স্টাফ রিপোর্টারঃঃ পাশের দেশ ভারতে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধে দেশের সব সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয়া হলেও জৈন্তাপুর সীমান্তের ফাঁক গলিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছেন চোরাচালানীরা।
ঈদকে সামনে রেখে চোরাচালানীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে। মূলত ঈদের বাজার ধরতেই তারা এখন বেপরোয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ,জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল গ্রামের মছদ্দর আলীর ছেলে সীমান্ত রাজা আব্দুল করিম ওরফে বেন্ডটিস করিম এর নেতৃত্বে একদল চোরাকারবারী, ঘিলাতৈল, কদম খালপানি, রাংপানি, ৪ নং বাংলাবাজার, আদর্শগ্রাম, শ্রীপুর, মোকামপুঞ্জি ও আলুবাগান এলাকা থেকে চোরাকারবারীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের দায়িত্বে রয়েছেন করিমের লোকজন।
এর আগে এই লাইনে থানা পুলিশের টাকা আদায় করতেন বেন্ডিস করিম ও তার বাগিনা রুবেল। কিন্তু এখন আর তারা পুলিশের লাইনে নেই। থানা পুলিশের লোকজন তাদের গুল ঘরে বসেই বুঙ্গাড়ীদের সাথে কাজ সেরে ফেলেছেন ।
সম্প্রতি বিজিবির উপর হামলার মামলায় তিনি আসামি হয়ে ছিলেন।
স্থানীয় এলাকার লোকজন তাকে সীমান্তের রাজা হিসাবে চিনেন।
কিন্তু চোরাচালান চক্রের গড়ফাদার বেন্ডিস করিম বর্তমানে টাকার বিনিময়ে জৈন্তাপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সন্ধ্যার পর হতে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটর সদস্যরা স্থানীয় ৪৮বিজিবির অধিনস্থ ডিবির হাওর বিশেষ ক্যাম্পের কিছু সংখ্যাক বিজিবি সদস্য ও স্থানীয় থানা পুলিশের কিছু আসাধু কর্তা ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় রাতভর ডিবির হাওর এলাকার রাজার মন্দির ও বড় ভাঙ্গা দিয়ে অন্তত হাজারো ডিআই ট্রাক যোগে বিপুল পরিমান মটরশুটি ভারতের পাচার করে।
বিনিময়ে ভারতীয় অফিসার চয়েস মদ, বিআর, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, ইয়াবা, কসমেট্রিক্স, হরলিক্স, শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট,চশমা, গরু মহিষ নিয়ে আসে।
এসব পণ্য পাচারের কারনে উপজেলা একমাত্র আর্কষনীয় পর্যটন কেন্দ্র লাল শাপলা বিলে যাতায়াতের রাস্তাটিতে হাটুসমান কাঁদার সৃষ্টি করে পর্যটক চলাচলের অনুপযোগী করে তোলে সিন্ডিকেট দলের সদস্যরা।
অপরদিকে মটর শুটির বস্তা প্রতি বিজিবি নামে ১০০টাকা ও পুলিশের নামে ৮০ টাকা, মাদক সহ অন্যান্য ভারতীয় সামগ্রীর কিট প্রতি বিজিবি ৫শত টাকা পুলিশ ৪শত টাকা করে বেন্ডিস করিমের নেতৃত্বে সোর্সরা আদায় করে বলে জানান স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দারা।
এছাড়াও সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের আরো অবৈধ পণ্য দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে।
পণ্যগুলো হচ্ছে, বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক, শাড়ি, গরু, মহিষ, কিটের কার্টুন, ওষুধ-ইন্ঞ্জেকশন, সেনিটাইজার, মোবাইল ফোন, খেলার জুতা, সাপের বিষ, মোটরসাইকেল-টায়ার, কসমেটিকস ও স্বর্ণের বার।
চোরাচালানী চক্র দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপর মহলে চাপে পড়ে মামলা দিতে বেন্ডিস করিমের সাথে সিষ্টেম ও বুঙ্গাড়ীদের চুক্তি মাধ্যমে কিছু সংখ্যাক গরু-মহিষ এবং হাতে গুনা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে জনসাধারনের আইওয়াশ করে ।
তাও নাম মাত্র এক দুটি চালান আটক করে। কিন্তু স্থায়ী ভাবে বন্ধ ও বড় ধরণের কোন অভিযান দিতে দেখা যায়নি।
ডিবির হাওর লাল শাপলার বিলের পানির বাঁধটি মেরামত করার পর রাস্তাটি পুরোপুরে চলাচলের উপযোগি ছিল।
রাস্তার কোন অংশে কাঁদা ছিল না। অনেকে বিশ্বাস করতে পারছেন না যে মাত্র এক রাতেই কি করে এমন হল।
ডিবির হাওর বিশেষ ক্যাম্পের সদস্যদের জিজ্ঞাসা করা হলে উনারা বলেন
বৃষ্টির পানির কারনে রাস্তার এমন অবস্থা হয়েছে। রাস্তার এমন পরিস্থিতি কি করে হল জানতে চাইলে বিজিবি’র সদস্যরা বলেন গাড়ী ঘুরাতে এসেছে।
রাস্তা জুড়ে মটরশুটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এব্যাপারে জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসির মুঠোফোনে কল দিলে নাম্বারটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।
এব্যাপারে জানতে চোরাকারবারি বেন্ডিস করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এইসব মিথ্যা বলে ফোন কেটে দেন। আরো আসছে জৈন্তাপুরের কাশিয়া আটীতে বেন্ডিস করিমের অবৈধ টাকার বাড়ি নিয়ে কিছু কথা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন