স্টাফ রিপোর্টারঃ- গত (১ মে) সিলেটে অবৈধ রেজিস্ট্রেশন বিহীন (নম্বরবিহীন) সিএনজি চালিত অটোরিকশা টোকেন বাণিজ্যের মূলহোতা নুরুল হক উরফে টোকেন নুরুলের বিরুদ্ধে সিলেট জেলার পুলিশ সুপার বরাবরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে অদৃশ্য কারণে আজ প্রায় ২১ দিন অতিবাহিত হলেও নেই কোন আইনি তৎপরতা।
কঠোর লকডাউন’র মধ্যে বন্ধ হয়নি নুরুল হক উরফে টোকেন নুরুলের বাণিজ্য। সরকারি সকল নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট সড়কে প্রায় তিন হাজার অবৈধ রেজিস্ট্রেশন বিহীন (নম্বরবিহীন) সিএনজি চালিত অটোরিকশা নুরুলের বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে দেদারছে চলাচল করছে।
এই টোকেন নুরুলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও বন্ধ হচ্ছে না এসব নম্বরবিহীন অবৈধ সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলো। তাছাড়া এনিয়ে অনুসন্ধানমুলক সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে টোকেন নুরুলের হুমকির শিকার হন পুলিশ ও সাংবাদিক।
গত রোজ শনিবার (১ মে ২০২১ ) ইং তারিখে সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন (মান্না) বাদী হয়ে সিলেট তামাবিল মহাসড়কে অবৈধ নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ীর টোকেন ব্যাবসায়ীর মূলহুতা নুরুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিলেট জেলার পুলিশ সুপার বরাবরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, কিছু শ্রেণীর অসাধু মানুষ জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাটে মিলে প্রায় ৩,০০০ (তিন হাজার) নম্বরবিহীন সিএনজি পুলিশ টোকেনর নামে একটি বিশেষ টোকনে দেদারছে চলাচল করিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা। এই তামাবিল মহাসড়কের টোকেন বাণিজ্যের মূলহুতা জৈন্তাপুর উপজেলার ৫ নং ফতেপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও বালিপাড়া গ্রামের আব্দুল মনাফ উরফে গাছ মনাফের ছেলে টোকেন নুরুল উরফে ( নুরুল হক মেম্বার)।
চলমান কঠোর লগডাউনে গত (১৯ এপ্রিল) বটেশ্বর সদর শেষ সীমান্তে সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সকল ধরনের যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন এসএমপির ট্রাফিক পুলিশ। তখন তামাবিল মহাসড়কের টোকন বাণিজ্যের মূলহুতা টোকেন নুরলের টোকনে চালিত কয়েকটি নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ি আটক করা হয়। অভিযান চলাকালে তিন জন সাংবাদিকের একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের জন্য দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্টদের সাথে আলাপ করেন। ওই সময় আটক নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে বর্ণিত স্থানে উপস্থিত হন টোকেন নূরুল হক পরে তিনি সাংবাদিকদের কর্তব্য কাজে বাঁধা প্রধান করেন। এমনকি ডিউটিরত পুলিশ সদস্য ও উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন (মান্না) কে মারার জন্য ধাওয়া করেন এর পর পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের সহযোগিতায় তিনি নুরুলের হাত থেকে রক্ষা পান। এনিয়ে অনুসন্ধানমুলক সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে টোকেন নুরুলের হুমকির শিকার হন সাংবাদিক মোঃ রায়হান হোসেন মান্না। এমনকি মিথ্যা মামলা ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয় নুরুল। এমন হুমকিতে সাংবাদিক নিজের নিরাপত্তা চেয়ে গত ২০ এপ্রিল শাহপরাণ (রহঃ) থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। যাহার ডায়রী নং-৯৪৫।
তাছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন নেতাদের দিয়ে সাংবাদিককে দায়েরকৃত তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়রী প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন।
এজাহার সুত্রে আরো জানা গেছে, বিগত দিনে এই টোকেন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে স্থানীয় দৈনিক ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ করেছেন জনৈক সাংবাদিক। সে সময়ও এরকম নিউজ প্রকাশের জের-ধরে সাংবাদিককে বিগত দিনেও এরকম প্রাণে মারার হুমকি প্রধান করেন। পরে জনৈক সাংবাদিক নিজের নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়রী করেন।
এছাড়াও অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরের (৮ জানুয়ারি) জৈন্তাপুর থানাধীন একালায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের এক সার্জেন্ট অভিযান পরিচালনা করে টোকন নুরুল হকের টোকনে চালিত ৪ টি নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ি আটক করে জৈন্তাপুর মডেল থানায় নিয়ে যান। কিছু সময় পর পর টোকেন নুরুল একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে থানায় গিয়ে থানার ভিতরেই ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট কে মারার জন্য ধাওয়া করেন এবং এক পর্যায়ে থাকে প্রাণে মারার হুমকি প্রধান করেন। পরে এই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট সাহেব নিজের নিরাপত্তা চেয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন এবং টোকেন নুরুলসহ এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেট জেলার পুলিশ সুপার বরাবরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
সর্বশেষে জনৈক সাংবাদিক টোকন নুরুলের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও সিলেট তামাবিল মহাসড়কে অবৈধ টোকেনে চালিত নম্বরবিহীন সিএনজি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন