নিউজ ডেস্ক:ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ নিয়ে পদত্যাগ করেছেন তিন ছাত্রলীগ নেতা। এরা হলেন, হবিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হেলাল উদ্দিন জনি, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ১০নং লস্করপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক মহসিন আহমেদ মুন্না এবং হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম আকামিন।
গত শুক্রবার(২৬মার্চ) রাতে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ বরাবরে নিজ নিজ ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা এক খোলা চিঠির মাধ্যমে তারা এ পদত্যাগ করেন। নিচে তিন ছাত্রলীগ নেতার পোস্ট করা খোলা চিঠি হুবহু তুলে ধরা হলো, ঐধষধষ টফফরহ ঔড়হু তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে বলেন, ‘‘ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ পত্র। বরাবর হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ। আমি হেলাল উদ্দিন জনি যুগ্ম আহŸায়ক হবিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগ। আজকে মুসলিম জনতার মতামতকে উপেক্ষা করে ভারতের ইসলাম বিদ্বেষী, সিমান্ত হত্যাকারী, কাশ্মীর দখল কারী, কসাই মুদি-সন্ত্রাস মুদিকে দেশে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে এবং নামাজি মুসলমানদের উপর বর্বর নির্যাতন ও ঘৃণ্যতম ভাবে মুসলমানদের গুলি করার কারণে তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আমি হবিগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।
আমার কথা হলো যে দলে ইসলামকে সম্মান দিতে পারে না, জনগণের ই”ছার কথার মূলা দেওয়া হয়না। যারা ভাস্কর্যকে হালাল মনে করে,যারা রাম রাম নাস্তিকদের কথা শুনে সেই দলে কোনো মুসলমান থাকতে পারে না, আমিও থাকতে পারিনা। আজকে থেকে বয়কট করলাম ছাত্রলীগ। এখনই আমার প্রোফাইল থেকে যুগ্ম আহবায়ক পদটি ডিলিট করে দিলাম। যদি কোনো দিন বঙ্গবন্ধুর পূর্ণ আদর্শ ছাত্রলীগের মাঝে ফিরে আসে এবং ভারতের দালালী বাদ দেয় দেশের আলেম উলামাকে সম্মান পেয়ে, হারাম এবং গুনার কাজ থেকে সরকার বিরত থাকে তখন দেখবো কি করা যায়। এর আগ পর্যন্ত- আওয়ামিলীগ ও ছাত্রলীগের দালালী বাদ দিয়ে দিলাম।
একজন মুসলমান হিসাবে কোরআন হাদিস মুতাবেক আগে ইসলামকে প্রাধান্য দেওয়া ফরজ। তাই আমার প্রিয় মুসলমান ছাত্রলীগ ভাইদের বলছি যার ভিতরে ঈমান আছে, যদি মনে করেন একদিন মরতে হবে আপনার বিচার হবে তাহলে। আপনিও আমার মতো দুনিয়ার দল ও লোভ লালসা বাদ দিয়ে ইসলামের সাথে থাকবেন। আর আমাদের মনে রাখবেন ভারত কোনো দিন মুসলমানদের বন্ধু হতে পারবেনা। তাই পবিত্র কোরআনের ২৬ আয়াত বাদকারী এই কুলাঙ্গার মুদির দেশকে না বলুন।
হে আলাহ আমাদের ভিতরে তোমার ভয় ঢুকিয়ে দাও যাতে আমরা সব কিছু বাদ দিয়ে তােমার রায় আসতে পারি আমিন। গফ জড়নরঁষ অষধস অশধসরহ নামে তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে বলেন, ‘‘খোলাচিঠি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ পত্র। বরাবর, হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ আমি মোঃ রবিউল আলম আকামিন ১ম যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ। আমি স্ব-ইচ্ছায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ গ্রহণ করলাম আজকে থেকে ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী অগসংগঠনে আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই!!! যে দেশে ভীনদেশীয় এক খুনির জন্য স্ব-দেশের। মানুষকে গুলি করে মারা হয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগরা।
আমার আলেমদের মারধর করে, আমার নবীর সুন্নতে আঘাত করে সেই সংগঠনের সাথী আমি নই,আমার এই ত্যাগটুকু শুধুমাত্র আমার আল্লাহর জন্য। হে আল্লাহ! আমাদের দুনিয়ার মতার লোভ থেকে বাঁচাও, আমাদের জালিমদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করো না। বিঃ দ্রঃ নিচের তিনটা ছবি দেখলেই বুঝা যায়। আমাদের মুসলিমদের অবস্থান অনেক কিছু বলার ইচ্ছা থাকলেও বলতে পারি নাই।
লস্করপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক গড়ংযরস অযসবফ গঁহহধ নামে ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি থেকে বলেন, ‘‘আমি, মহসিন আহমেদ। যুগ্ম আহবায়ক ১০নং লস্করপুর ইউ/পি ছাত্রলীগ। হবিগঞ্জ সদর। আমি সুস্থ মস্তিষ্কে সজ্ঞানে ১০ নং লস্করপুর ইউ/পি ছাত্রলীগ সদর হবিগঞ্জ থেকে পদত্যাগ করলাম। আজকে থেকে ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী অঙ্গসংগঠনে আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই!!! যে দেশে ভীনদেশীয় এক খুনির জন্য স্ব-দেশের মানুষকে গুলি করে মারা হয়, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগরা। আমার আলেমদের মারধর করে, আমার নবীর সুন্নতে আঘাত করে সেই সংগঠনের সাথী আমি নই ।
আমার এই ত্যাগটুকু শুধুমাত্র আমার আল্লাহর জন্য । হে আল্লাহ! আমাদের দুনিয়ার মতার লোভ থেকে বাঁচাও, আমাদের জালিমদের অন্তর্ভুক্ত করো না বিঃদ”ঃ নিচের তিনটা ছবি দেখলেই বুঝা যায়’’। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যরে সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘শুধু হবিগঞ্জে নয়, এ রকম কয়েকটি ঘটনা সিলেটেও ঘটেছে। এদের ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করার কোন সুযোগ নেই। অচিরেই তাদের ছাত্রলীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হবে’’।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় কয়েকটি ইসলামিক দল। এ উপলক্ষে গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকের সামনে সমমনা ইসলামী দলগুলো ব্যাপক কর্মসূচি পালন করে। গতকাল রবিবার পর্যন্ত সারা দেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও আংশিক হরতাল পালন করে ইসলামিক দলগুলো।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন