ছাতক সংবাদদাতা :: সৎ মায়ের সহযোগীতায় মেয়েকে ধর্ষণ করলো ছাতকের মাহমদ আলী। সে কালারুখা ইউনিয়নের বোবরাপুর গ্রামের আছমত আলীর পুত্র। ভিকটিমের সৎ মা জুনু বেগমের সাথে ধর্ষক মাহমদ আলীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে।
গত ৩রা জুন ভিকটিমের সৎ মা জুনু বেগম স্বামী সিরাজ মিয়াকে চায়ের সাথে নেশা পান করিয়ে মেয়েকে জোরপূর্বকভাবে সুনামগঞ্জ সদর থানার সুরমা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর সদরগড় গ্রামের পিত্রালয় হতে সিলেটে নিয়ে যায় এবং সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে মেয়েকে তালাবদ্ধ করে রেখে মাহমদ আলীর দ্বারা জোরপূর্বক ধর্ষণ করায়।
এ ঘটনায় ইব্রাহিমপুর পশ্চিমহাটি গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে ও ভিকটিমের খালা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধন আইন ২০২০ এর ৭,৯ (১) ও ৩০ ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে, ১৯৪/২০২১নং নারী ও শিশু নির্যাতন (পিটিশন) মোকদ্দমাটি দায়ের করেন। মামলায় বিজ্ঞ আদালত তদন্তপূর্বক এফআইআরক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সদর থানার পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মামলায় ধর্ষক মাহমদ আলী(৩৫) ও সহযোগী সৎ মা জুনু বেগম(৩৫)সহ অজ্ঞাত লোকদেরকে আসামী করা হয়। ঘটনার পর থেকেই জুনু পিত্রালয়ে এসে আত্মগোপন করে।
জানা যায়, ভিকটিমের মা মারা গেলে জুনু বেগম সিরাজকে ব্ল্যাকমেইল ইব্রাহিমপুর সদরগড় গ্রামে শ্বশুড়ালয়ে চলে আসে। ভিকটিম নানা-নানীর সংসারে বড় হয়। ৯ বছর বয়সের সময় নান- নানীর কাছ থেকে সিরাজ তার মেয়েকে নিজের কাছে নিয়ে যান। জুনু বেগম ৯ বছর বয়স থেকেই ভিকটিমকে দিনের পর দিন অকথ্য নির্যাতন চালায়।
এ ঘটনায় ইব্রাহিমপুর সদরগড় গ্রামে জুনু বেগমের বিরুদ্ধে একাধিকবার সামাজিক সালিশ হয়। জুনু বেগম খুব অসৎ চরিত্রহীনা, মাদক ও নারী ব্যবসায়ী মদ্যপায়ী মহিলা। সে স্বামীর চোখ ফাকি দিয়ে ১৫ দিন পরপরই পিত্রালয়ে যাওয়ার কথা বলে সিলেট শহরের বিভিন্ন হোটেলে গিয়ে দেহ ব্যবসায় লিপ্ত হয়।
এছাড়া পরিবার ও গ্রামের প্রতিবাদী লোকজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলার হুমকী দিয়ে অনেকের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের ঘটনায়ও জড়িত রয়েছে সে। আসামী জুনু বেগমকে গ্রেফতার করলেও ধর্ষক মাহমদকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
জুনু বেগমকে গেফতারকালে পুলিশের উপর জুনুর ভাই হুশিয়ার আলী হামলা চালায়। শত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও পুলিশ রাতের অন্ধকারে আসামীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে এবং পরদিন তাকে সুনামগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
বুধবার(২৮ জুলাই) আমলগ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইসরাত জাহানের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় ধর্ষনের শিকার অসহায়-এতিম মেয়েটি।
ভিকটিমের পক্ষে বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট চান মিয়া ও এডভোকেট মাসুদুল হক সর্দার সোমেল।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোঃ সহিদুর রহমান ও ছাতক থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন ধর্ষন মামলার আসামী জুনু বেগমকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষনকারীর সহযোগী জুনু বেগমকে আমরা গ্রেফতার করেছি। মূল আসামী ধর্ষক মাহমদ আলীকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন