২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীর সঙ্গে প্রাইভেটকারে করে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক তরুণী (২০)। নতুন বিয়ে হয়েছে তাদের।
ফেরার পথে টিলাগড় এলাকায় মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গাড়ি থামিয়ে একটি দোকানে যান তার স্বামী। এই সময়ে ৫/৬ জন তরুণ তাদের জিম্মি করে প্রাইভেটকারসহ বালুচর এলাকায় এমসি কলেজের ছাত্রবাসে নিয়ে যায়।
এরপর স্বামীকে মারধর করে বেঁধে ওই তরুণীকে ছাত্রাবাসের ভেতরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। পরে স্বামীর টাকা পয়সা ও প্রাইভেটকার রেখে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে তরুণীর স্বামী ঘটনাটি পুলিশকে জানান। তবে অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের কর্মী হওয়ায় প্রথমে ছাত্রাবাসে প্রবেশে গড়িমসি করে পুলিশ। এই সুযোগে ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা। এরপর রাতভর ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জনের নামে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেপ্তারের পর তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আট জনের মধ্যে ছয় জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগপত্রে ঘটনার পর আসামিদের পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন পর্যায় প্রত্যক্ষ করা দুজনসহ ৫২ জনকে সাক্ষী রাখা হয়।
গত বছরে ৩ ডিসেম্বর চালঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন। তারা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিতি।
অভিযুক্ত ৮ জনকেই কলেজ কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও এই ৪ জনের ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন