সিলেটে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। সরকারি কোষাগারের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রতিরাতে ও ভোরে চোরাকারবারিরা ভারত সীমান্ত থেকে ভারতীয় গরু, অবৈধ পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাবার জন্য সিলেটে শহরে ঢুকাচ্ছে। সীমান্ত হতে সিলেট শহরে ঢোকার প্রধান দুটি সড়ক হল তামাবিল রোড ও এয়ারপোর্ট রোড।
রাত বাড়ার সাথে সাথেই এই সড়ক দিয়ে সিলেটে ঢোকে ভারতীয় গরু সহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য। এসব পণ্য সংরক্ষন করার জন্য সিলেটে গোডাউনও তৈরী করা হয়েছে। এসব গোডাউনের মালিকরা মুলত চোরাকারবারি। তারা আবার গডফাদার সেজে এসব নিয়ন্ত্রনও করছে।
সূত্র জানায়, চোরাকারবারিরা সীমান্ত থেকে নগরে আসার পথে সড়কে যদি প্রশাসনের কোনো সংস্থা এসব পণ্য আটক করে তাহলে তরিঘরি করে এসব অবৈধ পণ্য ছাড়িয়ে আনতে তৈরি করেছে একটি সিন্ডিকেট।
এই সিন্ডিকেট আটক হওয়া চোরাইপণ্য থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য এসব পন্য বৈধ বলে থানায় গিয়ে তদবিরও করছে!
এই সিন্ডিকেটের প্রধানই হচ্ছে ভ্যানগাড়ি চালক থেকে অবৈধ পথে কোটিপতি হওয়া সিলেটের আলোচিত চোরাকারবারি আলী হোসেন সরকার ওরফে পলিথিন আলী।
তার সিন্ডিকেটের কাজ হচ্ছে- ভারত থেকে অবৈধ পণ্য দেশের ভিতরে আসার পর এই পণ্যের ”জাল চালানপত্র” করা।
এছাড়াও যদি অন্যকোনো চোরাকারবারিরা অবৈধ পণ্য শহরে ঢুকায় তাহলে তাদের কাছ থেকে প্রশাসনের নাম ভেঙে চাঁদা আদায় করে।
পলিথিন আলীর সাথে এই সিন্ডিকেটে আছে সিলেটে প্রশাসনের হাতে একাধিকবার আটক হওয়া সালেহ আহমদ ও দক্ষিণ সুরমার জাতীয় পার্টির নেতা হোসেন আহমদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিন্ডিকেটটি সিলেট প্রশাসনের জেলা ডিবি, মেট্রো ডিবি, র্যাব ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে তামাবিল ও এয়ারপোর্ট সড়ক থেকে প্রতিদিন চাঁদা তোলে লাখ লাখ টাকা।
এদিকে- প্রশাসনও এই সিন্ডিকেটের ”জাল চালানপত্র” সঠিক কিনা তা যাচাই-বাছাই না করে জব্দকৃত মালামালের কাগজ দেখেন, আবার টাকার বিনিময়ে কখনও-কখনও ছেড়েও দেন! তারা হয়তো জানেন না- ভারত থেকে আসা এসব অবৈধ পণ্যের কাগজ হয় কেমন করে?
এই সিন্ডিকেটের সবদিকেই লাভ! তারা অপেক্ষায় থাকে, ”কখন প্রশাসন এসব অবৈধ পণ্য আটক করবে আর কখন তাদের এই জাল-ভুয়া চালানপত্র দিয়ে জব্দকৃত মালামাল ছাড়িয়ে আনবে।” অবশ্য এর বিনিময়ে মোটা অংকের টাকা পায় চোরাকারবারি আলী হোসেন।
৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ভোরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমার সিলামের চকর বাজার এলাকার একটি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমান ভারতীয় পণ্য উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে- লেহেঙ্গা, শাড়ি, কসমেটিকস ও বেবী ফুড। সরকারের কর ফাঁকি চোরাকারবারিরা এসব অবৈধ পণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাবার জন্য এই গোডাউনে রেখে ছিলো।
এই পণ্য বৈধ বলে দাবি করে ”জাল চালানপত্র”সহ ভ্যানগাড়ি চালক থেকে অবৈধ পথে কোটিপতি হওয়া সিলেটের আলোচিত চোরাকারবারি আলী হোসেন সরকার ওরফে পলিথিন আলী থানায় একাধিকবার যায়।
তবে পুলিশ সেই জব্ধকৃত মালামাল ছাড়েনি।
সূত্র আরো জানায়, নিজের অবৈধ কর্মকান্ড ঢাকতে ২য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা এই আলী হোসেন ওরফে পলিথিন আলী এখন বাংলাদেশ মিডিয়া নামক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
তবে সেই পত্রিকা প্রয়োজনে বের করা হয়। সমাজে ও বিভিন্ন থানায় গিয়ে নিজেকে বিরাট বড় পত্রিকার সম্পাদক পরিচয় দেয়। এছাড়াও তার অবৈধ পন্য নির্বিঘ্নে চালানোর জন্য সেই পত্রিকার স্টিটিকার লাগিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় পলিথিন আলী বাজারজাত করছে। পলিথিন আলীর বিরুদ্ধে যে কথা বলে তাকে নিয়ে আজে বাজে মন্তব্য করে তার ভূইফোর পত্রিকায় তা প্রকাশ করে। এবং স্থানীয় থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে এই পত্রিকা পাঠায়।
এবং তাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করার চেষ্ঠা করে। একসময়ে সিলেটে এসে আলী হোসেন সরকার কৃষক দল যোগদান করলেও বর্তমানে তার সহযোগী হোসেন মাধ্যমে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছে।
এ নিয়ে আরো আসছে বিস্তারিত, পড়ুন সিলেট লাইভ।
পূর্বে প্রকাশিত প্রতিবেদন পড়ুন
সিলেটে আলী হোসেনের ‘আলাদিনের চেরাগ’
সিলেটের আলোচিত চোরাকারবারি আলী হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ
সিলেটে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে পলিথিন আলীর চাঁদাবাজি
আলী হোসেনের ফোনালাপ ফাঁস : বুঙ্গার মালে জড়িত, মিডিয়াকে ধরা দেবেনা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন