিময় বুঙ্গার মাল পাচার করে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন