ডাকাতি করা পেশা তাদের। তবে তারা সপ্তাহের কেবল শনিবারেই ডাকাতি করেন। যে শনিবার ডাকাতি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তার আগের দিন আবার আয়োজন করে সিলেটের একটি মাজারে এসে কৃতকর্মের জন্যে তওবাও করেন। এমনই নিয়ম মেনে গত আট বছর ধরে ডাকাতি করে আসছিলেন তারা।
জলিল মোল্লা। বাড়ি বরিশাল। গত বৃহস্পতিবার দুই সঙ্গীসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা রমনা বিভাগ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে জলিল মোল্লার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জলিল মোল্লা, রিয়াজ ও দীপু। গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত দুটি বিদেশি রিভলবার, ৫০টি গুলি, দুটি মোটরসাইকেল ও লুণ্ঠিত ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। চক্রের হোতা জলিল মোল্লা। তিনি এই ডাকাতির টাকা দিয়েই বাড়ি, গাড়ি ও জমি কিনেছেন।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জলিল মোল্লার এই চক্রের ১৪-১৫ জন সদস্য আছেন। এদের মধ্যে কেউ কারাগারে আছেন, কেউ পলাতক। চক্রটি শুধু ডাকাতির জন্য গাড়ি ও বিদেশি পিস্তল কিনেছে। তারা ছোটখাটো কিছু করে না, টার্গেট কোটি টাকা।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ২৮ আগস্ট, একজন ব্যবসায়ী মতিঝিলের নিহন মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে গাড়িতে যেতে থাকেন। এ সময় ছয়জন ডাকাত মোটরসাইকেলে ওই ব্যবসায়ীর গাড়ি অনুসরণ করে মৌচাক ফ্লাইওভারের ওপর গাড়িটির গতি রোধ করে। ডাকাতেরা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য প্রথমে দুটি ফাঁকা গুলি করে এবং হাতুড়ি দিয়ে গাড়ির দরজার কাচ ভেঙে ফেলে। এরপর গাড়ির পেছন থেকে একটি কালো ব্যাগে রাখা ৬০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত ২৯ আগস্ট ডিএমপির রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়।
এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, এই ডাকাত দলই ৪ সেপ্টেম্বর অপর এক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে মতিঝিল এলাকায় ২৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, তারা সাধারণত সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বিশেষ করে শনিবারকে ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। তারা গ্রুপ মানি এক্সচেঞ্জ এলাকায় পাহারা দিয়ে বেশি টাকা বহনকারীদের টার্গেট করে। টার্গেট করা ব্যক্তির তথ্য তাদের সহযোগী মোটরসাইকেলে অবস্থানকারী গ্রুপকে দেয়। সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছালে তারা ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সবকিছু ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন