নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেট জাতীয়তাবাদী দলের ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত মুখ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবরে লিখিত এক চিঠিতে এ পদত্যাগ করেন।
এর আগে বুধবার রাতে দল থেকে পদত্যাগের ব্যাপারে প্রেস বিফ্রিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন তিনি।
এ সময় এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান বলেন,
আমি ১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্রদল দিয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করি। তখন সিলেটে বিএনপির সাথে যুবদলের যে অংশটি শক্তিশালী ছিল সেই অংশে ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক।
মূলত তার অনুপ্রেরণাতেই আমি ছাত্রদলে যোগ দেই। এবং বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সেই সময়ে ছিলেন ছাত্রদলের দায়িত্বে। তাদের দু’জনের অনুপ্রেরণা থেকেই ছাত্রদলে যোগ দেই।
তাঁর মতামত ও পরামর্শ উপেক্ষা করে সদ্য ঘোষিত সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি অনুমোদন দেওয়ায় এডভোকেট সামসুজ্জামান জামান এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
প্রেস বিফ্রিংয়ে জামান বলেন,১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে বিএনপিতে যুক্ত হই।
বিএনপির দুর্দিনে এই দলকে প্রতিষ্ঠা করতে জীবনের সোনালী সময় দিয়েছি। সাধ্যমত অর্থও ব্যয় করেছি।
সীমাহীন প্রতিকূলতার মাঝে দলকে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করেছি। আমি কখনোই হালুয়া রুটির ভাগ নেইনি, কিংবা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করিনি।
অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হলো গতকাল ১৭ আগস্ট সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষিত হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সেচ্ছাসেবক সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষিত হলো আমার মতামত ও পরামর্শ উপেক্ষা করে।
সর্বোপরি যেসব সহযোদ্ধা আন্দোলন করতে গিয়ে জীবন বাজি রেখেছিল,গুলিবিদ্ধ হয়েছিল,এমনকি সমাজ-সংসার থেকে বিতাড়িত হয়েছিল।
তাদেরকে চরমভাবে উপেক্ষা করে উপহাসের পাত্রে পরিণত করা হলো।
তিনি আরো বলেন, আজকে অত্যন্ত ব্যথিত চিত্তে জানতে ইচ্ছে করে আপনার দলে নেতৃত্ব পেতে হলে যোগ্যতার মাপকাঠিটা কি?
যারা দেশ ও দলকে ভালবাসে,জীবন বাজি রাখে, দুর্দিনে যারা বিশ্বস্ত থাকে,বন্দুকের নলের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায়,কমিটিতে তাদের পদ পাওয়া উচিত, নাকি যারা লবিং-তদবির অথবা বিশেষ ব্যবস্থায় সবকিছু হাসিল করে তাদের পাওয়া উচিত?
যে দলটাকে ভালবাসে তিল তিল করে বিনির্মাণ করেছিলাম আজকে সেই দলে আমরাই অনাহুত।
আপনারা প্রায়শই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন,রাষ্ট্রের কাছে ন্যায় ইনসাফের দাবি তুলেন কিন্তু নিজের অন্তর আত্মাকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখবেন কি-আপনারা আপনাদের নিজেদের কর্মীদের ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন কিনা?
বিগত ৩৬টি বছর আপনার দলকে নিরলস সেবা দিয়ে গেছি। হযরত শাহজালাল(রহ.)এর পূণ্যভূমির মানুষ জানে- আমরা কতটা দুঃখের সাগর পাড়ি দিয়েছি।
আজকে আমার সহযোদ্ধাদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ আপনারা প্রদর্শন করলেন অবশ্যই প্রকৃতি এর প্রতিবিধান করবে বলে আমার বিঃশ্বাস।
মহাসচিব বরাবরে লেখা ওই চিঠিতেও তিনি এসব উল্লেখ করেন।
আমার জীবনের ৩৬টি বছর আপনাদেরকে সাদকা হিসেবে দান করে দিলাম বলে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন