ফেসবুকে তাদের দুজনের পরিচয়। এরপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এরই মধ্যে দুজন বিয়ে করেছেন। এরপর একসঙ্গে থেকেছেন প্রায় ৭ মাস। কিন্তু এখন সেই ভালোবাসার মানুষটি (স্বামী) তাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। এড়িয়ে চলছেন। তার (স্বামীর) খুঁজে চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থেকে সিলেটে ছুটে এসেছেন ওই নারী।গত দুদিন থেকে তিনি স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে জালালাবাদ থানার কালীবাড়ি এলাকায় ওই যুবকের (স্বামী) বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। ওই নারীর নাম রেহেনা আক্তার (৩৬)। তিনি চাঁদপুর জেলার হাজিগঞ্জ থানার শিদনা গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রেহেনা আক্তার জালালাবাদ থানাধীন সিলেট মহানগরীর কালীবাড়িস্থ বন্ধন ১৪-ডি এর বাসিন্দা মো. আবু হানিফের ছেলে মিছবাহুজ্জামান রুহিনকে স্বামী দাবি করে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছেন। রুহিন পেশায় একজন থাই মিস্ত্রি।
রেহেনা বলেন, ফেসবুকে রুহিনের সঙ্গে আমার পরিচয়। এরপর আমাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৮ মাস আগে কোর্টের মাধ্যমে আমরা দুজন বিয়ে করেছি। বিয়ের পর আমরা নারায়নগঞ্জের একটি বাসায় উঠি। রুহিন ওই বাসায় আমাকে রেখে সিলেটে আসতেন। কয়েক দিন পর সেখানে গিয়ে আমার সঙ্গে থাকতেন। এভাবেই ৭ মাস একসঙ্গে সংসার করেছি। কিন্তু কয়েকদিন পর রুহিন আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এখন স্ত্রী হিসেবেও স্বীকার করছেন না। এ জন্য আমি সিলেট তার বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। রুহিন যদি আমাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেন তাহলে আমি মরে যাব।’সিলেটটুডে২৪
বিয়ের কোনো কাবিন নামা আছে কিনা জানতে চাইলে রেহেনা বলেন,রুহিনের কাছে আছে। আমার কাছে কাবিনামার অস্পষ্ট কপি রয়েছে। এছাড়া ফোনের কল রেকর্ড (কথা বলা) ও মেসেজ আছে। এমনিক প্রেম চলাকালে এবং বিয়ের পরও রুহিনের পরিবারের সবার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। রুহিন বলেছে তার কথায় নাকি পরিবার আমাকে মেনে নিচ্ছে না।’
রেহেনা আরও বলেন, ‘আমার চাওার কিছু নাই। আমার একটাই দাবি তার সংসার করতে চাই। আমি তার নামে মামলা করেছি। তার মা আমার কাছে কান্নাকাটি করেছন। মা ও আত্মীয় স্বজনরা বলেছেন দুদিন সময় দিতে। আমি তাদের সময় দিয়েছি। কোনো সুবিচার পাইনি। পরে বলে ঘরে নেবে না। এখন তারা যদি আমাকে স্বাভাবিক মেনে নেয় তাহলে মামলা উঠিয়ে নেব।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রুহিনের মুঠোফোন কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। যার কারণে তার বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে এই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেছেন রেহেনা। পিটিশন মামলা নম্বর- ৩৩৫/২০২১। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছে।মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার সহকারী উপ পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পিবিআই থেকে রুহিনের বাড়ি-ঘরের ঠিকানা ও তার স্বভাব-চরিত্রের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে আমি তদন্ত করে এ বিষয়ে পিবিআই’র কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
এ ব্যাপারে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হুদা খান বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে রেহানা নামের এক নারী থানায় এসেছিলেন। তিনি বলেছেন রুহিন নামের এক ছেলেকে তিনি ভালোবেসে বিয়ে করেছেন। সেদিন তিনি রুহিনের বাসায় গিয়েছিলেন। তার (রুহিনের) মা-বোনেরা তাকে হুমকি দিয়ে বের করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গেছেন। আজ আবার তিনি এসেছেন এবং রুহিনকে স্বামী হিসেবে দাবি করছেন।ওসি আরও বলেন, ওই নারী আদালতে একটি মামলা করেছেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেবে। তদন্তে সত্যতা পেলে প্রয়োজনে আমরা আইনগতভাবে সহায়তা করব।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন