অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আজ।
কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তন আর নানা হিসেব নিকেষ শেষে আজ রোববার থেকে খুলতে যাচ্ছে স্কুল ও কলেজ।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষনা করা হয়।
এরপর দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ ছিলো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেড় বছর পর আজ থেকে আবার স্কুল-কলেজে যাবে শিক্ষার্থীরা।
আবার শিক্ষার্থীদের পদভারে মুখরিত হবে ক্যাম্পাস।
এদিকে, সরকারের তরফ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা দেয়ার পর নানা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বরণের প্রস্তুতি নিয়েছে সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্টান।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি ক্লাসরুম সাজানো হয়েছে নানা রঙের কারুকার্য দিয়ে।
পাশাপাশি হাত ধোয়ার জন্য বসানো হয়েছে বেসিন। রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুম সুবিধাসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা পদক্ষেপ।
খুলে রাখা হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রও।
শনিবার সিলেট নগরীর বেশকয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্টান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সরকারি কিন্ডারগার্টেন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রসময় মেমোরয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়,স্কুলের প্রতিটি কক্ষ বিভিন্ন রকমের রং দিয়ে সাজানো হয়েছে।
প্রতিটি কক্ষে বসার জন্য ব্রেঞ্চিতে সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী আসন বিন্যাস করা হয়েছে।
সেনিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতেও দেখা গেছে। কর্মচারীরা ধোয়ামোছার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কেউ ঝাড়ু দিচ্ছেন,কেউ বেঞ্চ পরিষ্কার করছেন। শিক্ষকরা একে অন্যের সঙ্গে কথা বলে প্রস্তুতিমূলক কাজ করছেন।
সরকারি কিন্ডারগার্টেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাবো। ভালো লাগা কাজ করছে। আমাদের অস্তিত্ব শিক্ষার্থীদের নিয়ে। ওদের এই সুন্দর কচি মুখগুলো দেখবো। ওদের সঙ্গে আমাদের ভাব বিনিময় হবে।
রসময় মেমোরয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। কাল থেকে আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে পাবো। আশাকরি শিক্ষার্থীরা নিয়মিত স্কুলে আসবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর সংক্রমণ পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে জুন মাসের শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ দিয়েও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রাণঘাতী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সে পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় সরকার। জুলাই থেকে বিধিনিষেধ আরও বাড়ে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন