• ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঘুষ, দুর্নীতির আখড়া সিলেট পাসপোর্ট অফিস

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৪, ২০২১
ঘুষ, দুর্নীতির আখড়া সিলেট পাসপোর্ট অফিস

বিশেষ সংবাদদাতা :: সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতি নিত্য দিনের কান্ড কারখানা।

দুর্নীতি ও পাসপোর্ট অফিস যেন সমার্থক। একটি বলতে আরেকটি বুঝায়। সর্ব ক্ষেত্রেই ভোগান্তি আর ভোগান্তি।

দালালদের খপ্পর ও ট্রাভেলস এজেন্সির দৌরাত্ম তো আছেই। দালাল ও মার্কা ছাড়া ফাইল দাখিল করলেই ভুল আর ভুল। কিন্তু মার্কা যুক্ত থাকলে ভুলটাই অটো সংশোধন হয়ে যায়।

সূত্রে প্রকাশ, সিলেট পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম চরম। সত্যায়িত করার সিলসহ সবই আছে দালালদের কাছে। দরকার শুধু টাকা। দালালদের কাছে পকেট ভর্তি টাকা দিলেই নিমিষে হয়ে যায় কাজ।

না হয়- ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ফাইল জমা দেওয়া যায় না। নিয়মানুসারে আবেদন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পাওয়া যায় না পাসপোর্ট। প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় সিলেটে পাসর্পোট অফিসে দালালদের ব্যবসাও রমরমা। প্রবাস ফেরত নাগরিকরা জামেলা করতে চান না, তাই দালালরা যাই বলে তাই করতে বাধ্য হন।

পাসপোর্ট আবেদন জমা করতে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যাক্তি বলছেন, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। প্রথমে গেইটের বাইরে প্রায় ১ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকি।

পরে গেইট খুলে দিলে ফাইল চেক আপ, রোহিঙ্গা পরীক্ষা দিতেও আরো ২ ঘন্টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। পাসপোর্ট জমাদানকারীরা বলছেন, এখানে জনবল সংকট। প্রতিটি লাইনে ৪০০-৫০০ জন লোক দাঁড়িয়ে আছেন কিন্তু তাদেরকে মাত্র এক জন লোক সেবা দিচ্ছেন।

যার কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়। গত ৩১ এপ্রিল পুরানো দুইটি পাসপোর্টের আদলে পাসপোর্ট নবায়ন করতে আবেদন দাখিল করেন একজন সিনিয়র সাংবাদিক।

অতিরিক্ত টাকা দিয়ে দালাল এজেন্সির মার্কা নেননি তিনি। দালালদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা তার কাছে মোটা অংকের টাকা চাইলে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন। ফলে আজ চার মাস ধরে তার আবেদন এপ্রেুাভ পেন্ডিং করে রাখা হয়েছে।

জানা যায়, পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি ফাইল জমা দেয়া যায় না। নানা অজুহাতে ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ভূল না থাকা স্বত্ত্বেও ভূলের অজুহাতে ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া চেকআপ সেক্টর থেকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ট্রাভেল ব্যবসায়ী বলছেন, কতিপয় ট্রাভেলস এজেন্টদের সাথে আঁতাত করায় পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি ফাইল জমা দেয়া যায় না। ওই সব এজেন্টদের কোড ফাইলের উপর লেখা না থাকলে,ফাইল ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

যার ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ট্রাভেল ব্যবসায়ীরাও ভোগান্তিতে পড়েন। ধরনা দিতে হয় ট্রাভেল এজেন্টদের কাছে।

এদিকে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ায় গেল ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেট পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযানের পর দুদক জানায়- সিলেটে কতিপয় ট্রাভেলস ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে দালাল চক্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এছাড়াও নানা দুর্নীতির প্রমাণ পায় দুদক।

এরপরও থেমে নেই পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি।

দিনের পর দিন,মাসের পর মাস মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।সুত্র ক্রাইম সিলেট

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন