সিলেটের ওসমানীনগরে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) এটিএম বুথ লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শামীম আহমেদ ওমানে থাকাকালেও ব্যাংকের এটিএম লুটে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সেখানে এটিএম বুথ লুটে জড়িত থাকায় তাকে ৮ বছর জেলও খাটতে হয় তাকে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
শামীম আহমদ ও সাফি উদ্দিন জাহিরের পরিকল্পনায়ই ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুরে ইউসিবি’র এটিএম বুথ লুট করা হয় বলে জানান তিনি।
এদের মধ্যে শামীমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও জাহিরকে সিলেট জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, শামীম আহমেদ ও সাফি উদ্দিন জাহির দীর্ঘদিন দুবাইয়ে থাকা অবস্থায় তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে ওঠে।
একসময় দুজনই দেশে ফিরে চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যায়। শেরপুরে এটিএম বুথ লুটের ঘটনাটিও শামীম ও জাহিরের পরিকল্পনাতেই বাস্তবায়িত হয়।
তিনি বলেন, শামীম এক সময় ওমানে থাকা অবস্থায় সেখানকার স্থানীয় ব্যাংকের এটিএম বুথ ডাকাতির ঘটনায় ৮ বছর কারাবাস করে।
শেরপুরের ঘটনার পরেও সে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে শামীমের বাসা তল্লাশি করে ঘটনায় ব্যবহৃত তার পালসার মোটরসাইকেল এবং পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর পশ্চিম বাজারের ইউসিবিএলের এটিএম বুথে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভোররাতে ডাকাতির এ ঘটনা ঘটে। চার মুখোশধারী বুথে ঢুকে নিরপত্তাকর্মীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ২৪ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ টাকা লুট করে।
বুথের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ডাকাতদের মধ্যে তিনজনের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল, একজনের মাথায় ছিল টুপি।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় মামলা করলে আসামিদের গ্রেপ্তারে ওসমানীনগর থানা পুলিশ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ইউনিটের কাছে সহযোগিতা চায়।
তদন্তের পর ঢাকা থেকে নূর মোহাম্মদ নামের এক দর্জিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হবিগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে ডাকাতির ঘটনায় শামীম আহম্মেদ ও তার সহযোগী আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুধবার ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি উত্তর) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এটিএম ব্যাংক লুটের ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে শামীম আহমেদ, নুর মোহাম্মদ সেবুল ও আব্দুল হালিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ ৮ হাজার টাকা, দুইটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, একটি প্লায়ার্স ও মাথায় ব্যবহারের তিনটি কাপড়ের টুকরো জব্দ করা হয়েছে।
এই তিনজন ও সিলেট জেলা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সাফি আহমদ জাহিরের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে তাদের রিমান্ডে পাঠান বিচারক মাহবুবুল হক ভুঁইয়া।
এরআগে সংবাদ সম্মেলনে সিলেটের পুলিশ সুপার জানান, বুধবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ থেকে সাফি উদ্দিন জাহিরকে গ্রপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন পুলিশ সুপার বলেন, ‘ব্যাংক এটিএম লুটের ঘটনা দেশে বিরল।
ব্যাংকের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে এ ধরনের লুট আমাদের বিস্মিত করছে। এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন