নিউজ ডেস্ক::সিলেট শহরতলীর বালুচরে গ্যাস লাইনের ওপর গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ হয় নি একমাসেও। জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কথা জনসাধারণের সামনে বললেও তা কার্যকর হয় নি। ফলে ক্ষুব্ধ বালুচারবাসী।
হাইটেক পার্কের গ্যাস সংযোগের জন্য সম্প্রতি গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপন শুরু করে কর্তৃপক্ষ। গ্যাসের নিজস্ব ভূমিতে সঞ্চালন লাইন স্থাপন কাজের শুরু থেকেই অনিয়মের অভিযোগ উঠে। নকশা বহির্ভূতভাবে কাজ করার অভিযোগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আলী আহমদসহ জনসাধারণ কাজ আটকে দেন। এছাড়া অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ না করায় ক্ষুব্ধ হন সাধারণ মানুষ। ক্ষোভের মুখে এক সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের
আশ্বার দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
আইনানুযায়ী গ্যাস সঞ্চালন লাইনের উভয়পাশে ১০ ফুট করে ২০ ফুট ভূমির মালিকানা গ্যাস কর্তৃপক্ষের। এ ভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা করা
নিষিদ্ধ। কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে বালুচর এলাকায় ভূগর্ভস্থ গ্যাস সঞ্চালন লাইনের উপর দিয়েও অনেক স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। সিলেটের জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কেস নং ১৭/১৯৮৫-৮৬ এর প্রেক্ষিতে বাধ্যতামূলক অধিগ্রহণের নিমিত্তে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল অধ্যাদেশ, ১৯৮২ এর ১০ ধারা অনুসারে ক্ষতিপূরণ প্রদান সাপেক্ষে সাদিপুর
প্রথম খন্ড মৌজায় জেএল ৯৩ এ মোট ১৯টি দাগে ১ একর সাড়ে ১৩ শতক ভূমি অধিগ্রহণ করে। পরবর্তীতে অধিগ্রহণকৃত ভূমির মধ্য দিয়ে
জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ তাদের ভূগর্ভস্থ গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপন করে গ্যাস সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করে। ধীরে ধীরে প্রভাবশালীরা দখল করতে শুরু করেন জালালাবাদ গ্যাসের অব্যবহৃত ভূমি। এর মধ্যে ৭টি দাগের ওপর গড়ে তোলা
হয়েছে বালুচর নয়াবাজার। পরবর্তীতে প্রভাবশালী চক্র বাজারে দোকানপাট ও অস্থায়ী স্থাপনা তৈরি করে নিয়মিত ভাড়া উত্তোলন করতে থাকে।
এছাড়াও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমিতেও বিভিন্ন স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। আর এ সকল স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই গ্যাস কর্তৃপক্ষ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করেছেন।
বালুচরের বাসিন্দা মো.জালাল আহমদ জানিয়েছেন, নয়াবাজারে জালালাবাদ
গ্যাসের মালিনাকাধীন ভূমিতে অবৈধভাবে বাজার গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারি ভূমিতে বাজার দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি চিহ্নিত ভূমিখেকো চক্র দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভাড়া আদায় করছে। তারা গত কয়েক বছরে অর্ধকোটি টাকার মতো ভাড়া বাণিজ্য করেছে। তারা গ্যাস কতর্ৃপক্ষকে ম্যানেজ করে অবৈধ স্থাপনা বহাল রেখেছে। এ ব্যাপারে তিনদিন আগে আমি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। জালালাবাদ গ্যাস কতর্ৃপক্ষ এক সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের আশ্বাস দিলেও তা একমাসেও বাস্তবায়ন হয় নি।
এ ব্যাপারে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানান, কয়েকদিন আগেও গ্যাসের মালিকানাধীন ভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার একটি প্রকল্পে গ্যাস সরবরাহের জন্য অবৈধ দখলদারদের নিজ দায়িত্বে দখল ছেড়ে দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। অনেকের অবৈধ দখল ছাড়ছেন না। যারা নোটিশ পাওয়ার পরও অবৈধ দখল ছাড়ছেন না, তাদের
উচ্ছেদের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন