• ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কাঠ পাচারে হাতেনাতে ধরা খেয়েও, মামলায় নেই যুবলীগ নেতার নাম!

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২১
কাঠ পাচারে হাতেনাতে ধরা খেয়েও, মামলায় নেই যুবলীগ নেতার নাম!

জব্দ করা কাঠ ও পিকআপভ্যান। ইনসেটে যুবলীগ নেতা সুফিয়ান আহমদ।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বনবিট থেকে পিকআপভ্যান বোঝাই কাঠ পাচারকালে হাতেনাতে ধরা পড়েন পৌর যুবলীগ নেতা। জব্দ হয় কাঠ। এরপর ওই যুবলীগ নেতা পিকআপভ্যান গাড়িটি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নাম ভাঙিয়ে বিট কর্মকর্তাদের কাছে ছলছাতুরীর আশ্রয় নেন।

ওই নেতা পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুফিয়ান আহমদ। এ ঘটনায় বন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে কাঠ পাচারের ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার পরও যুবলীগ নেতা সুফিয়ান আহমদকে মামলায় অভিযুক্ত করেনি বন বিভাগ।

গাজীপুর বনবিট কর্মকর্তা বজলুর রহমান ও রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,গত শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গাজীপুর বনবিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সম্মুখ সড়কে কাঠ বোঝাই পিকআপভ্যান গাড়ি জব্দ করা হয়। এ সময় গাড়িতে অবস্থান করছিলেন পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সুফিয়ান আহমদ ও চালক চিনু মিয়া। গাড়িতে রাখা সেগুন কাঠ, গর্জন কাঠ ও রঙ্গি প্রজাতির ২৩.৫৩ ঘনফুট এবং ৬৪.৪ দৈর্ঘ্য ফুট বল্লি (বনজ) কাঠ জব্দ করেন বিট কর্মকর্তা বজলুর রহমান। কাঠসহ গাড়ি জব্দের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় বন বিভাগের মামলায় ওই নেতার নাম বাদ দিয়ে অজ্ঞাত মামলা করা হয়েছে।

বনবিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কাঠসহ গাড়ি আটকের পর থেকে সুফিয়ান নিজেকে যুবলীগ নেতার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতার নাম ভাঙিয়ে গাড়ি নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ ও বন আইন অমান্য করে গাড়ি ছাড়তে পারিনা। কাঠ পাচারের মামলায় অভিযুক্ত না করার জন্য সুফিয়ান বিভিন্ন নেতা ও জনপ্রতিনিধি দিয়ে তদবির করাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুফিয়ান স্থানীয় লস্করপুর বাজারে ফার্ণিচার ব্যবসার করে আসছেন। পৌর যুবলীগের পদ পাওয়ার পর থেকে প্রভাব খাটিয়ে ফার্ণিচার ব্যবসার জন্য স্থানীয় বনবিট থেকে বিভিন্ন সময় কাঠ পাচার করেন।

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা সুফিয়ান আহমদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ না করা কথা বলে জানান, ‘আমি এখন সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গাড়ি ছাড়িয়ে নেওয়ার অনুমতি পেয়েছি। কাঠ আমি ব্যক্তিগত কাজের জন্য নিচ্ছিলাম স্থানীয় মোকাম এলাকা থেকে।’

কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, ‘গাড়ির মালিক অপরাধ স্বীকার করে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবরে একটি আবেদন করেছেন। এখন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কাঠ পাচারে হাতেনাতে ধরেও মামলায় সুফিয়ানকে কেনো অভিযুক্ত করা হয়নি বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ সোমবার আমি এখানে যোগদান করেছি। বিষয়টি বিট কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। আইনের ঊর্ধে কেউ নন।’

এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু বকর সিদ্দিক মুঠোফোনে বলেন, ‘জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী কাঠ পাচারের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে জরিমানা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন