• ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে সংঘর্ষ-ভাংচুর, অবরোধ

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১
নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালে সংঘর্ষ-ভাংচুর, অবরোধ

সিলেট নগরের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে।

বুধবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফুলজান বেগম (৭৩) নামে এম নারী মারা যান।

এরপর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে হাসপাতালটিতে ভাংচুর চালান রোগীর স্বজনরা। পরে হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে স্বজনদের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে দুই পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই সংঘর্ষ থামায়।

বিকেলে বিক্ষোব্দ স্বজনরা নগরের পাঠানটুলায় অবস্থান নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন।

মারা যাওয়া ফুলজান বেগম সিলেট জেলা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ শ্রমিক সমিতির সহ-সম্পাদক মাহবুব আলমের মা। সড়ক অবরোধকালে শ্রমিক সমিতির সদস্যরাও যোগ দেন। প্রায় একঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ইসলামাবাদ এলাকার ফুলজান বেগম দিন পাঁচেক আগে পেটে টিউমার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। গত সোমবার তার অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তিনি হার্ট অ্যাটাক করলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুরে তিনি মারা যান।

নিহতের ছেলে মাহবুব আলমের অভিযোগ, তার মাকে ভুল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এছাড়া তিনদিন আগে মারা গেলেও তাকে তিন দিন আইসিইউতে রেখে বিল নেওয়া হয়েছে।

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বুধবার দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফুলজান বেগমের মৃত্যুর ঘোষণা দিলে বিক্ষোব্দ হয়ে ওঠেন স্বজনরা। তারা হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় স্বজনরা হাসপাতালটির আইসিইউ কক্ষ ও গাড়ি ভাংচুর করেন। এসময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

এদিকে, হাসপাতাল এলাকা পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর রোগীর স্বজনরা পাঠানাটুলা এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেন। তাদের সাথে যুক্ত হয় সিলেট জেলা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ শ্রমিক সমিতি। তারা সড়কে এলোপাতাড়িভাবে ট্রাক ফেলে সড়ক অবরোধ করে দেন।

সড়ক অবরোধকালে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে তাদেরকে মারধর করার অভিযোগ তোলেন।

বিকেল ৪ টা থেকে এই অবরোধ প্রায় এক ঘন্টা স্থায়ী ছিলো। এসময় সড়কের দুপাশে তীব্র যানজট লেগে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

নগরের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার স্বজন ও হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং কিছু ভাঙচুর হয়। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এরপর সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।

এ ব্যপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. আবেদ হোসেন বলেন, ওই নারী পেটে টিউমার নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এটা গাইনি সমস্যা। তবে সোমবার অস্ত্রোপাচার শুরুর পর দেখা যায়, টিউমারটি তার নাড়িভূড়ির মধ্যে। পরে জেনারেল সার্জনরা এই অস্ত্রোপচার করেন।

অধ্যক্ষ বলেন, অস্ত্রোপচারের পর পর্যবেক্ষন কক্ষে থাকা অবস্থায় ওই নারী হার্ট অ্যাটাক করেন। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি শঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ছিলেন। যা প্রতি মূহূর্তে আমরা রোগীর স্বজনদের জানিয়েছি।

তিনদিন আগেই নারী মারা গেছেন, স্বজনদের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবি করে তিনি বলেন, এভাবে রোগির মৃত্যুর পর যদি অভিযোগ তোলা হয় এবং ভাংচুর চালানো হয় তবে তো চিকিৎসকরা আর জটিল কোনো রোগির চিকিৎসায় উৎসাহ পাবেন না। বরং রোগির অবস্থা শঙ্কটাপন্ন হলে এড়িয়ে
যাবেন।

তিনদিন আগেই নারী মারা গেছেন, স্বজনদের এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবি করে তিনি বলেন,এভাবে রোগির মৃত্যুর পর যদি অভিযোগ তোলা হয় এবং ভাংচুর চালানো হয় তবে তো চিকিৎসকরা আর জটিল কোনো রোগির চিকিৎসায় উৎসাহ পাবেন না।

বরং রোগির অবস্থা শঙ্কটাপন্ন হলে এড়িয়ে
যাবেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন