সিলেট নগরীতে কোনো রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দিবেন না সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। সিটি করপোরেশনের কর্মচারী ও রিকশাচালকদের মধ্যে বুধবার সংঘর্ষের পর এমন কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সিসিক।
সিটি করপোরেশন এলাকার সকল ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (৩ জুন) থেকে রাস্তা ও অলি-গলিতে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চলবে বলে জানা গেছে।
জানিয়েছেন সিসিকের ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো.আজাদুর রহমান আজাদ।
বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে সিসিক কর্মচারী ও নগরীর ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের মধ্যে আধাঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এসময় দুপক্ষই ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। সিসিকের ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযানের জের ধরে এ সংঘর্ষ ঘটে।
গত ৩ দিন থেকে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে সিটি করপোরেশন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুরে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে কোর্ট পয়েন্টসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বেশ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়।
খবর পেয়ে বেলা ২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরভবনের সামনে কামরান চত্বরে রিকশাচালকরা অবস্থান নিলে সিসিকের প্রধান ফটক লাগিয়ে দেন কর্মচারীরা। এসময় রিকশাচালকরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং সংঘর্ষ বাঁধে। পরে সিসিকের কর্মচারীরাও নগরভবনের গেটের ভেতর থেকে পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। সংঘর্ষের সময় রিকশাচালকরা সিসিকের ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে তৎক্ষণিক কোতোয়ালি থানা ও বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে এবং দুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংঘর্ষের পর নগরভবনে বিকেল ৪ টায় সিসিক কাউন্সিলরদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সভায় রিকশাচালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও সিদ্ধান্ত হয়- বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর প্রতিটি রাস্তায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান চালানো হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদী, কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস লিপন, কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ সেলিম অ্যাডভোকেট, কাউন্সিলর মো. ইলিয়াসুর রহমান, কাউন্সিলর মো. ছয়ফুল আমীন বাকের, কাউন্সিলর এস এম শওকত আমীন তৌহিদ, কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ, কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, কাউন্সিলর মো. সিকন্দর আলী, কাউন্সিলর আফতাব হোষেন খান, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রেবেকা সুলতানা ও রেবেকা আক্তার লাকী।
সভা শেষে কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। এদের বিরুদ্ধে গত পরশু থেকে অভিযানে নেমেছে সিসিক। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আজ (বুধবার) নগরভবনে হামলা করে অন্তত ৫টি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কয়েকজনকে আহত করেছে।
তিনি বলেন, আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে- বৃহস্পতিবার থেকে আমরা কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে প্রতি ওয়ার্ডে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলবে। যাতে একটি অবৈধ রিকশাও নগরীতে চলতে না পারে।
কাউন্সিলর আজাদ আরও জানান, নগরীর বৈধ রিকশার মধ্যে যেগুলোর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ, সেগুলোর চালক-মালিকদের ৩০ দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। এক মাস পর এসব রিকশার বিরুদ্ধেও কঠোর অভিযানে নামবে সিসিক।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন