• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জিন্দাবাজার এলাকায় হোটেল রাজমণীতে প্রকাশ্যেই চলছে রমরমা দেহব্যবসা

sylhetnewspaper.com
প্রকাশিত জুন ১৭, ২০২১
জিন্দাবাজার এলাকায় হোটেল রাজমণীতে প্রকাশ্যেই চলছে রমরমা দেহব্যবসা

বিশেষ প্রতিবেদনঃঃ সিলেট নগরের জিন্দাবাজারস্থ আবাসিক হোটেল রাজমণী। হোটেল নামে মিনি পতিতালয় ও নারী ভিকটিমদের অন্ধকার বন্দীশালা। দেদার-ছে এ হোটেলে চালানো হচ্ছে জমজমাট সুন্দরী নারী ও পতিতা ব্যবসা।অভিযোগ পাওয়া গেছে-দেশের নানা স্থান থেকে নিয়ে এসে এই হোটেলে উঠানো হয় বিভিন্ন বয়সের রূপসী তরুণী ও কিশোরীদের। এমনকি অপহরণের শিকার তরুণীদেরও।

তার পর হোটেলের বিভিন্ন কক্ষে এদের দিয়ে রাতদিন চালানো হয় অবৈধ যৌনকর্ম। করা হয় পার্টটাইম ও পার্টনাইট দেহব্যবসা। ম্যানেজ করতে দৈনিক ও সাপ্তাহিক বখরা দেয়া হয় প্রশাসনের অসাধু কতিপয় কর্তাব্যক্তি ও সাংবাদিক নামধারী মহল বিশেষকে। হোটেলের পরিচালক প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযানের ক্ষেত্রে হোটেলটি থাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ।

তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রেমিক-প্রেমিকা,গার্লফেন্ড-বয়ফেন্ড এবং ছাত্র-ছাত্রীরা এই হোটেলে চড়াদামে রেষ্টরুম ভাড়া করে অবৈধভাবে মিলিত হয়ে থাকে। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এই হোটেলে দৈহিক মিলনে মেতে ওঠে। দরদামে এই হোটেল রাজমণীতে রমণী ও তরুণীদের নিয়ে রাত কাটানোরও সুযোগ পায় বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির কামুকরা। এভাবেই দেহব্যবসায়ী তরুণী ও পতিতাদের দিয়ে এই হোটেলে অনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে সিলেটের সামাজিক ঐতিহ্য বিনষ্টের পাশাপাশি যুবসমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগে আরো প্রকাশ, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিয়ে ও চাকুরি প্রলোভনে ফুসলিয়ে বা অপহরণ করে নিয়ে আসা কিশোরী-তরুণী ও যুবতীদের জিন্দাবাজার পয়েন্টের কাকলীচান কমপ্লেক্সে হোটেল রাজমণী অবস্থিত।হোটেল রাজমণীর বিভিন্ন কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দিয়ে চালানো হয় রমরমা দেহব্যবসা।

এছাড়া রাতে বন্দী করে রাখা কিশোরী ও তরুণীদের ভাড়ায় হোটেলের বাইরে ধনাঢ্য কামুকদের বাসা ও বাংলো বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার একই কায়দায় পরদিন তাদের ফিরিয়ে আনা হয় হোটেল রাজমণীতে। অনেক সময় হোটেল রাজমণীতে প্রেমিক যুগল এবং বয়ফেন্ড-র্গালফ্রেন্ডদেরকে নাম-ঠিকানা এন্ট্রি ছাড়া রুম ভাড়া দেওয়া হয় এবং আদায় করা হয় দ্বিগুন-তিনগুন টাকা। ফলে সরকার বঞ্চিত হয় রাজস্ব প্রপ্তি থেকে। কয়েকমাস পূর্বে এক আইওয়াশ অভিযানের মাধ্যমে হোটেল রাজমণী থেকে পতিতা ও খদ্দেরসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি পুলিশ। এর পর থেকে অজ্ঞাতকারণে আর কোপন অভিযান হয়নি পুলিশের। ফলে হোটেলের পরিচালক বেপরোয়া হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে নারীদেহের জমজমাট ব্যবসা।

নারী ব্যবসার পাশপাশি রাতে জমে উঠে মাদক ও জুয়ার আসরও। সেবন করা হয় গাঁজা, ফেনসিডিল,ইয়াবা এবং দেশী বিদেশী বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ।এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা জানান-পুলিশের নাকের ডগায় হোটেল রাজমণীর অনৈতিক এ ব্যবসা সত্যিই উদ্বেগজনক। এতে করে সিলেটের তরুণ ও যুবরা বিপথগামী হচ্ছে। অপকর্মের টাকার জন্য বেড়ে চলেছে চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ। সবমিলিয়ে নগরের পশ্চিম জিন্দাবাজারস্থ আবাসিক হোটেল রাজমণীতে সুন্দরী নারী, পতিতা, মাদক ও জুয়ার আস্তানা জমজমাট হয়ে উঠেছে।

মাজে মধ্যে  অভিযান হলেও মুল হোতাদের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মুল হোতাদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পতিতা ব্যবসায়ী চক্রদীর্ঘদিন ধরে এই সিন্ডিকেট ও দালালের মাধ্যমে অসাধু নেতৃত্বে দেদারসে পতিতা ব্যবসা চালিয়ে এলেও থানা পুলিশ রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করছে। অপরদিকে পতিতা ব্যবসার পাশাপাশি হোটেলে চলছে জুয়ার জমজমাট আসর। এ জুয়ার আসরে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এর পেছনে কাজ করছে শহরের চিহ্নিত একাধিক জুয়াড়িচক্র। এসব চক্রের সদস্যদের আশ্রয় দিয়ে থাকে রাজনৈতিক নেতা ও সন্ত্রাসীরা। এসব জুয়াড়িদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

অভিযোগের ব্যাপারে হোটেলের যোগাযোগ করা হলে হোটেল স্টাফ পরিচয়দানকারী মোঃ আশিক ইকবাল এর কাছ থেকে হোটেল ম্যানেজারের নাম আব্দুল হান্নান,পরিচালকের নাম আলম মিয়া ও ইসমাইল মিয়া বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু ফরহাদের সাথে শনিবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান-হোটেল রাজমণীসহ থানা এলাকাধীন সকল আবাসিক হোটেলের প্রতি থানা পুলিশের কড়া নজরদারী রয়েছে। অনৈতিক কর্মকান্ডের তথ্য অভিযোগ পাওয়া গেলেই পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন