শেখ মোঃ লুৎফুর রহমান::পবিত্র রমজান মাস সামনে। আত্মসংযমের মাস হিসেবে এ মাসে দ্রব্য কেনার ক্ষেত্রেই আত্মসংযম করতে হয়৷ অন্য সময়ের তুলনায় এ সময় দ্বিগুণ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি টাকা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে হয়।দ্রব্যের দাম বাড়ার সঙ্গে যুক্ত হয় ভেজাল ও ফরমালিন।
নিরুপায় হয়ে দ্রব্য কেনার ক্ষেত্রে সংযমের পরিচয় দেওয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না। এ সময় দাম বাড়া চরম উদ্বেগের বিষয়।
দ্রব্যমূল্যের এ লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মূলত কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজি। তাঁদের কাছে যেন সবাই জিম্মি৷ গুটি কয়েক অসাধু ব্যবসায়ীর লোভের মাশুল গুনতে হয় সব ক্রেতাকে। রমজান মাস যথাযথভাবে পালনের জন্য দ্রব্যমূল্য সহনশীল রাখা আবশ্যক।
সুজলা-সুফলা শস্যশ্যামলায় ভরপুর বাংলাদেশ আজ শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। অভাব ও দারিদ্র্যের কশাঘাতে আজকের জনজীবন দুঃখ ও হাহাকারে পূর্ণ। মানুষের ওপর চেপে বসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ঘোটক। জীবনধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের অগ্নিমূল্য। চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, ফলমূল, চিনি, লবণ, গম, আটা, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্য আগের তুলনায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
এক জটিল উভয়সংকটের আকারে দিন দিন বেড়ে চলেছে করোনা মহামারির প্রকোপ। সংকটের একদিকে ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি, অন্যদিকে সেই ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে পুরো জাতির অবরুদ্ধ দশার অনিবার্য ফল হিসেবে উদ্ভূত জনদুর্ভোগ। অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আগুন। আর সেই আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ। উল্লেখ্য, একদিকে যেমন করোনার ভয় ও ঝুঁকি, অন্যদিকে পকেট উজাড়, ক্রেতা পড়েছেন মহাসংকটে। ফলে নাভিশ্বাস ওঠা ক্রেতা বাধ্য হয়ে বাড়তি দামেই বাজার সেরে ফিরছেন ঘরে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্রান্তিকালে মানুষ যখন চাকরি-বাকরি হারিয়ে কোনোরকমে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন চাল, তেল, সবজি, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের। একের পর জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে, নিম্ন আয়ের মানুষের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে বিক্রেতাদের গলায় করোনার অজুহাত। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এসব নিত্যপণ্যের দাম কেন ঊর্ধ্বমুখী—এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শ্রমিক ও পরিবহনসংকটে এবং লকডাউন এর কারনে পণ্যের সরবরাহ ঘাটতিতে দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, অনেক ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছেন। খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের দাবি, করোনার কারণে পণ্য পরিবহনে সংকটের কারণে দাম বেড়েছে। পাইকারদের কাছে মজুত থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাচ্ছেন না তাঁরা। এ ছাড়া পাইকারি পর্যায়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
সুলতান আহমদ চৌধুরী নামে এক ক্রেতা সিলেটপোস্টকে জানান,আমি অল্প বেতনে প্রাইভেট এক প্রতিষ্টানে কাজ করি, তবে বর্তমান সময়ে চলতে হিমশিম কাচ্ছি,একদিকে করোনা আন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের যে দাম পরিবারকে নিয়ে বেচেঁ থাকাটাও বিধাতার উপর।
এদিকে রমজান মাসে দ্রব্যাদির দাম যাতে না বাড়ে, সেদিকে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন নগরীর সচেতন মহল।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন